হাটহাজারীতে জোড়াখুনের ঘটনায় পৃথক দুই মামলা

5

হাটহাজারী প্রতিনিধি

হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নে রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার ও অন্তঃকোন্দলের জেরে অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কে গুলি করে আওয়ামী লীগের দুই নেতাকর্মীকে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে নগরীর বায়েজিদ থানায় শিকারপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নিহত মোহাম্মদ আনিসের স্ত্রী এনি বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বায়েজিদ থানার ওসি সঞ্জয় কুমার সিংহ।
এছাড়া নিহত আওয়ামী সমর্থক মাসুদ কায়ছারের ছোট ভাই মো. আরিফ বাদী হয়ে ওই রাতেই হাটহাজারী মডেল থানায় অপর একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন বলে জানান মদুনাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো. মহিউদ্দিন সুমন।
জানা গেছে, দুই মামলায় আসামি করা হয়েছে বুড়িশ্চর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ফৌজদার আলী ফকিরের বাড়ির মৃত আব্দুল মালেকের পুত্র আরমান বাচ্চু প্রকাশ নুর নবী (ডাবল হাজী) (৩২), ৮নং ওয়ার্ডের ধূপপোল চৌকিদার বাড়ির মো. শামশুল আলমের পুত্র জাহাঙ্গীর আলম (৪২), পূর্ব শিকারপুর সোনা মিয়া সওদাগরের বাড়ির মো. জামালের পুত্র মো. সাজ্জাদ হোসেন প্রকাশ বুড়ির নাতী (৩০) ও বায়েজিদ থানাধীন ৩নং ওয়ার্ডের পশ্চিম শহীদ নগরের সুবহান কন্ট্রাক্টরের বাড়ির মো. আলম পুত্র মো. হাসান (৩৬)। এছাড়া দুই মামলায় অজ্ঞাত আরও ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে বায়েজিদ থানাধীন অনন্যা আবাসিক এলাকার অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়ক হয়ে শহর থেকে রিকশাযোগে নিজবাড়িতে ফেরার পথে হাটহাজারীর সীমান্তবর্তী নাহার গার্ডেনের সামনে দুর্বৃত্তরা আনিস ও মাসুদকে গুলি করে। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আনিসের। কিছুদূর এগিয়ে গেলে শিকারপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ছাবের সওদাগরের দোকানের সামনে এসে মাসুদকে এলোপাতাড়ি গুলি করলে তারও মৃত্যু হয়।
আনিস শিকারপুর ইউনিয়নের পশ্চিম কুয়াইশ হাজী ওসমান আলী মেম্বার বাড়ির মৃত মো. ইছহাকের ছেলে। তারা দুই ভাই এক বোন। আনিসের স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। জমিজমা ও পোলট্রি ব্যবসা করতেন তিনি।
এছাড়া নিহত মাসুদ কায়সার বোয়ালখালী উপজেলায় মো. রফিকের ছেলে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। ছোটবেলা থেকেই তারা পশ্চিম কুয়াইশ এলাকার নানা বাড়িতে লালিত-পালিত হন। আনিস ও মাসুদ কায়সার দুজনই উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুচ গণি চৌধুরীর অনুসারী।
এদিকে, ঘটনার প্রায় ৪৮ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও হত্যাকান্ডে জড়িত কাউকে শনাক্তও করতে পারেনি পুলিশ। ফলে উন্মোচিত হয়নি খুনের প্রকৃত রহস্য। এর মধ্যে শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে নিহতদের ময়নাতদন্ত শেষে শিকারপুর এলাকার ৯ নং ওয়ার্ডে নামাজে জানাজা শেষে তাদেরকে স্ব স্ব পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।