ভারতে ২৪ ঘণ্টা কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন চিকিৎসকরা

2

পশ্চিমবঙ্গে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে এক শিক্ষানবীশ চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভে উত্তাল ভারতে শনিবার ২৪ ঘণ্টার জন্য দেশজুড়ে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে চিকিৎসকদের সর্বভারতীয় সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। শনিবার সকাল ৬টা থেকে রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সব ধরনের নন-ইমারজেন্সি মেডিক্যাল সার্ভিস বন্ধ রাখা হবে। ফলে খুলবে না আউটডোর। আইএমএ’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আপৎকালীন পরিষেবা ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় সবরকম পরিষেবা দেওয়া থেকে বিরত থাকবে চিকিৎসকরা। খবর বিডিনিউজের
বুধবার রাতে আরজি কর হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনার প্রতিবাদে আপাতত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। গত এক সপ্তাহ ধরে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় দফায় দফায় চলেছে বিক্ষোভ, কর্মবিরতি। শুধুমাত্র কলকাতা বা রাজ্য নয়, দেশজুড়ে চিকিৎসকরা আরজি করের আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সবাই প্রশ্ন তুলেছেন, একজন চিকিৎসক যিনি নাইট ডিউটি করেন, তার নিরাপত্তা কোথায়?
গত সপ্তাহে বৃহস্পতিবার রাতে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার আরজি কর সরকারি হাসপাতালের সেমিনার হল থেকে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার ৩২ বছর বয়সী নারী চিকিৎসকের লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনার পর নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন তীব্র হয়। ভারতজুড়ে বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট করেন। কলকাতাসহ মুম্বাই এমনকী রাজধানী দিল্লি ও অন্যান্য আরও কয়েকটি নগরীতে চিকিৎসকরা কর্মবিরতি ঘোষণা করে। খুনের ঘটনার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলার ডাক দেয় বিক্ষোভকারীরা। সব চিকিৎসা কর্মীর জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার দাবিও জানায় তারা। আরজি করের চিকিৎসকরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যেই বুধবার রাতে কয়েক হাজার দুষ্কৃতি আচমকা আরজি করে ঢুকে পড়ে সব তছনছ করে দেয়। এরপরেই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) সভাপতি আর ভি অশোকান বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, এবারের আবেগ ভিন্ন। এ দেশে চিকিৎসা পেশার সিংহভাগই নারী। আমরা বারবার তাদের নিরাপত্তা চেয়েছি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), সহ রাজনৈতিক দলগুলোও শুক্রবার শহরে বিক্ষোভ করার কথা জানিয়েছে। বলিউড অভিনেতা, অন্যান্য তারকা এবং রাজনীতিবিদরা এই অপরাধের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন এবং দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। ধর্ষণের ঘটনায় পুলিশ সঞ্জয় রায় নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। এই সঞ্জয় রায় পেশায় একজন সিভিক ভলেন্টিয়ার। তিনি কলকাতা পুলিশের অধীনেই কাজ করেন। পাশাপাশি আরজি কর হাসপাতালে রোগী ভর্তি এবং তাদের দেখাশোনার কাজও করতেন তিনি। তবে বিক্ষোভকারীরা বলছেন, গ্রেপ্তার করাটাই যথেষ্ট নয়। চিকিৎসকরা বলছেন, ধর্ষণের ঘটনা যথাযথ সুরক্ষা ও সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত চিকিৎসকদের নাজুক অবস্থাকেই সামনে এনেছে।