নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৩৯ হাজারেরও বেশি

8

গাজায় মাস নয়েক ধরে ইসরায়েলের যে স্থল ও বিমান হামলা চলছে, তাতে ৩৯ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানাচ্ছে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। এও বলা হচ্ছে, নিহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল ভূখন্ডে হামাসের হামলায় প্রায় ১২০০ মানুষের মৃত্যু হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয় বলে দাবি করে আসছে ইসরায়েল। এর পাল্টায় গাজায় যে অভিযান ইসরায়েল চালিয়ে আসছে, তাতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৯ হাজার ১৭৫ জনের প্রাণ গেছে বলে হামাস নিয়ন্ত্রিত ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য।
এই সংখ্যা কীভাবে গণনা করা হয়, সেটি কতটা নির্ভরযোগ্য, বেসামরিক নাগরিক ও যোদ্ধাদের সংখ্যা এবং কোন পক্ষের কী ভাষ্য তা জানার চেষ্টা করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। খবর বিডিনিউজ’র
যুদ্ধ শুরুর মাসগুলোতে নিহতের সংখ্যা গণনা করা হতো হাসপাতালে আসা মৃতদেহ দেখে। তখন বেশিরভাগের নাম ও পরিচয় নথিবদ্ধ করা হতো। সংঘাতের মধ্যে কমসংখ্যক হাসপাতাল ও মর্গের কার্যক্রম চলায় কর্তৃপক্ষ অন্য পদ্ধতিও অবলম্বন করে। মে মাসের শুরু থেকে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের লাশের সংখ্যাও মোট প্রাণহানির পরিসংখ্যানে অন্তর্ভুক্ত করে। তাতে দেখা যায়, অজ্ঞাত লাশের সংখ্যা মোট প্রাণহানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ।
ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারের প্রধান ওমর হুসেইন আলী বলেন, এসব মৃতদেহ হাসপাতাল বা চিকিৎসা কেন্দ্রে এসেছেই ব্যক্তিগত তথ্য বা পুরো নাম ছাড়া।
মৃতের পরিসংখ্যানে এমন ব্যক্তিদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাদের স্বজনরা পরিচয় নম্বরসহ বিভিন্ন তথ্য অনলাইনে সরবরাহ করেছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ধ্বংস্ত‚পের নিচে এখনও অনেক মৃতদেহ থাকায় বর্তমান পরিসংখ্যানে সব মৃত্যু প্রতিফলিত হয়নি। কেবল মে মাসেই প্রায় ১০ হাজার মৃতদেহ এভাবে গণনা করা হয়নি।
চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেট গত ৫ জুলাই তিনজন শিক্ষাবিদের একটি চিঠি প্রকাশ করেছে। এতে বলা হচ্ছে, যুদ্ধে রোগের মতো পরোক্ষ কারণে যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের সংখ্যা সরকারি হিসাবের চাইতে কয়েকগুণ বেশি। এই সংখ্যা এক লাখ ৮৬ হাজারের চেয়ে বেশি হতে পারে বলে ওই শিক্ষাবিদদের ধারণা।
জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস এবং ইয়েল স্কুল অব পাবলিক হেলথের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাবও সুনির্দিষ্ট কিছু না জানিয়ে বলছে, প্রকাশিত সংখ্যার চেয়ে মৃতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
গাজায় মৃতের সংখ্যার তথ্য দিতে গিয়ে জাতিসংঘ নিয়মিতভাবেই ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নামসহ তথ্য প্রকাশ করে। মন্ত্রণালয়ের তথ্যে আস্থা রাখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও।
এদিকে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলছেন, গাজা সরকারের ওপর হামাসের নিয়ন্ত্রণের কারণে নিহতের এই সংখ্যা সন্দেহজনক। এছাড়া ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহতদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু।