ডিমের দাম ডজনে কমেছে ১০ টাকা

8

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় নগরীর বাজারে মুরগির ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা কমেছে। গত কয়েক মাস ধরে সবজির দাম বাড়তি থাকলেও গত দুই তিন সপ্তাহ ধরে কিছুটা কম দামে বিক্রি হচ্ছে। ফলে সবজির বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। তবে কয়েকটি সবজির বর্তমানে মৌসুম না হওয়ায়, সেগুলোর দাম কিছুটা বাড়তি।
গতকাল শুক্রবার নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার, চকবাজার, কাজীর দেউড়ি ও ষোলশহর কর্ণফুলী কমপ্লেক্স ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়া কাজীর দেউড়ি বাজারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানে চার মুরগির দোকানদারকে ২৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায় প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হলেও তা কমে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমলেও গরু, খাসির মাংসের দাম আগের মতো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে বাজারে সব ধরনের মাছের দাম বাড়তি।
এদিকে বাজারে প্রতি কেজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, শসা ৬০ টাকা, ধুন্দুল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ থেকে ৫০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, জালি প্রতি পিস ৫০ টাকা, আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা এবং কাকরোল প্রতিকেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
যেসব সবজির দাম কিছুটা বাড়তি, সেই তালিকায় বেগুন প্রতিকেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকায়, কচুর লতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, মূলা ৮০ টাকা, কচুরমুখি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, টমেটো ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা এবং কচুরলতি প্রতিকেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়, লাল কর্ক জাতের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকায়, সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকায়, দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৬৫০ টাকায়। এছাড়া গরুর মাংস বাজারভেদে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায়, আর খাসির মাংস প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়। পাশাপাশি বাজারে দেশি পেঁয়াজ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়, আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়, শুকনো মরিচ দেশি ৪০০ টাকা, আর আমদানি করা মরিচ ৫০০ টাকায় প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে। হলুদ প্রতিকেজি ৪০০ টাকায়, দেশি আদা প্রতিকেজি ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭২ টাকায়, আটাশ চাল ৫৭ থেকে ৫৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা কেজি। এছাড়া জিরাশাইল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকায়, নাজিরশাইল ৭১ থেকে ৭৩ টাকা, কাটারি নাজির ৭৭ থেকে ৭৯ টাকায়, কাটারি আতপ চাল ৬৬ থেকে ৬৮ টাকা কেজি, চিনিগুড়া মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৭৭ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
রিয়াজউদ্দিন বাজারে বাজার করতে আসে বেসরকারি চাকরিজীবী বরকত উল্লাহ বলেন, বাজারে তুলনামূলক সবজির দাম কিছুটা কমেছে। এছাড়া বাকি সবকিছুর দামই বাড়তি যাচ্ছে। কিছুদিন ছাত্রদের বাজার মনিটরিং করতে দেখেছি, তখন বাজারে অনেক কিছুরই দাম কিছুটা কম ছিল। এখন আবার বাজারে সব পণ্যের দাম যে যার মতো বাড়িয়ে দিচ্ছে। আসলে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারকে বাজার মনিটরিং বাড়ানোসহ অসাধু সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার কাজ করতে হবে। আমারা সাধারণ মানুষ চাই সব পণ্যের ম‚ল্য আমাদের সাধ্যের মধ্যে থাকুক।
সবজির দামের বিষয়ে সবজি ব্যবসায়ী আলম খান বলেন, গত কয়েক মাসের তুলনায় বিগত ২-৩ সপ্তাহ ধরে সবজির দাম কিছুটা কম যাচ্ছে। তবে কিছু আইটেমের সবজির বর্তমানে মৌসুম না হওয়ায় কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। আবার নতুন করে এসব সবজি উঠতে শুরু করলে এগুলোরও দাম কমে যাবে।
অপরদিকে কাজীর দেউড়ি বাজারে ৪টি মুরগির দোকানে দাম বেশি নেওয়া ও মূল্যতালিকা না থাকায় ৭ হাজার টাকা করে মোট ২৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ফয়েজ উল্যাহ। এসময় সহকারী পরিচালক (মেট্রো) মো. আনিছুর রহমান, সহকারী পরিচালক রানা দেব নাথ এবং চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নাসরিন আকতার। অভিযানের সময় সচেতন ছাত্র ও ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।