চবি প্রতিনিধি
চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন দেওয়া ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সরব চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) একাধিক শিক্ষকের বাসায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া তাদের বাসার সামনে বোমা বিস্ফোরণের অভিযোগও তুলেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা।
গতকাল বুধবার দুপুরে চবি উপাচার্য বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক।
অভিযোগপত্রে তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে আমার বাসার সামনে আনুমানিক ১৬-১৭ জন তরুণ ৬/৭টি মোটরসাইকেল নিয়ে এসে আমার নাম ধরে উচ্চস্বরে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে। তারা আনুমানিক ৮ মিনিট অবস্থান করে। এক পর্যায়ে তারা ৩টি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এরপর তারা পশ্চিমদিকে চলে যায়। ওই সময় বাসার সামনে ডিউটিরত প্রহরীরা ও আশপাশের প্রতিবেশিরা এ অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার সাক্ষী। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তাদের চিহ্নিত করা সম্ভব। এ ঘটনার পর আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আশা করি, এ ব্যাপারে আপনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এ বিষয়ে দর্শন বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, পুরো বিষয়টি উপাচার্য ও প্রক্টরকে জানিয়েছি। আশা করি, কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবে।
তিনি আরও বলেন, গতরাতে হামলার পরপরই দেখলাম একটা পুলিশের গাড়িও সেদিক দিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের তো দায়িত্ব ছিলো এই বন্ধ ক্যাম্পাসে ৭/৮টা বাইক নিয়ে এতরাতে ঘুরে বেড়ানো, বোমা ফোটানো এসব মানুষ কারা, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ ৩০ বছর আছি, কখনো এমনকিছু হতে দেখিনি।
এছাড়া প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আতিয়ার রহমানের বাসার সামনেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে ওই শিক্ষক জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, রাত সোয়া ২টার দিকে ৭/৮টা মোটরসাইকেল নিয়ে পাহাড়িকা হাউজিং সোসাইটিতে আমার বাসার সামনে এসে তারা দরজায় আঘাত করতে থাকে। এ সময় তারা আমার নাম ধরে গালাগালি করে এবং ৩টা বোমা বিস্ফোরণ করে।
তিনি বলেন, সারাদেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আমরা মানববন্ধন করেছি। এরপর উপাচার্যের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় আমরা সব শিক্ষকরা মিলে শিক্ষকদের বাসায় হামলার বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসও দিয়েছেন।
আতিয়ার রহমান বলেন, এভাবে চলতে দেয়া যায় না। এর সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।
জানতে চাইলে চবি প্রক্টর ড. ওহিদুল আলম বলেন, হামলার বিষয়ে মোজাম্মেল স্যার একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি অনুসন্ধান করছি। পুলিশকে বলে দেওয়া হয়েছে ক্যাম্পাসে কেউ ঘোরাফেরা করলে যাতে অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
