এয়ারবাসই কিনছে বিমান

11

রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সবিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জন্য এ যাত্রায় এয়ারবাস থেকেই উড়োজাহাজ কেনা হচ্ছে বলে স্পষ্ট ধারণা দিলেন রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এ বিমান সেবা সংস্থার বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. শফিউল আজিম। এয়ারবাস কেনার কারণ হিসেবে তিনি একক কোম্পানির ওপর নির্ভরতা কমানো, যাত্রীদের পছন্দের সুযোগ তৈরি এবং বিমানের ‘ফেইসভ্যালু’ বৃদ্ধির কথা বলছেন। খবর বিডিনিউজের
সচিব হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে শফিউল আজিমকে সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়েছে সরকার। অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদায় বিমানের এমডি হিসেবে নিজের শেষ কর্মদিবস বুধবার বলাকা ভবনে তিনি এভিয়েশন সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। প্রায় দেড় ঘণ্টার আলোচনার বড় অংশ জুড়ে ছিল উড়োজাহাজ কেনা বিষয়ক প্রশ্নোত্তর। এয়ারবাস কেনার সিদ্ধান্ত গত বছরই হয়েছে বলে এক প্রশ্নের উত্তরে জানান বিদায়ী এমডি।
বিমানের কাছে উড়োজাহাজ বেচতে মার্কিন জায়ান্ট বোয়িং এবং ইউরোপীয় উড়োজাহাজ নির্মাতা এয়ারবাসের মধ্যে যে প্রতিযোগিতা চলছিল, সেটি দৃশ্যমান হয় গত বছরের শুরুতেই। কেউ কেউ এটাকে ‘বাংলাদেশের আকাশ দখলে ইউরোপ-আমেরিকার দ্বৈরথ’ হিসেবেও দেখছিলেন।
বিমানের বহরে বর্তমানের ২১টি উড়োজাহাজের ১৬টিই বোয়িংয়ের তৈরি। বিমানের এমডি বহরে ভিন্নতা আনার পক্ষে নানা যুক্তি দিলেও মিশ্র বহরে খরচ বেড়ে যাওয়ার বিষয়টিও আলোচনায় রয়েছে। বিমান এয়ারবাস না বোয়িং কিনছে জানতে চাইলে এমডি বলেন, আমরা আস্তে আস্তে যেহেতু ফ্লিট বড় করছি, আমাদের যদি ডাইভারসিটি না থাকে, শুধু সিঙ্গেল সোর্সের ওপর থাকি তাহলে এটি। একটা বিষয় হল, দুই ধরনের এয়ারক্রাফট থাকলে যাত্রীদের পছন্দ করার সুযোগ থাকে। অনেক যাত্রীর চয়েস থাকে যে তিনি এয়ারবাস এ৩৫০ তে চড়বেন। তখন যাত্রীদের পছন্দগুলো যেমন আমরা যোগান দিতে পারব।
শফিউল আজিম বলেন, আপনারা দেখতে পাবেন, বোয়িং ও এয়ারবাসের মধ্যে আমরা যদি সুন্দর একটা সমন্বয় করতে পারি, তাহলে বিমান এশিয়াতে বা পৃথিবীর অন্যতম এয়ারলাইন্স হিসেবে দাঁড়াতে পারবে। আমাদেরও ব্র্যান্ডিং বাড়বে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের যে ফেইসভ্যালু, তা বাড়বে। এই যে ডাইভারসিটি, এটা কিন্তু আমাদের অন্যরকম উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।
বিদায়ী এমডি বলেন, আমাদের মধ্যে একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে। বোয়িং ও এয়ারবাসের মধ্যে যদি একটা সুস্থ ও সুন্দর কম্পিটিশন তৈরি হয়, তাহলে লাভবান হব আমরা। তাহলে কেন এই সুযোগটা আমি নেব না? পাশাপাশি আমাদের যে বোয়িংয়ের অফারটা এসেছে, ওই কমিটি এ নিয়মেই সেটা মূল্যায়নের কাজ শুরু করবে। এয়ারবাস কেনার প্রক্রিয়া এখন কোন পর্যায়ে আছে জানতে চাইলে শফিউল আজিম বলেন, মূল্যায়ন কমিটি এখন নেগোসিয়েশন কমিটিকে রেফার করেছে। বিমান বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে যে নেগোসিয়েশন কমিটিটা হয়েছে, তারা এখন দর কষাকষি করবে এয়ারবাসের সঙ্গে। দাম, টেকনিক্যাল বিষয়, অর্থায়ন, ট্রেনিং সবকিছু থাকবে এর মধ্যে। উড়োজাহাজ কেনার কিছু সেট নিয়ম আছে, তারা সেটা অনসুরণ করবে।
এয়ারবাসের প্রস্তাব মূল্যায়নের জন্য গঠিত কমিটি প্রথমে প্রস্তাবটি নাকচ করে দেয়, এরপর কমিটি পাল্টে দ্বিতীয় দফায় তিন দিনের মধ্যে একই কমিটি সেই প্রস্তাবে ইতিবাচক মূল্যায়ন দেয় বলে ঢাকার একটি দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিমানের এমডি বলেন, এই টেকনিক্যাল-ফাইনান্সিয়াল কমিটিতে আসলে কোনো পরিবর্তন হয়নি। এই কমিটিতে বিমানের যে পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) প্রধান হিসেবে ছিলেন, তিনি অবসরে যাওয়ায় পরিবর্তন আনতে হয়েছে।