নিজস্ব প্রতিবেদক
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপের কারণে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়েছে চট্টগ্রামে। গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সন্ধ্যা ৬টা) পর্যন্ত চট্টগ্রামে ১২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয়তার কারণে আরো ২-৩ দিন বৃষ্টিপাতের এ ধারা অব্যাহত থাকবে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জলাবদ্ধতার পাশাপাশি পাহাড়ধসের আশঙ্কাও রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে গত সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনি¤œ ২৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর মধ্যে গতকাল ভোর ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত চট্টগ্রামে ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যদিও গত রবিবার দিনে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও রাত ১১টার পর মূলত বেশি বৃষ্টি শুরু হয়। তবে, গতকাল সকালে কিছুটা কমলেও থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। কাল ও পরশু সারাদিন থাকতে পারে। এ সময় থেমে থেমে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বজ্র অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার আভাস রয়েছে।
এদিকে ভারী বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় নগরীর নিম্নাঞ্চল। কোনো কোনো এলাকা হাঁটু থেকে কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন কর্মজীবী মানুষ। শিক্ষার্থীদের স্কুলে পৌঁছাতে সমস্যায় পড়েন অভিভাবকরা। তার মধ্যে বিভিন্ন দাবিতে সিএনজি চালকদের ধর্মঘটের কারণে ভোগান্তি পড়ে অফিসগামী মানুষ। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে সিএনজি চালতে বাধা দিচ্ছেন ধর্মঘট ডাকা চালকরা। ফলে যানবাহন সংকটে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্য যেতে পারেনি অনেকে। তাছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে ইতোমধ্যে ব্যয় হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। তবুও মিলছে না সুফল।
বেসরকারি চাকরিজীবী মোরশেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাসা চকবাজার। বহদ্দারহাট থেকে একে খান হয়ে যেতে হয় অফিসে। বৃষ্টি হলেই বাসার আশপাশ এলাকার সড়ক ডুবে যায়। আজকেও একই অবস্থা। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে অটোরিকশা নিয়ে অফিসে যেতে হচ্ছে।’
গতকাল সকালে চকবাজার চকসুপার মার্কেটের দোকানি সুমন বলেন, ‘মার্কেটের সামনে পানি। ভেতরেও পানি চলে আসার উপক্রম হয়েছে। কাস্টমার আসার উপায় নেই। সকালে দোকান খুলেছি, এখন পর্যন্ত একজন কাস্টমারও দোকানে আসেননি।’
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা জহিরুল হক বলেন, ‘উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশ উপক‚লীয় এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘনীভ‚ত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত রয়েছে। যে কারণে কমপক্ষে আরও দুইদিন এমন ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে সেই সাথে কোথাও কোথাও পাহাড় ধসেরও সম্ভাবনা রয়েছে।’