ভিসি গৌতম বুদ্ধের নিয়োগ বাতিল চান শিক্ষার্থীরা

22

নিজস্ব প্রতিবেদক

ড. ইউনূসের বিচার দাবি করা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের (ইউএসটিসি) নবনিযুক্ত উপাচার্য ড. গৌতম বুদ্ধ দাশের নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
গতকাল রবিবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে ভিসির পদত্যাগসহ চারটি দাবি তুলে ধরেন তারা। দাবিগুলো হচ্ছে অবিলম্বে নবনিযুক্ত উপাচার্যের নিয়োগ বাতিল করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দিলীপ কুমার বড়ুয়ার পদত্যাগ, সকল ডিপার্টমেন্টভিত্তিক দাবি যত দ্রুত সম্ভব মেনে নেওয়া এবং ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ২৫ শতাংশ ওয়েভার প্রদান।
শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা সবাই ছাত্র আন্দোলনে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলাম। আমরা দাবি জানাচ্ছি প্রতিটা ডিপার্টমেন্টে শিক্ষার্থীদের ২৫ শতাংশ ওয়েভার দেওয়া হোক। আমাদের দাবিগুলো মেনে না নেওয়া হলে আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। এর সুুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষাসহ সকল কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। আমরা বিতর্কিত ভিসি এবং রেজিস্ট্রারকে চাই না। যখন উপাচার্যের নামটা আমরা জেনেছি, ওনার ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে সবাই ইতিমধ্যে জানে। তাহলে সব জানা সত্ত্বেও ইউএসটিসির মত একটা প্রতিষ্ঠান তাকে আশ্রয় কিভাবে দেবে? যেহেতু উনি অপকর্মের সাথে জড়িত, তাই আমরা তার দ্রুত পদত্যাগের দাবি করছি। এর আগে গত মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ড. মো. ফরহাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে ড. গৌতম বুদ্ধ দাশকে ৪ বছরের জন্য ইউএসটিসির ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
ড. গৌতম ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল টানা ৮ বছর চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) ভিসি ছিলেন। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও তার বাবা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অত্যন্ত অনুগত ছিলেন তিনি। এছাড়া আরেক সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির এলাকার হওয়ায় তারও আশীর্বাদপুষ্ট ছিলেন ড. গৌতম।
ভিসি থাকাকালে গৌতমের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ ও স্বজনপ্রীতিসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। দুর্নীতির টাকায় তার বিরুদ্ধে পদ-পদবি টিকিয়ে রাখা এবং নানা পুরস্কার কিনে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
গত বছর বাংলাদেশের শ্রম আইনে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিত করার জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আহবান জানিয়েছিলেন কয়েকজন নোবেল বিজয়ী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি। তখন ওই ঘটনায় উল্টো প্রতিবাদ জানান দেশের ২০১ জন কৃষিবিদ। অর্থাৎ তারা ড. ইউনূসের বিচার দাবি করেছিলেন। কৃষিবিদদের এ তালিকায় ছিলেন ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ।
তার বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হন সিভাসু শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মাসুদুজ্জামান ও ফিশারিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শেখ আহমাদ আল-নাহিদ।