রাঙ্গুনিয়ায় আখের বাম্পার ফলন

5

মাসুদ নাসির, রাঙ্গুনিয়া

প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আখ চাষের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো দাম পেয়ে লাভবান হয়েছে কমপক্ষে শতাধিক আখ চাষী। কম পুজিতে আখ চাষে অধিক লাভে কৃষকরা সাফল্য পাওয়ায় তাদের মুখে হাসি দেখা গেছে।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়. এ উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ধরে আখ চাষ করে আসছেন কৃষকরা। এবারে ৫০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া, পৌরসভা, চন্দ্রঘোনা, হোছনাবাদ, মরিয়ম নগর, পদুয়া, কোদালা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকাায় আখ চাষ হয়েছে।
জানা যায়, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পৌরসভার ইছামতী নদীর পাড়ে ঘাটচেক এলাকাজুড়ে আখ চাষ হয় চোখে পড়ার মতো। ইছামতী নদীর তীরে দীর্ঘদিন ধরে আখ চাষ করে যাচ্ছেন ফরিদ মিয়াসহ অন্য কৃষকরা। বাজারে ক্ষেতের রসালো দেশি জাতের আখ এসেছে। কয়েকগুণ বেশি লাভবান হওয়ায় আখ চাষের দিকে একে অপরের দেখায় আখ চাষ ব্যাপকভাবে হচ্ছে।জানা গেছে, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডস্থ মুরাদনগর এলাকায় দেশি আখের চাষ করে লাভের আশা করছেন কৃষক ফরিদ মিয়া। একই উপজেলায় আখ চাষে লাভবান হচ্ছেন আরো অনেক কৃষক। একেকজন চাষি লাখ টাকার উপর আয় করছেন। রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘাটচেক, পদুয়া, শিলক, পারুয়া, রাজার হাট, বাঙ্গালহালিয়া, সরফভাটাসহ বেশ কিছু জায়গায় এ আখ চাষ করা হয়েছে। এতে উপজেলার কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন। এবারে বাম্পার ফলনের মুখ দেখছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে এবার দেশি জাতের আখের আবাদ করেছেন। উপজেলার ঘাটচেক, পদুয়া, শিলক, পারুয়া, রাজার হাট, বাঙ্গাহালিয়া, সরফভাটা, ইত্যাদি বিভিন্ন জায়গায় দেশি আখের আবাদ করা হয়েছে। দিন দিন রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন জায়গায় আখের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
প্রত্যন্ত অঞ্চলের মাঠে দেখা গেছে, দুলছে সারি সারি আখ। দেশি জাতের বলে গায়ের রং উজ্জ্বল হালকা হলুদ রংয়ের হয়। কমপক্ষে ১২-১৩ ফুট লম্বা মাঝারি মোটা আখগুলো সারিবদ্ধভাবে সোজা দাঁড়িয়ে আছে। নুইয়ে পড়া ঠেকাতে প্রত্যেক সারির মাঝে মাঝে বাঁশের শক্ত খুঁটিতে মোটা রশি বাধা।
মুরাদনগর এলাকার কৃষক ফরিদ মিয়া বলেন, আখের চারা লাগানো পরে এক বছর পর এই আখ খাবার উপযোগী হয়। ভাদ্র মাসের শুরুর দিকে আখ তোলা হয় বাগান থেকে। এই আখ বড় করতে সার, ফসফেট, গোবর, ছাই ব্যবহার করা হয়। আখ চাষে তেমন কোনো খরচ না থাকায় চাষিরা লাভবান হচ্ছে বেশি। তিনি আরো জানান, মাত্র ২ শতক জমির উপর আখ চাষ করতে খরচ পড়েছে ৫০ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে তিনি ১ লাখ টাকার মত আখ পাইকারি দরে বিক্রির কথা হচ্ছে। বিক্রয় করে আরো প্রায় ৪০ হাজার টাকার মত আখ বাগানে থাকবে। সামনে হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে তিনি বাকি আখগুলো ভালো দামে বিক্রির আশা করেছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরুল কায়েস জানান, এক ফসলী জমিতে আখ চাষ হয়। যেসব জমিতে ধান চাষ হয় সেসব জমিতে আখ চাষ হয় না। আমরা অফিস থেকে আখ চাষিদের সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে আসছি। সরকারিভাবে আখ চাষিদের জন্য কোন সুবিধা আসে না। তারপরও আমরা আখ চাষে রোগবালাই দেখা দিলে কৃষকদের পরামর্শ কিংবা রোগবালাই সারার জন্য সরাসরি মাঠে গিয়ে তা নিরসন করি।