রোগীদের অসহায়ত্ব দেখে কাজে ফিরেন চিকিৎসকরা

14

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘কমপ্লিট শাটডাউন’ থেকে সরে এসেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা। গতকাল রবিবার কর্মসূচি পালনের পৌনে ১ ঘণ্টার মাথায় হাসপাতালে আসা রোগীদের অসহায়ত্ব দেখে কাজে যোগ দেন চমেকের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা। এর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর ও চিকিৎসকদের মারধরের প্রতিবাদে দুপুর ২টা ৪৫ মিনিট থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন শুরু করেন তারা। তবে জরুরি বিভাগে আসা রোগীদের অসহায়ত্ব সইতে না পেরে বিকেল ৪টা থেকে ফের চিকিৎসা সেবা শুরু করেন দায়িত্বরত চিকিৎসকরা।
রবিবার ২ টার দিকে চমেক হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ইমারজেন্সি সার্ভিস বন্ধ করে দেয় শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা। পরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ উপস্থিতিতে গেইটের তালা ভেঙে রোগীদের ভেতরে প্রবেশের সুযোগ করে দেন। এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেন, আমাদের আন্দোলনের সময় চিকিৎসকরা তাদের সবটুকু দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। তাদের ওপর হামলা মেনে নেওয়া যায় না। চিকিৎসা সেবা চালুর ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালকের সঙ্গে কথা হয়েছে। সেবা চালুর ব্যাপারে তিনি আমাদের সহযোগিতা করছেন।
চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, ‘আমাদের জরুরি বিভাগের চিকিৎসাসেবা প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার মতো বন্ধ ছিল। পরে রোগীদের অসহায়ত্ব দেখে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আবারও সেবা দেওয়া শুরু করে দেই। জরুরি বিভাগের রোগী আসা বন্ধ ছিল না। এ সময়টাতে রোগীরা অপেক্ষা করছিল। কেউ কেউ ক্ষোভও প্রকাশ করেছে। কেউ চিৎকার চেঁচামেচি হাউমাউ করছিল। তবে প্রায় রোগীরাই অপেক্ষায় ছিলেন।’
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দীন খান বলেন, চট্টগ্রামেও অল্প সময়ের জন্য কর্মসূচি পালন করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তবে ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা রোগীদের সেবা দিয়েছিলেন। তাছাড়া আমাদের জরুরি বিভাগের সেবাও বর্তমানে অব্যাহত রয়েছে। বিকেল ৪টা থেকে জরুরি বিভাগে আসা রোগীদের সেবা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। কর্মবিরতির এ সময়টাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। যদিও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা অল্প সময়ের জন্য সেবাটা বন্ধ রেখেছিল। এখন সব ঠিকঠাক আছে। কোনো সমস্যা নেই।
প্রসঙ্গত, হামলাকারীদের গ্রেপ্তার-বিচার, নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করাসহ চার দফা দাবিতে সারাদেশে সব ধরণের চিকিৎসাকেন্দ্রে সেবা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাঁরা এই কর্মসূচিকে বলছেন ‘কমপ্লিট শাটডাউন’। গতকাল রবিবার বেলা দুইটার পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক বøকের সামনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের আবাসিক সার্জন আবদুল আহাদ। তিনি চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়দের পক্ষে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ এর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।