ন্যাড়া পাহাড়ে এখন শত কোটি টাকার সেগুন গাছ

8

মাসুদ নাসির, রাঙ্গুনিয়া

সমতল আর উঁচু পাহাড়ে সবুজের ব্যাপক সমারোহ। যেদিকে চোখ যায় সবুজে ভরে গেছে। পাহাড়ে এমন সবুজ বনায়নের চিত্র চন্দ্রঘোনা খ্রীষ্টিয়ান হাসপাতালের নয়নাভিরাম সেগুন বাগানে প্রকৃতিপ্রেমিদের কাছে টানছে। চন্দ্রঘোনা কুষ্ঠ হাসপাতাল অংশে হাসপাতাল সড়কের পাশ ঘেঁষে সারি সারি সেগুন গাছ। অপর অংশ হচ্ছে চন্দ্রঘোনা পাহাড়িকা উচ্চ বিদ্যালয় উঁচু পাহাড়। একেকটি সেগুন গাছ কালের সাক্ষী হয়ে বছরের পর বছর অবস্থান করছে। একেকটি সেগুন যেন ৮ থেকে ১০ ফুটের। একেকটি গাছ বিক্রি করলে কমপক্ষে ১ থেকে ২ লাখ টাকা ক্ষেত্র বিশেষ ৩ থেকে ৫ লাখ টাকারও সেগুন গাছ । পরিকল্পনা ছিল বলে আজ হাসপাতালের অর্থনৈতিক ব্যাংক বলা চলে। পুরো পাহাড় দুটিতে গাছ লাগানোর পর কোনটি মরে কিংবা পচে যায়নি। একেকটি গাছের বয়স ৩৫ থেকে ৩৬ বছর। খ্রীষ্টিয়ান হাসপাতালের দুই অংশে কমপক্ষে ৫ থেকে ৬ হাজার সেগুন গাছ শোভা পাচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ন্যাড়া পাহাড় সবুজে ভরে দেওয়া। পাহাড় ও হাসপাতালের নিয়ন্ত্রণে থাকা। এখন সে ন্যাড়া পাহাড় হাসপাতালের সামনের সংকটময় কালে আশা পূরণের স্বপ্ন সারথী হিসেব পথ চলাতে সহজ করবে। শত কোটির সেগুন বাগানে হাসপাতাল কর্তপক্ষের তেমন অর্থ ব্যয় করেত হয়নি। সামান্য সেগুন গাছের বিচি পরিকল্পনা করে পাহাড়ে চিটিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তেমন কোন পরিচর্যাও করতে হয়নি। নাম মাত্র অর্থ দিয়ে বাগান করে এখন হাসপাতালের দুঃসময় লক্ষ লক্ষ টাকা সহায়ক অর্থ হিসেবে ডিপোজিট রূপে পাশে দাঁড়াবে। হাসপাতালের এ সবুজ বনায়ন দেখা দেখিতে এলাকার সবুজ বৃক্ষপ্রেমিকরা সেগুন বাগান করার উৎসাহ পেয়েছে। এ সবুজ বনায়ন এলাকার পরিবেশ রক্ষায় ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে। বৃক্ষতে চন্দ্রঘোনা খ্রীষ্টিয়ান হাসপাতাল জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার যোগ্যতা রাখে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১৯৯০ সালে হাসপাতালের তৎকালীন পরিচালক প্রয়াত ডা. এসএম চৌধুরী (শেলা মং) দায়িত্ব থাকাকালীন সময়ে হাসপাতালের দুই পাহাড় ন্যাড়া পাহাড় ছিল্ খালি পাহাড় সবুজে ভরে দেওয়ার জন্য সারি করে সেগুনের চারা বিচি লাগানো হয়। এরপর এ বাগান এখন পরিপূর্ণ। গরু ছাগল থেকে বাগান রক্ষায় হাসপাতাল এলাকায় হওয়ায় তেমন কোন ঘেরা বেড়া প্রয়োজন হয়নি। বাগান পরিচর্য্যায় পানি কিংবা ঔষধের প্রয়োজন হয়নি। সব মিলিয়ে শখের বসে সবুজ বনায়ন এথন শত কোটি টাকার সম্পদ।
চট্টগ্রাম বন বিভাগের বন সংরক্ষক (সিএফ) বিপুল কৃষ্ণ দাশ জানান, পরিবেশ রক্ষায় সবুজ বনাযনের কোন বিকল্প নেই। অক্সিজেনের প্রয়োজনে বেশি বেশি করে সবুজ বনায়ন করা প্রয়োজন। এধরনের বাগান পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি অর্থনৈতিক ভাবে যোগান দেবে। এলাকার প্রকৃতি প্রেমী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সুমাইয়া জাহান বৃষ্টি জানান, এলাকা সব জায়গায় দালান কোটায় ভরে গেছে। কোথাও নিঃশ্বাস নেওয়ার কোন জায়গা নেই। সবুজ বনায়নে ভরে গেছে খ্রীষ্টিয়ান হাসপাতাল সবুজ বনায়নের চিত্র। আমরা দল বেঁধে সবুজ বনায়নের কাছে সময় পেলে ছুটে যায় অক্সিজেন নিতে। প্রকৃতি আমাদের বাঁচাবে এটা মনে রাখতে হবে। এধরনের সবুজ বনায়ন যত বেশী হবে দেশ পরিবেশ গত তত উন্নত হবে। সবুজ বিপ্লব ঘটাতে সবাইকে খ্রীষ্টিয়ান হাসপাতালের মত সুবজ বনায়নে এগিয়ে আসতে হবে। মনে রাখতে হবে আজকের সুবজ বনায় ভবিষ্যত চলার অর্থনৈতিক সারথি হিসেবে পাশে থাকবে।
চন্দ্রঘোনা খ্রীষ্টিয়ান হাসপাতালের প্রধান পরিচালক ডা. প্রবীর খিয়াং জানান, সবুজ বানায়নে ছেয়ে গেছে আমাদের হাসপাতাল পাহাড়। পাহাড়ে সবুজ বনায়ন ছাড়া হাসপাতালের যেখানে খালি জায়গা আছে সেখানে নানা জাতের ফলজ ও বনজ ঘাছ। আমাদের হাসপাতালের সড়কের পাশে বড় বড় মেহগনি গাছ ও নানা জাতের গাছের শোভা পাচ্ছে। আমরা বৃক্ষকে ভালবাসি। আমাদের হাসপাতালের সাবেক প্রয়াত পরিচালক ডা. এসএম চৌধুরী তত্ত্বাবধানে ন্যাড়া পাহাড়ে সেগুন বাগান সত্যিকারে এ বাগান আমাদের অক্সিজেনের ফ্যাক্টটরি। আমাদের পরিকল্পনা আছে এ বর্ষায় হাসপাতাল এলাকায় নানা জাতের ফলজ ও বনজ চারা লাগানো হবে। আমাদের সবুজ বানয়নে অক্সিজেন নেওয়ার জন্য প্রতিদিন ছুটে আসে বিভিন্ন এলাকা থকে প্রকৃতিপ্রেমিরা।