ভরা মৌসুমেও সাগরে ইলিশের দেখা নেই

6

এম এ হোসাইন

ইলিশের ভরা মৌসুম চললেও খরা অবস্থা চলছে। সাগরে দেখা মিলছে না রুপালি ইলিশের। নিষেধাজ্ঞা শেষে বুকভরা আশা নিয়ে সাগরে নেমেছেন জেলেরা। তবে অনেকটা খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে তাদের। ভরসা এখন সামনের ‘জো’ (অমাবস্যা-পূর্ণিমার নির্ধারিত কিছু সময়) এর।
সাধারণত সাগরে বেশি ইলিশ ধরা পড়ে ‘জো’ থাকাকালীন সময়ে। অমাবস্যা ও পূর্ণিমার সময়ে যে জোয়ার হয়, সেই সময়টাকেই ‘জো’ ধরা হয়। প্রতি ১৫ দিনে একটি ‘জো’ ধরা হয়। সাগরে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও এখনো জো-এর সময় আসেনি। আগামী সপ্তাহের শেষে আছে অমাবস্যার জো। এই সময়ে সাগরে ইলিশের দেখা মিলতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে মাত্র। ইলিশ ধরা পড়ে জো এর উপর। সামনে জো আসলে তখন বুঝা যাবে। এখন সাগর উত্তাল, এই সময়ে মাছ তেমন ধরা পড়ে না। সামনের ‘জো’ গুলোতে বেশি মাছ ধরা পড়বে কিনা সেটাও অনুমান করে বলা যাচ্ছে না। দেখি কেমন হয়। তবে স্থানীয় মৎস্য আহরণকারীরা বলছেন, গত তিন বছরে মৌসুমের শেষ সময়ে বেশি ইলিশ ধরা পড়েছে। মৌসুমের শুরুতে অমাবস্যা ও পূর্ণিমার সময়ে সাগরে নেমে খালি হাতে ফিরলেও শেষ মৌসুমে প্রচুর ইলিশের দেখা পেয়েছিলেন জেলেরা।
পতেঙ্গার মাছ ব্যবসায়ী নুরুল আবছার বলেন, গত তিন বছর ভরা মৌসুমে ইলিশে অকাল চলেছিল। যদিও শেষ মৌসুমে এসে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়েছিল। এবারও অনেকটা একই অবস্থা। ভরা মৌসুমে এখন সাগরে গিয়ে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। সামনে অমাবশ্যার জো আছে। তখন মাছ পড়তে পারে। আবার দুইমাস পরেও মাছ পড়তে পারে।
ইলিশের প্রজনন নিশ্চিত করার জন্য সরকারিভাবে সাগরে মাছ ধরার উপর ৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। নিষেধাজ্ঞা শেষে গত ২৪ জুলাই থেকে সাগরে মাছ ধরতে নামেন উপকূলীয় এলাকার জেলেরা। লম্বা সময় ধরে অলস বসে থাকার পর বৈরি আবহাওয়াতেও ঝুঁকি নিয়ে সাগরে নামেন তারা। কিন্তু বুকভরা আশা নিয়ে সাগরে পাড়ি দেওয়া জেলেরা ফিরছেন নিরাশ হয়ে।
রাসমনিঘাট এলাকার জেলে হারাধন জলদাশ বলেন, অমাবস্যা-পূর্ণিমা হিসাব করে ইলিশ ধরার দিনক্ষণ ঠিক থাকে। সাগর উত্তাল থাকায় তীরবর্তী এলাকায় জাল ফেলতে হচ্ছে। সামনের জো এর সময়ে মাছ পড়বে বলে আশা করছি।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা মো. আব্দুল বারেক জানান, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়াও উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপক‚লের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।