ফইল্যাতলী কিচেন মার্কেট উদ্বোধন

10

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে নির্মিত ফইল্যাতলী কিচেন মার্কেট উদ্বোধন করেছেন চসিকের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে মার্কেটটি উদ্বোধন করা হয়। চসিক জানিয়েছে, মার্কেটটির নিচতলায় ৪৩টিঁ, ২য় তলায় ৬৬টি, ৩য় তলায় ৪৮টিসহ মোট ১৫৭টি দোকান থাকছে। এছাড়া, স্টল থাকছে ১২২টি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সময় মেয়র বলেন, ঐতিহ্যবাহী ফইল্যাতলী বাজারকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আধুনিক কিচেন মার্কেটে রূপান্তর করেছে। মার্কেট নির্মাণ ও পজিশন বরাদ্দ নিয়ে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল। অনেকেই প্রশ্ন করতে শুরু করেছিলেন আদৌ এ মার্কেট চালু হবে কি না। সাধারণ মানুষের সুবিধা, পরিবেশ সম্মত একটি বাজার এবং স্থানীয়ভাবে যারা এখানে ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত তাদের জন্য সুবিধা হয়- এসব বিষয় মাথায় রেখেই এই কিচেন মার্কেট তৈরির পরিকল্পনা হয়। সুতরাং নাগরিকদের জন্য নির্মিত নাগরিকদের আধুনিক পরিবেশে কাঁচা বাজার থেকে পোশাক কিংবা নিত্যপণ্য ক্রয়ের পরিবেশসম্মত এই মার্কেট বন্ধ থাকার সুযোগ নেই। সে জন্যই আমরা দফায় দফায় সমস্ত ঝামেলা মিটিয়ে দ্রুততার সাথেই মার্কেটটি চালু করতে পেরেছি। এ মার্কেটের কারণে নাগরিকরা যেমন প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে ভালো পণ্য কিনতে পারবেন; তেমনি কয়েকশ ব্যবসায়ীরও কর্মসংস্থান হবে। আধুনিক ও পরিবেশসম্মতভাবে স্বাচ্ছন্দে সকল নিত্যপণ্য কিনতে পারবেন সর্বস্তরের মানুষ’।
মার্কেটটি চালুর ফলে চসিকের রাজস্ব আয় বাড়বে জানিয়ে মেয়র বলেন, চসিকের আর্থিক সক্ষমতা বাড়াতে এই আয়বর্ধক প্রকল্পটি ভূমিকা রাখবে। এছাড়া, হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে জনগণের আপত্তি ছিল। আপত্তি নিষ্পত্তির জন্য ৬টি রিভিউ বোর্ড গঠন করে উক্ত রিভিউ বোর্ডে আমি নিজে উপস্থিত থেকে ৮টি স্থানে গণশুনানির মাধ্যমে করদাতাদের চাহিদামতে সহনীয় পর্যায়ে কর মূল্যায়ন করি। এতে নগরবাসীর গৃহকর নিয়ে যে অসন্তোষ ছিল তা প্রশমিত হয়েছে। আমার এ উদ্যোগের ফলে জনগণ খুশি মনে গৃহকর দেয়ায় চসিকের রাজস্ব আয় বেড়েছে।
চট্টগ্রামের বাণিজ্য সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে অবকাঠামোখাতে ব্যাপক বিনিয়োগ হচ্ছে জানিয়ে মেয়র বলেন, আড়াইহাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে পুরো শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। জলাবদ্ধতা নিরসণে চলছে দশ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প। এই ব্যাপক বিনিয়োগের ফলে চট্টগ্রাম বৈদেশিক বিনিয়োগের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। সামনে ফইল্লাতলীসহ নীচু এলাকাগুলোতে আগের মতো জলাবদ্ধতা মোকাবিলা করতে হবেনা।
১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ফইল্যাতলী বাজার দক্ষিণ কাট্টলী ও হালিশহরের বাসিন্দাদের দৈনন্দিন বাজারের জন্য অপরিহার্য স্থান ছিল। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সুবিধা বৃদ্ধি, বাজারের মানোন্নয়ন এবং সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব আয়বৃদ্ধির লক্ষ্যে এখানে নতুন মার্কেট তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই ফইল্যাতলী কিচেন মার্কেটের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রায় দুই বছর পর, বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশ মিউনিসিপাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের অর্থায়নে মিউনিসিপাল গভর্নেন্স অ্যান্ড সার্ভিস প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এই মার্কেট চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন বুঝে নেয়। দোকান বরাদ্দ নিয়ে জটিলতা দেখা দিলে চসিকের একাধিক উদ্যোগের পর অবশেষে গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কেটটি চালু করা সম্ভব হয়।
কাউন্সিলর মো. ইসমাইলের সভাপতিত্বে কিচেন মার্কেট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন চসিকের কাউন্সিলর মো. ইলিয়াছ, ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, মো. নুরুল আমিন, হুরে আরা বিউটি, স্টেট অফিসার রেজাউল করিম, প্রধান প্রকৌশলী শাহীন-উল-ইসলাম, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা এরশাদুল আমিন, ফয়সাল আমিন, আসলাম সওদাগর। ফইল্যাতলী কিচেন মার্কেট মালিক সমিতির সদস্য সচিব মো. মাসুদ রায়হানের সঞ্চালনায় এতে আরো উপস্থিত ছিলেন মার্কেট কমিটির আহব্বায়ক ওমর ফারুক সওদাগর, নজরুল ইসলাম সোহেল, জহরুল হক বাবুল, মো. কফিল ঊদ্দিন, মো. হেলাল, মো. নবী।