পর্বত জয়ের নেশায় বিভোর ছিলেন বাবর

12

হাটহাজারী প্রতিনিধি

এভারেস্ট জয়ী মো. বাবর আলী। বয়স ৩৩ বছর। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ৫১তম ব্যাচের এই শিক্ষার্থী চমেক হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পাস করে নিজেকে চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত করেন। এই তরুণ চিকিৎসক নানা স্বেচ্ছাসেবী কাজে নিজেকে জড়িত রেখেছেন দীর্ঘসময়। করোনায় সময় তাঁর ভূমিকাও বেশ প্রশংসনীয় ছিল। তবে, এমবিবিএস পাস করে ডাক্তারি পেশায় আসা এবং স্বেচ্ছাসেবী কাজে নিজেকে জড়িয়েছেন কেবলই তাঁর বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে। কিন্তু তাঁর প্রকৃত সখ ও স্বপ্নজুড়ে ছিল পাহাড়-পর্বত আরোহন। তিনি পাহাড়-পর্বত জয় করার জন্য তাঁর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ও পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়েছেন, অবশেষে সেই তাঁর স¦প্ন পূরণ হয়েছে।
প্রায় ১১ বছর পর গতকাল রবিবার পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয়ী চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার বুড়িশ্চর গ্রামের কৃতি সন্তান ডা. মো. বাবর আলী’র গর্ভধারীনি মা লুৎফুন্নাহার বেগম আবেগাপ্লুত কণ্ঠে গণমাধ্যমকর্মীদের এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, ছোটবেলা থেকে পাহাড়-পর্বত জয়ের নেশায় সে বিভোর ছিল। সে ডাক্তারি পাস করার পর কিছুদিন জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করলেও আগের অভিযানের সময় ছুটি পায়নি বলে চাকরি ছেড়ে দেয়।
গতকাল রবিবার দুপুরে বুড়িশ্চর গ্রামের বাদশা মিয়া সিপাহী’র বাড়িতে ডা. বাবর আলী’র বাবা লেয়াকত আলীও তাঁর দ্বিতীয় সন্তানের এভারেস্ট জয়ে বেশ খুশী। তিনি বলেন, খুব ভালো লাগছে। সকাল থেকে বাসায় অনেক টিভি-চ্যানেলসহ গণমাধ্যমকর্মীরা ভিড় করছেন। সবাই নানা ধরণের প্রশ্ন করছে। আত্মীয়-স্বজনসহ অনেকইে ফোন করছে। এই যে অবস্থা, এটা আমার কাছে প্রথম এবং শেষ বিজয় বলে মনে হচ্ছে। আমার জীবনে এতো বড় বিজয় আর কখনও দেখিনি বা কল্পনা করিনি।
তবে, যতক্ষণ আমার ছেলে এভারেস্টের চ‚ড়া থেকে নেমে আসবে; ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা শঙ্কামুক্ত হতে পারছি না। সকলে আমাদের ছেলে ডা. মো. বাবর আলী’র জন্য দোয়া করেন। সে যেন সফলতার সাথে কোনো প্রকার ত্রæটি ছাড়াই এভারেস্টের চ‚ড়া থেকে নেমে আসতে পারে।
এদিকে, ডা. মো. বাবর আলী’র এভারেস্ট জয়ে তার গ্রামের বাড়িতে চলছে ঈদের আমেজ। দূর-দূরান্ত থেকে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ভিড় করছেন এভারেস্ট জয়ী ডা. বাবর আলী’র বাড়ি দেখতে। যদিও বাড়িতে তেমন কেউ থাকেন না। বর্তমানে বাড়িতে আছের বাবর আলী’র পিতা-মাতা। তাঁর বড় ভাই ব্যারিস্টার মামুন আলী সপরিবারে থাকেন অস্ট্রেলিয়ায়। ছোটবোন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম হামীমুন তানজিন থাকেন কক্সবাজারে। এছাড়া সবার ছোট ভাই বিকাশের এক্সিকিউটিভ অফিসার আবীর আলী থাকেন হবিগঞ্জে।
বুড়িশ্চর গ্রামের কৃতিসন্তান কক্সবাজার-১ আসনের (চকরিয়া-পেকুয়া) এমপি ও কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম (বীরপ্রতীক) বলেন, ডা. মো. বাবর আলী’র এভারেস্ট জয়ের মাধ্যমে বুড়িশ্চর গ্রাম তথা হাটহাজারীর পরিচিতিটাকে এভারেস্টের চ‚ড়া পর্যন্ত নিয়ে গেছে। তাঁর এমন সফলতার জন্য আমি সত্যিই অভিভ‚ত। আমি তাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।