২ কোটি ৩২ লাখে বিক্রি ২৮২ টন ফল

16

ফারুক আবদুল্লাহ

চট্টগ্রাম কাস্টমসে ৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকা মূল্যের ২৮২ টন আপেল, কমলা ও খেঁজুর নিলামে বিক্রি হয়েছে ২ কোটি ৩২ লাখ ২০ হাজার টাকায়। আমদানিকারক সরবরাহ না নেয়ায় বন্দরে পড়ে থাকা এসব পণ্য নিলামে তোলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। গত ৮ জুলাই থেকে তিনদিনব্যাপী চট্টগ্রাম কাস্টমসে আপেল ও কমলাসহ বিভিন্ন ফলের প্রকাশ্য নিলাম অনুষ্ঠিত হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আমদানিকারকরা কাস্টমস নির্ধারিত শুল্ক-কর পরিশোধ না করে নিলামের মাধ্যমে পণ্য খালাস করতে চায়, যা সময়সাপেক্ষ। এ কারণে পণ্যভর্তি কন্টেইনার ইয়ার্ডে দীর্ঘদিন পড়ে থাকে। আবার বন্ড সুবিধার আড়ালে কিছু আমদানিকারক মিথ্যা ঘোষণায় মালামাল নিয়ে আসে। কাস্টমস খবর পেয়ে মালামাল কায়িক পরীক্ষা করে শুল্কসহ জরিমানা আরোপ করলে আমদানিকারক ওই মালামাল নিতে চায় না।এছাড়া এইচএস কোড জটিলতার কারণেও দীর্ঘদিন পণ্য আটকে থাকে। এসব আটকে থাকা পণ্যগুলো প্রতিমাসে নিলামে তোলার বিধান রয়েছে। তাই কর্তৃপক্ষ ইয়ার্ডে কন্টেইনার জট কমাতে প্রতিমাসে নিলামের আয়োজন করে থাকে।
কাস্টমসের তথ্যমতে, তিনদিনের নিলামে ২৫ টন মিশরীয় কমলার সংরক্ষিত মূল্য ৪৩ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হলেও নিলামে উঠেছে ১৭ লাখ ১০ হাজার টাকা। একইভাবে ২৩ টন ফ্রেশ আপেলের সংরক্ষিত মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৪১ লাখ টাকা। তবে নিলামে বিক্রি হয় মাত্র ১৩ লাখ ১৬ হাজার টাকা। এছাড়া ৪৭ টন আপেলের সংরক্ষিত মূল্য ৮৫ লাখ টাকা হলেও নিলামে ৩২ লাখ, ২৩ টন আপেলের সংরক্ষিত মূল্য ৪১ লাখ টাকা হলেও নিলামে উঠেছে ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ২৩ টন অপর আপেলের সংরক্ষিত মূল্য ৪১ লাখ টাকা হলেও নিলামে উঠেছে ১৪ লাখ ৪০ হাজার, ২৩ টন আপেলের লটের সংরক্ষিত মূল্য ৪১ লাখ টাকা হলে নিলামে উঠেছে ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ২৩ টনের ফ্রেশ কমলার সংরক্ষিত মূল্য ৪০ লাখ টাকা হলেও নিলামে দাম উঠেছে ১৫ লাখ ৬৫ হাজার, ২৩ টন লাল আপেলের সংরক্ষিত মূল্য ৪১ লাখ টাকা হলেও নিলামে উঠেছে ১৫ লাখ ৩০ হাজার এবং ৪৭ টন লাল আপেলের সংরক্ষিত মূল্য ৮২ লাখ টাকা হলেও নিলামে বিক্রি হয়েছে মাত্র ২৭ লাখ ৬০ হাজার।
তাছাড়া তিন দিনের নিলামে ২৫ টন খেঁজুরের সংরক্ষিত মূল্য এক কোটি ৮৪ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হলেও নিলামে দাম উঠেছে মাত্র ৭০ লাখ টাকা।
জানা যায়, গত তিনদিনে ১৫টি লটের নিলাম হলেও ৫টি লটে কোনো বিডার পাওয়া যায়নি।
নিলাম পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম কাস্টমস নিলাম শাখার কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোরশেদ। তিনি বলেন, গত ৮ জুলাই থেকে তিনদিনব্যাপী নিলাম আজ (বুধবার) শেষ হয়েছে। নিলামে বিক্রিত পণ্যের মালিকানার ডকুমেন্ট পেলেও এসব পণ্য পেতে আরো প্রায় ১৫ দিন সময় লাগতে পারে।
এ বিষয়ে কাস্টমস নিলাম শাখার উপ-কমিশনার সাইদুল ইসলাম বলেন, পচনশীল পণ্য দ্রুত নিলাম সম্পন্ন করার জন্য আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
উল্লেখ্য, বন্দর দিয়ে আমদানি করা পণ্য ৩০ দিনের মধ্যে খালাস না করলে আমদানিকারককে নোটিশ পাঠায় চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। নোটিশ দেয়ার ১৫ দিনের মধ্যে ওই পণ্য খালাস না করলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস। এরপর নিলামের আহবান করে দরপত্র বিক্রি করে কর্তৃপক্ষ। নির্ধারিত সময় শেষে সব দরপত্র যাচাই-বাছাই করে সর্বোচ্চ দরপত্র দাতাকে পণ্য বুঝে নেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হবে। এছাড়া নিলামে যেসব পণ্য বিক্রি হয় না দীর্ঘদিন পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যায় সেগুলো ধ্বংস করা হয়।