১৬ কেন্দ্রে ভোট পড়েছে হাজারের উপরে

3

রাহুল দাশ নয়ন

বাঁশখালী ও লোহাগাড়ায় শেষধাপে অনুষ্ঠিত হয়েছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এতে বাঁশখালীতে ২৩.১৩ শতাংশ ও লোহাগাড়ায় ২৮.৭০ শতাংশ ভোট পড়েছে। দুই উপজেলার ১৮৬টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১৬টি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে হাজারের উপরে। প্রার্থীর নিজ ও পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন হওয়ায় ভোটার সংকটেও এমন অস্বাভাবিক ভোট পড়েছে। এসব ইউনিয়নের অন্যান্য ভোটকেন্দ্রগুলোতেও প্রাপ্ত ভোট তুলনামূলক বেশি।
নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রার্থীর বাড়ির পাশের কেন্দ্রগুলোতে আঞ্চলিকতার টানে ভোটার উপস্থিতি বেশি হয়। যা ভোটের ফলাফলে প্রভাব পড়ে। আবার বাড়ির পাশের ভোটকেন্দ্রে জোরপূর্বক ভোট নেয়ার প্রবনতাও থাকে প্রার্থীদের। এক্ষেত্রে প্রতিদ্ব›িদ্ব প্রার্থীর কেন্দ্র এজেন্টরা বাধা না দিলে বেশি ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়া সহজ হয়। কেন্দ্রের আশপাশে প্রার্থীদের জোরালো অবস্থান থাকায় অনেক সময় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা নীরবতা পালন করেন।
বাঁশখালীতে তিন লক্ষ ৭৬ হাজার ৯০৬ ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে ৮৭ হাজার ১৭৭ ভোট। নির্বাচনে ৬১ হাজার ৫০৬ ভোট পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী খোরশেদ আলম। নিকটতম প্রার্থী আনারস প্রতীকের মুহাম্মদ এমরানুল হক পেয়েছেন ২১ হাজার ৯৭৯ ভোট।
বাঁশখালীতে বিজয়ী প্রার্থী খোরশেদ আলমের বাড়ি পুকুরিয়া ইউনিয়নে। এই ইউনিয়নে খোরশেদ আলমের প্রাপ্ত ভোট ৮ হাজার ১৯। প্রতিটি কেন্দ্রেই পাঁচশ’র বেশি ভোট পেয়েছেন খোরশেদ আলম। এরমধ্যে চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক হাজার ৬৩৭ ভোট, পশ্চিম নাটমুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক হাজার ১৩৪ ভোট, নাটমুড়া উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই হাজার ৮০ ভোট, পূর্ব পুকুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক হাজার ৪৯ ভোট পেয়েছেন। পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন খানখানাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এক হাজার ৩৯৫ ভোট, ডোংরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এক হাজার ৯০ ভোট, উত্তর রায়ছটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক হাজার ৫৫৯ ভোট, বাহারছড়া রত্নপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এক হাজার ১৭ ভোট, রত্নপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক হাজার ৩৭০ ভোট, পশ্চিম বাঁশখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে এক হাজার ৯৫ ভোট পান বিজয়ী প্রার্থী খোরশেদ আলম। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মুহাম্মদ এমরানুল হকের বাড়ি শেখেরখীল ইউনিয়নে। শেখেরখীল দারুচ্ছালাম আদর্শ সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্রে এই প্রার্থী পেয়েছেন এক হাজার ৩৩৩ ভোট।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হারুন মোল্লা পূর্বদেশকে বলেন, ‘প্রার্থীর বাড়ির পাশের কেন্দ্রগুলোতে ভালো ভোট পড়েছে। কারণ প্রার্থীরা নিজেরাই বাড়ির পাশের কেন্দ্রে বেশি ভোটার উপস্থিত করার চেষ্টা করে। এছাড়াও অনেক কেন্দ্রের আশপাশে একাধিক প্রার্থী থাকলেও বেশি ভোট পড়ে। এ কারণেই পুকুরিয়ায় বেশি ভোট পড়েছে।’
লোহাগাড়ায় দুই লক্ষ ২৬ হাজার ৫৯০ ভোটের মধ্যে ভোট পড়েছে ৬৫ হাজার ২২ ভোট। নির্বাচনে ৩০ হাজার ৮৯৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন আনারস প্রতীকের প্রার্থী খোরশেদ আলম চৌধুরী। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ২৯ হাজার ৭৯৩ ভোট।
বিজয়ী প্রার্থী খোরশেদ আলম চৌধুরীর বাড়ি লোহাগাড়ার আধুনগর ইউনিয়নে। এক্ষেত্রে নিজ ইউনিয়নে হাজারের উপরে ভোট না পেলেও উত্তর পদুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক হাজার ১৭ ভোট পেয়েছেন খোরশেদ আলম চৌধুরী। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সিরাজুল ইষলাম চৌধুরীর বাড়ি লোহাগাড়ার চুনতি ইউনিয়নে। এই ইউনিয়নের পানত্রিশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক হাজার ৩৭৭ ভোট, সাতগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক হাজার ৩৯৮ ভোট, পার্শ্ববর্তী চরম্বা ইউনিয়নের নোয়ারাবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক হাজার ৪৮ ভোট ও পুটিবিলা ইউনিয়নের পুটিবিলা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পেয়েছেন এক হাজার ১৭৪ ভোট।