হেঁটে-অটোরিকশায় স্পিকারের কাছে ইইউ রাষ্ট্রদূত

3

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবরোধের মধ্যে ঢাকার রাস্তায় নেমে ভোগান্তিতে পড়লেন ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের মিশন প্রধান চার্লস হোয়াইটলি এবং উপপ্রধান বার্নড স্পানিয়ের।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর দপ্তরের উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর গাড়িতে করে পৌঁছতে না পেরে তাদেরকে হাঁটতে হয়েছে অনেকটা পথ, বাকিটা পথ তারা পারি দিয়েছেন অটো রিকশায় করে। নিচের সড়কে বিপত্তির কথা ভেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্তারা ধরেছিলেন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পথ। কিন্তু বুধবার অবরোধের কারণে এক্সপ্রেসওয়েতেও থমকে থাকে যানবাহন।
অগত্যা গাড়ি ছেড়ে হেঁটে গন্তব্যের পথ ধরেন তারা। এরপর জটের পেরিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় জাতীয় সংসদে পৌঁছান তারা, শেষ করেন পূর্বনির্ধারিত রাষ্ট্রদূতের বিদায়ী সাক্ষাৎ। এমন যাতায়াত উপভোগ করার কথা জানালেও ঠিক সময়ে পৌঁছতে না পারায় আক্ষেপ করছেন হোয়াইটলি। খবর বিডিনিউজ’র
এক্সপ্রেসওয়ের এফডিসি প্রান্ত থেকে জাতীয় সংসদের দিকে তাদের এই যাত্রার একটি ভিডিও মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্স-এ পোস্ট করেছেন তিনি। আর ভিডিওটি তৈরি করেছেন বার্নড স্পানিয়ের। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কখনো গাড়ি আর এক্সপ্রেসওয়ের রেলিংয়ে মাঝের জায়গায় আঁটোসাঁটো হয়ে হাঁটছেন তারা। কখনও বা রেলিংয়ের উপরে হাঁটতে দেখা যাচ্ছে ইইউর উপ-রাষ্ট্রদূতকে।
ওই ভিডিও পোস্ট করে হোয়াটলি লিখেছেন, “বিক্ষোভের কারণে আমরা এক্সপ্রেসওয়ের উপরে কার ছেড়ে দিয়েছি এবং সিএনজিতে (অটোরিকশায়) গিয়ে স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে পেরেছি।” বার্নড স্পানিয়ের যে ‘স্মারক’ ওই ভিডিও তৈরি করেছেন তা উল্লেখ করে তিনি মজা করে লিখেছেন, “এতে আছে ‘মৃত্যুর ভয়হীন হাই-ওয়্যার সিকোয়েন্সও’।”
২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশে ইইউ রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করে আসা হোয়াইটলি আগামী অগাস্টে ঢাকায় ছাড়ছেন। ঢাকায় দ্বিতীয় দফার অ্যাসাইনমেন্টের শেষ প্রান্তে এসে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায়ে বিদায়ী সাক্ষাতে ব্যস্ত তিনি।
হোয়াইটলির ভিডিও রিপোস্ট করে স্পানিয়ের লিখেছেন, “ঢাকায় চার্লস হোয়াইটলির সঙ্গে কখনও কোনো একটা দিন একঘেয়ে নয়।” প্রতিউত্তর দিতে গিয়ে হোয়াইটলি লিখেছেন, “স্পিকারের কাছে যেতে দেরিটা বাদ দিলে আমরা স্বাভাবিক জীবনের এক প্রস্থ সময় উপভোগ করেছি।”
এক রিপ্লাইতে ইইউ সদরদপ্তরের এক কর্মকর্তা লেখেন, “আপনারা দুজনই অসাধারণ! ব্রাসেলস থেকে শুভেচ্ছা।” ওই মন্তব্যে রিপোস্ট করে হোয়াইটলি লিখেছেন, “বার্নড ছিল খাঁটি স্পাইডার ম্যান।”
জাতীয় সংসদের এক বিজ্ঞপ্তিতে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলির বিদায়ী সাক্ষাতের কথা তুলে ধরে বলা হয়েছে, “সাক্ষাৎকালে তারা সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপসহ জাতীয় সংসদের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন কর্মকান্ডের বিষয়ে আলোচনা করেন।
শিরীন শারমিন বলেন, “সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপ বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দ্বিপাক্ষিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরালো করতে ভূমিকা রাখতে পারে।”
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি দীর্ঘদিন যাবত জাতীয় সংসদের স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য শিরীন শারমিন চৌধুরীকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, “নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গসমতা আনয়নে জাতীয় সংসদের স্পিকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছেন।”