হামাস নেতা হানিয়া হত্যায় মধ্যপ্রাচ্যে বিস্তৃত পরিসরে যুদ্ধের শঙ্কা

12

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইরানের রাজধানী তেহরানে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক শাখার শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়া হত্যার ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যে বিস্তৃত পরিসরে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। হামাসের সশস্ত্র শাখা এরই মধ্যে এ হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। হামাসের মিত্র ইরানও বলছে, তারা হানিয়ার রক্তের বদলা নেবে। ইসরায়েল বিদেশে তাদের চালানো কোনও অভিযানের বিষয়ে সাধারণত মন্তব্য করে না। এবারও হানিয়া হত্যা নিয়ে ইসরায়েল কোনও মন্তব্য করেনি। হত্যার দায়ও স্বীকার করেনি। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী কেবল বলেছে, তারা পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে দেখছে। ইসরায়েলি নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য নতুন কোনও নির্দেশনাও তারা জারি করেনি। কিন্তু হানিয়া হত্যায় সবার নজরই এখন ইসরায়েলের ওপর, যে দেশটি হামাসের সব নেতাকে খুঁজে খুঁজে বের করে সাজা দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। তাছাড়া, ইরানে এর আগে ইসরায়েলের হামলা চালানোর নজিরও আছে।
গত ১৯ এপ্রিলে ইরানের নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্র ঘিরে আকাশ প্রতিরক্ষার ওপর ইসরায়েল যে ধাঁচে হমলা চালিয়েছিল, সেই একই কায়দায় সম্ভবত এবার হামলা চালিয়ে হানিয়াকে হত্যা করেছে তারা। ইসরায়েলের জঙ্গিবিমানগুলো ইরানের আকাশসীমার বাইরে থেকে রকেট ছুড়েছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। ফলে, এমন একটি অঞ্চলে ইসরায়েলের ওপর বদলা নেওয়ার হুমকি বাড়ছে, যে অঞ্চলটি এরই মধ্যে গাজা যুদ্ধ এবং লেবাননে সংঘাত বাড়তে থাকা নিয়ে নাজুক অবস্থায় রয়েছে।
ইরানের রেভলুশ্যনারি গার্ড বুধবার তাদের নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের কয়েক ঘণ্টা পরই হানিয়া নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করে জানায়। স্থানীয় সময় বুধবার ভোরে তেহরানের যে বাড়িতে হানিয়া ছিলেন, সেখানে তিনি এক দেহরক্ষীসহ নিহত হন। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে রেভল্যুশনারি গার্ড। ইসমাইল হানিয়া ছিলেন হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান। তিনি মূলত কাতারে থাকতেন। গাজায় যুদ্ধের এই সময়ে তিনি হামাসের আন্তর্জাতিক ক‚টনীতিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।
হামাসের সশস্ত্র শাখা একটি বিবৃতিতে বলেছে, “হানিয়া হত্যাকান্ড ‘যুদ্ধকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে এবং এর প্রতিক্রিয়াও বড় ধরনের হবে।” ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, এ ঘটনায় ইসরায়েল নিজেদের জন্যই কঠোর শাস্তি বেছে নিয়েছে। হামাস নেতার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়া তেহরানের কর্তব্য, যেহেতু তার মৃত্যু হয়েছে ইরানের মাটিতে।