হামলা-মামলা ও শঙ্কার মধ্যে কাল নির্বাচন

5

আসাদুজ্জামান রিপন

সদস্যপদ স্থগিত, তফসিল বাতিল করে সময় বাড়িয়ে পুনঃ তফসিলের দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন সংস্কৃতিকর্মীদের একাংশ। পরে হাইকোর্টের এক রিটের প্রেক্ষিতে স্থগিত হওয়া সদস্যরা সদস্যপদ ফিরে পেয়েছেন। এর মধ্যে গত বুধবার রাত সাড়ে আটটায় যুগ্ম-সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন হামলার শিকার প্রার্থী। এমন পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন প্রার্থী ও ভোটাররা। হামলা, মামলা আর নিরাপত্তা শঙ্কার মধ্যে দিয়ে আগামীকাল শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি পরিচালনা কমিটির নির্বাচন।
শিল্পকলা একাডেমি সূত্রে জানা যায়, সময়মত সদস্যপদ নবায়ন ফি জমা না দেওয়ায় ১১১ জনের সদস্যপদ স্থগিত করে শিল্পকলার এডহক কমিটি। ফলে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন নি তারা। এ নিয়ে হাইকোর্টে রিট করেন সদস্য মোহাম্মদ আলী। রিটের প্রেক্ষিতে সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়ার আদেশ দেন হাইকোর্ট। নির্বাচনী উপ-কমিটি জরুরি বৈঠক করে সদস্যপদ নবায়ন ফি প্রদানে গতকাল বিকাল ৪টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়। এর মধ্যে নবায়ন ফি জমা দিয়ে সদস্যপদ ফিরে পেয়েছেন ৮১ জন সদস্য।
গত বুধবার রাত সাড়ে আটটায় চেরাগী পাহাড় মোড়ের আজাদী গলিতে হামলার শিকার হন শিল্পকলা একাডেমি পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মোহাম্মাদ সাজ্জাত হোছাইন। ওইদিন ১০/১২ জনের একটি গ্রুপ তার সামনে এসে কেন রিট করেছেন জানতে চান। এরপর কেন নির্বাচন করছেন বলে মারধর করে। এতে তিনি মারাত্মক আহত হন।
হামলায় আহত সাজ্জাত হোছাইন বলেন, ‘শিল্পকলার কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় আমার উপর হামলা হয়েছে। অনেকের সদস্যপদ স্থগিত ছিল। ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি হয় নাই। হাইকোর্টের এক রিটে স্থগিত হওয়া সদস্যদের সদস্যপদ ফিরিয়ে দিতে বলা হয়। এর ফলে বাদ পড়াদের সদস্যপদ ফিরিয়ে পাওয়ার সুযোগ হয়েছে। শুধু আমি তাদের আইনি সহায়তা করেছি। এ কারণে পরিকল্পিতভাবে আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায়।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে এক প্রার্থীর ইন্ধনে হামলা হয়েছে। সেটা আবার সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেছে। গতকাল তাদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় মামলা করেছি।’
হামলার বিষয়ে এক প্রার্থী বলেন, ‘ছয় বছর পর নির্বাচন হচ্ছে। এটি নিয়ে সবার মাঝে উৎসব হওয়ার কথা। এখন উল্টো নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে সঙ্কিত। হামলার শিকার হতে হচ্ছে। মনে হচ্ছে পাতানো নির্বাচনের জন্য সব ধরনের আয়োজন চলছে।’
নির্বাচনী উপ কমিটি সূত্রে জানা যায়, শিল্পকলা একাডেমির নির্বাচনে বিভিন্ন পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন ২২ প্রার্থী। ভোটার রয়েছেন ৬২৪ জন। আগামীকাল সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে। কেন্দ্রে একজন প্রিজাইডিং অফিসার, তিনজন সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার এবং ৬ জন পুলিং অফিসার থাকবেন। জেলা প্রশাসনের ২ জন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ১০ জন পুলিশ ও ১০ জন আনসার মোতায়েন থাকবে।
সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাইফুল আলম বাবু বলেন, ‘ভোটারদের মাঝে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এখানে সবাই শিক্ষিত মানুষ। সুশীল সমাজের প্রতিনিধি রয়েছে। তাই নির্বাচন নিয়ে কোন ধরনের শঙ্কা দেখছি না।’
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ও নির্বাচনী উপকমিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. সাদি উর রহমান জাদিদ বলেন, ‘শিল্পকলা একাডেমির নির্বাচনে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। দুইজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ১০ জন পুলিশ ও আনসার থাকবে। তবে, প্রার্থীর উপর হামলার বিষয়ে কোন তথ্য নেই। কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি।’