হাটহাজারীতে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত প্রার্থীরা

19

হাটহাজারী প্রতিনিধি

চলছে ভোটের জটিল সমীকরণ। নির্বাচনের বাকী মাত্র ২ দিন। ২১ মে হাটহাজারী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে প্রচার-প্রচারণা বেশ জমে উঠেছে। নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের তিন হেভিওয়েট প্রার্থীর পক্ষে নেতাকর্মীরা ত্রি-ধারায় বিভক্ত হয়ে নিজ নিজ পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী উৎসবে মেতে উঠেছেন।
পোস্টার-প্রতীকে ছেয়ে গেছে এলাকা সর্বত্র। প্রার্থীরা দিন-রাত তাদের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। শব্দযন্ত্রের মাধ্যমে মনযোগ আকর্ষণকারী শিল্পীদের কণ্ঠে রেকডকৃত গান ও স্লোগান দিয়ে চলছে প্রচারণা। এর মধ্যে আজ রবিাবার মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা। এর মধ্যেও অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে অনেকে শঙ্কিত। উপজেলার ১০৬টি ভোটকেন্দ্রর মধ্যে এক-তৃতীয়ংশ কেন্দ্র ঝুকিপূর্ণ বলে তারা দাবি করছেন।
তাদের ধারণা, নির্বাচনের দিন নির্দিষ্ট কেন্দ্রে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা অস্ত্রসহ কেন্দ্রে প্রবেশ করে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করবে। ফলে ভোটের পরিবেশ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ভোটাররা তাদের ভোট দেওয়ার অধিকার হারাবে।
তাছাড়া কোন কোন প্রার্থীর লোকজন অন্য প্রার্থীর নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নানানভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে। যদিও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন বলছে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে গত শনিবার সন্ধ্যায় হাটহাজারী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলন করেন ঘোড়া প্রতীকে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সোহরাব হোসেন চৌধুরী নোমান। তার নির্বাচনী প্রধান কার্যালয় ফতেপুর জোবরার ছালেহ মঞ্জিলে অনুষ্ঠিত হয় এ সংবাদ সম্মেলন। এ সময় তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে সোহরাব হোসেন চৌধুরী নোমান বলেন, কয়েকদিন ধরে ২ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর উশৃঙ্খলকর্মীরা বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত আমার কর্মী-সমর্থকদের নির্বাচনী দায়িত্ব পালন না করার জন্য হুমকি দিচ্ছেন। এর পাশাপাশি পুলিশি ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে নির্বাচনী এলাকা ত্যাগের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া নির্বাচনী এলাকার বাইরের বিভিন্ন পেশাদার সন্ত্রাসী গোষ্ঠীসহ নানা লোকজনকে নির্বাচনের দিন বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী ২ প্রার্থী চট্টগ্রামসহ হাটহাজারীর আশে পাশের বিভিন্ন এলাকায় গোপন বৈঠক করে টাকার বিনিময়ে ভোটারদের প্রভাবিত করছে এবং অস্ত্র সংগ্রহ করছে। এর মধ্যে বহিরাগত সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে প্রায় ৩২টি ভোটকেন্দ্র জোরপূর্বক দখল করার পরিকল্পনার গুঞ্জন ইতিমধ্যে হাটহাজারীর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। তাছাড়া প্রভাবশালী ২ প্রার্থী বিভিন্ন উপর মহলে সহযোগিতায় যে কোন প্রকারে নির্বাচনী ফলাফল তাদের অনুকূলে নেওয়ার জন্য নানা রূপে ষড়যন্ত্র এবং প্রস্তুতিতে লিপ্ত রয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা এবিএম মশিউজ্জামান বলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সুলতানুল আলম চৌধুরী, এস এম মোরশেদুল আলম চৌধুরী, শহীদুল আলম চৌধুরী, সদস্য মোহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক মো. আবু বক্কর সিদ্দিকী, শফিকুল আলম হেলাল, প্রদান সমন্বয়কারী নির্বাচন পরিচালনা কমিটি শাহনেওয়াজ চৌধুরীর মানিক, সাংগঠনিক সম্পাদক মনজুর হোসেন চৌধুরী মাসুদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোস্তফা আনোয়ার ঝন্টু, উত্তর জেলা কৃষক লীগের যুগ্ম সম্পাদক লোকমান চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক নুরুল আলম, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মো. হারুনুর রশিদ, সদস্য মুশফিকুর রহমান সাদী, শেখ খোরশেদুজ্জামান, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ রাসেল, সোহরাওয়ার্দী চৌধুরী, গিয়াস উদ্দিন মানিক, ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তসলিম হায়দার, মেখল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মহিবুল হক, ফতেপুর ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহেদুল আলম প্রমুখ।