স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে

3

দেশের স্বাধীনতার স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেও হয়ত জীবন দিতে হতো না, যদি তিনি কক্সবাজারের একটি দ্বীপ এলাকা সম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠীর হাতে তুলে দিতেন। কিন্তু যে মানুষটির জন্ম বাংলাদেশ নামক একটি ভূ-খন্ডের স্বপ্ন নিয়ে, যিনি জীবনের বড় একটি অংশ একটি স্বাধীন দেশের জন্য কারাবাস কাটলেন, যার নেতৃত্বে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা অর্জন;তিনি দেশের ভূ-খন্ড কোন বেনিয়ার হাতে তুলে দিতে পারেন না। বঙ্গবন্ধু জীবন দিয়েছেন ভু-খন্ড দেননি। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রেখেছেন- এসব কথা ইতিহাসে অবিস্মৃত হয়ে থাকবে। সেই সম্রাজ্রবাদীদের চক্রান্ত থেমে থাকেনি। তারা ক্ষণে ক্ষণে নানা প্রলোবন, নানা অনৈতিক প্রস্তাবনা নিয়ে হাজির হন;আর গ্র্যারান্টি দেন ক্ষতায় আনার বা রাখার। যেমনটি বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চক্রান্তের শিকড় কত গভীরে প্রবেশ করেছে এবং তা দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে প্রধানমন্ত্রীকে স্বয়ং বাধ্য করেছে- তা নিয়ে গভীর চিন্তা ও দেশবাসীকে সতর্ক হওয়ার অবকাশ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনরকম রাখঢাক ছাড়াই খোলামেলাভাবে বলেছেন, বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং মিয়ানমারকে নিয়ে একটি খ্রিস্টান রাষ্ট্র বানানোর ষড়যন্ত্র চলছে। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সন্ধ্যায় গণভবনে ক্ষমতাসীন জোটের শরিক ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি এ কথা বলেন। এসময় তিনি বলেন, ‘চক্রান্ত এখনো আছে। পূর্ব তিমুরের (ইন্দোনেশিয়া ভেঙে গড়ে ওঠা) মতো বাংলাদেশের একটা অংশ নিয়ে, তারপরে চিটাগাং (পার্বত্য চট্টগ্রাম), মিয়ানমার মিলে একটা খ্রিস্টান রাষ্ট্র বানাবে। বঙ্গোপসাগরে একটা ঘাঁটি করবে।’ সরকারপ্রধান বলেন, ‘ষড়যন্ত্র ছিল বাংলাদেশের নির্বাচনই হতে দেবে না। তবে দেবে, আর আমারও ক্ষমতায় আসতে অসুবিধা হবে না; যদি আমি বাংলাদেশে কারও এয়ার বেজ করতে দেই, ঘাঁটি করতে দেই, তাহলে আমার কোনো অসুবিধা নেই। কোনো এক সাদা চামড়ারই প্রস্তাব।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি স্পষ্ট জবাব দিয়েছি, আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, আমরা যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করে দেশ স্বাধীন করেছি। দেশের অংশ ভাড়া দিয়ে বা কারও হাতে তুলে দিয়ে আমি ক্ষমতায় যেতে চাই না। আমার ক্ষমতার দরকার নেই। জনগণ যদি চায় ক্ষমতায় আসবো নইলে আসবো না।’ তিনি বলেন, ‘এই কথাগুলো সবার জানা উচিত। আমার যেটা যুদ্ধ সেটা ঘরে বাইরে সব জায়গায়।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গোপসাগর এবং ভারত মহাসাগর, এখানে প্রাচীনকাল থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য চলে। আর এই জায়গায় কোনো বিতর্ক নেই, এখানে কারও কোনো দ্ব›দ্ব নেই। এই জায়গার ওপর অনেকের নজর। সেটা আমি হতে দিচ্ছি না। এটা আমার একটা অপরাধ।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে এয়ার বেজ (বিমান ঘাটি) করে কার ওপর হামলা করবে। যদিও একটা দেশকে দেখানো হয় কিন্তু সেটা তো না। আমিতো জানি আরও কোথায় যাবে। যে কারণে আমাদের সব সময় কিছু সমস্যায় পড়তে হচ্ছে, হবে আমি জানি। কিন্তু আমি ওটা পাত্তা দেই না সোজা কথা। আমার শক্তিই দেশের মানুষ, যদি ঠিক থাকে…। আর দেশটা যে উন্নত হচ্ছে এটা অনেকের পছন্দ না।’ দেশের অর্জন ধরে রেখে সামনের দিকে এগোতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশটাকে গড়ে তুলতে হবে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা না নিলে দেশটাকে আগাতে পারব না। এখানে যে বাধাগুলো আসে, মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা আমাদের বিরোধী ছিল, এখনো তারা একটুও বদলায়নি। এটা হচ্ছে বাস্তবতা এটা মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হবে।’ আমাদের ভালো লাগার জায়গা এখানে, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাই বলেন স্পষ্টভাবে বলেন। দেশের মানুষ দ্বাদশ নির্বাচনের আগে কয়েকটি বড় রাষ্ট্রের নানাবিধ তৎপরতায় আঁচ করতে পেরেছে, আসলে উন্নয়নের মহাসড়কে অবস্থানকারী এ দেশটির বিরুদ্ধে গবীর ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে। সরকার ও দেশের মানুষকে নানাভাবে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। সরকার তাদের দক্ষ নেতৃত্বে তা মোকাবেলা কওে নির্বাচন শেষ করেছে। তবে এখনও চলছে দেম বিরোধী ষড়যন্ত্র। এ ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় দেশের মানুষ ও স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারকে সজাগ এবং সুশাসন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলোতে আরো বেশি শাণিত করতে হবে।