স্ত্রীর সাথে ইউপি সদস্যের পরকীয়া স্বামীর আত্মহত্যা

1

সাতকানিয়া প্রতিনিধি

সাতকানিয়ায় স্ত্রীর সাথে স্থানীয় ইউপি সদস্যের পরকীয়ার অপমান সইতে না পেরে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে এক কৃষক স্বামী। গত শনিবার রাত ১টায় উপজেলার পুরানগড় ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের বৈতরণী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মো. কামাল উদ্দীন (৩২) উপজেলার পুরানগড় ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড বৈতরণী এলাকার ওমর মিয়ার ছেলে।
নিহতের চাচা মোহাম্মদ নুরুচ্ছফা জানান, ইউপি নির্বাচনে পুরানগড় দুই নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মামুনের পক্ষে কাজ না করার পর থেকে নানা রকম হুমকি দিচ্ছিল। অন্যদিকে নিহত কামালের স্ত্রীর সাথে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে ইউপি সদস্য মামুনের। সেগুলো নিয়ে অনেক বিচার সালিশও হয়। গত শনিবার রাত ১টার দিকে কামালের সাথে তার স্ত্রী পরকীয়া নিয়ে ঝগড়া হয়। তখন তার স্ত্রী স্থানীয় ইউপি সদস্য মামুনকে বিষয়টি জানালে মামুন এসে বিচারের নামে নিহত কামালকে পেটে ঘাড়ে লাথি এবং ঘুষি ও ব্যাপক মারধর করে। বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে কামাল কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করে। হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পুরানগড় ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মামুনুর রশিদ মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, নিহত কামাল উদ্দিন ২য় বিয়ের জন্য উঠে পড়ে লাগেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকতো। গত একমাস আগে তার স্ত্রী আমাকে পুরো ঘটনাটি অবগত করেন। ইদানিং সে বিয়ের জন্য তড়িঘড়ি করলে তার স্ত্রী গতকাল কেরানিহাটে অবস্থিত আমার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে এসে স্বামীর বিরুদ্ধে আমাকে বিচার দেন। আমি তাদেরকে থানা প্রশাসনের আশ্রয় নেওয়ার কথা বললে তারা পারিবারিকভাবে বসে সমাধান করে দেওয়ার জন্য আমাকে অনুরোধ করেন। এমতাবস্থায় রাতে দোকান বন্ধ করে বাসায় গিয়ে তাদের সমস্যাটি সমাধান করে দিব বলে আশ্বাস প্রদান করি। দোকান বন্ধ করে আমি রাত ১২টায় বাসায় পৌঁছায়। আমার পার্শ্ববর্তী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য, চৌকিদার ও সমাজের সর্দারকে নিয়ে সালিশি বৈঠকের জন্য ওদের বাড়িতে যায়। নিহত কামালের কাছ থেকে এত সুন্দর সংসার ছেড়ে দ্বিতীয় বিয়ের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে সে উত্তেজিত হয়ে পড়ে। তাকে আমি লাথি দিয়ে মেরে ফেলবো বলে হুংকার দিয়ে থামানোর চেষ্টা করি। সে আমাদের কোনো কথা কর্ণপাত করবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়।
এ সময় তার মা তাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠেন ‘আমাদের কেন এত জ্বালাচ্ছিস, তুই বিষ খেয়ে মরে যেতে পারিস না?’ একটু পরেই জানতে পারলাম সে বিষ পান করেছে। এমতাবস্থায় তাক উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে নিয়ে গেলে ততক্ষণে সে মারা যান।
পুরানগড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউল ইসলাম বলেন, ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মামুনের সাথে নিহত কামালের স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্ক ছিল বিষয়টি কামাল অনেকবার জানিয়েছে। গতকাল মামুন তার ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে বিচার নাম দিয়ে কামালকে মারধর করে। এতে ক্ষোভে কামাল কীটনাশক পান করে মৃত্যুবরণ করেন।
সাতকানিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আতাউল হক চৌধুরী বলেন, কামাল নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। স্থানীয়রা বিষপানে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানায়। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেকে) মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।