সহযোগিতা চাই বন্ধুত্ব চাই

5

ভারতের প্রতি বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার বার্তা দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামির আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, আমরা সকলে বন্ধুত্ব চাই, সহযোগিতা চাই। গত ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর প্রকাশ্য রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠা দলটির নেতা গতকাল বুধবার দুপুরে গণমাধ্যমের সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় আলোচনায় উঠে ভারত প্রসঙ্গও।
তুমুল গণ-আন্দোলনের মধ্যে আওয়ামী লীগের শেষ সময়ে জামায়াতকে ‘সন্ত্রাসী সত্তা’ আখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধ করা হয় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে। তবে ৫ আগস্ট থেকে জামায়াত প্রকাশ্যে চলে আসে। তারা সেদিন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ও পরে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করে, ৮ আগস্ট মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের শপথেও উপস্থিল ছিল দলটির প্রতিনিধিরা।
নিষিদ্ধ হওয়ার ২৮ দিনের মাথায় সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার হয়ে যায় গতকাল। এনিয়ে দলটির আমির এই মত বিনিময়ের আয়োজন করেন। খবর বিডিনিউজের।
ভারত প্রসঙ্গে শফিকুর রহমান বলেন বলেন, আমরা কেউ বিপদে পড়তে চাই না। আমরা চাই সকলেই সকলের সম্মানিত প্রতিবেশী হিসেবে বাস করুক। এটা শুধু ভারত দিয়ে কথা নয়, সকলের ক্ষেত্রে আমাদের একই কথা।বন্ধু হিসেবে আমাদের সাহায্য করুন, কিন্তু মেহেরবানি করে কেউ আমাদেরকে বাধ্য করার চেষ্টা করবেন না। ডিসিশনটা আমাদের জনগণকে নিতে দিন। জনগণ যখন ডিসিশন নেবে তখন সেই ডিসিশন জনকল্যাণমূলক হবে, এটাই হবে গণতন্ত্রের পক্ষে, জনগণের অধিকারের পক্ষে। কিন্তু অন্য জায়গা থেকে যদি আমাদেরকে বাধ্য করার চেষ্টা করেন তাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব।
জামায়াতের আমির বলেন, আপনার স্বভাব বদলান তাহলে প্রতিবেশী বদলানোর দরকার পড়বে না। প্রতিবেশীকে প্রতিবেশী হিসেবে আপনি রিসিভ করুন, তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করুন। আপনি যখন কাউকে সম্মান করবেন, ভালোবাসবেন, আপনার পাওনা হয়ে যাবে তার থেকে ভালোবাসা পাওয়া, সম্মান পাওয়া। এজন্য ধৈর্য ধরতে হবে, অস্থির হওয়ার কিছু নেই।
গুলশানের হোটেল লেকশোরে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সম্পাদক, প্রধান নির্বাহী, বার্তা সম্পাদক ও প্রধান প্রতিবেদকদের সঙ্গে এই মতবিনিময় হয়।
নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, মানব জমিনের নির্বাহী সম্পাদক শামীমুল হক, এটিএন বাংলার পরিচালক (বার্তা) হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ, বাংলা ভিশনের প্রধান সম্পাদক আবদুল হাই সিদ্দিক, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, সাংবাদিক নেতা আবদুল হাই শিকদার, এমএ আজিজ, এলাহী নেওয়াজ খান সাজু এই মত বিনিময়ে ‘মুক্ত গণমাধ্যম’ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন।
রাজাকার শব্দে কষ্ট লাগে : জামায়াতের আমির বলেন, আমার খুব ব্যাথা লাগে যখন একদল বলে ‘পাকিস্তানি রাজাকার’, আরেক দল বলে ‘হিন্দুস্থানি রাজাকার’ খুব কষ্ট লাগে। আমার দেশের জনগণকে আরেক দেশের দালাল বানাচ্ছি, রাজাকার বানাচ্ছি, কেন এটা করছি?
এটা যারা করে তাদের ‘মানসিকতার পরিবর্তন হওয়া উচিত’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, যে জাতি নিজের নাগরিকের স্বীকৃতিই দেয় না সেই জাতি বিশ্বের দরবারে সম্মানটা পাবে কীভাবে? আপনাদের মত আমারও কিছু কিছু দেশে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে।