সরকারি চাকরিতে ঢুকলেই ‘সর্বজনীন পেনশনে’

4

সরকারি চাকরিতে যোগ দিলেই সরাসরি পেনশন পাওয়ার সুবিধা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আগামী বছর থেকে যারা সরকারি চাকরিতে যোগ দেবেন, তাদেরকে ‘সর্বজনীন পেনশন’ সুবিধার আওতায় আনা হচ্ছে। এর মানে পেনশনের জন্য নিজেকেই অর্থ জমা করতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার আগামি অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী যে বক্তব্য রেখেছেন, সেখানে এই বিষয়টির উল্লেখ করেছেন তিনি। তবে আগামি অর্থবছর নয়, ২০২৫ সালের জুলাই থেকে এই বিধান চালু হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার ফান্ড পরিচালনা ব্যয় সরকার বহন করায় এবং বিনিয়োগ মুনাফা জমাকারীদের মধ্যে বিভাজন হওয়ায় এটি হবে বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় পেনশন স্কিম’।১৮ বছরের বেশি বয়সীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আনা সম্ভব হলে সবাই একটি সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতাভুক্ত হবেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। খবর বিডিনিউজের
গত বছরের ১৭ আগস্ট সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতায় চারটি স্কিম চালু হয়। এসব স্কিমে মাসে ১ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা জমা করার সুযোগ আছে। যত বেশি বছর টাকা জমা করা হবে পেনশন হবে তত বেশি।
৬০ বছর বয়স থেকে পেনশন পাওয়া যাবে। এই সুবিধা থাকবে আমৃত্যু, তবে তার মৃত্যুর পর নমিনি পেনশন পাবেন তার বয়স সর্বোচ্চ ৭৫ হওয়ার আগ পর্যন্ত।
এর মধ্যে ‘প্রবাস’ স্কিমটি প্রবাসীদের জন্য। এই স্কিমে প্রতি মাসে সর্বনিম্ন ৫ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জমা করা যাবে। চাইলে মাসে সাড়ে ৭ হাজার টাকাও জমানো যাবে।
‘প্রগতি’ স্কিম চালু করা হয় বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য। শুরুতে এই স্কিমেও মাসে দুই, তিন বা সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা জমার সুযোগ ছিল। পরে তা বাড়িয়ে করা হয় ১০ হাজার টাকা।
অনানুষ্ঠানিক খাত, অর্থাৎ স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য রয়েছে ‘সুরক্ষা’। এই স্কিমে মাসে এক, দুই, তিন বা পাঁচ হাজার টাকা করে জমানো যাবে।
আর ‘সমতা’ স্কিম নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য। এই স্কিমে মাসে জমানো যাবে এক হাজার টাকা করে। এর মধ্যে ৫০০ টাকা দেবে সরকার। তবে এই সুবিধা নিলে সামাজিক নিরাপত্তার ভাতা সুবিধা বন্ধ হয়ে যাবে।
এরপর স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা ও তাদের অধীন অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের কর্মীদের জন্য চালু হয় নতুন স্কিম ‘প্রত্যয়’। এই স্কিমে মাসে দুই, তিন, পাঁচ বা ১০ হাজার টাকা জমানো যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদেরকে এই স্কিমের আওতাভুক্ত করার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়- ‘সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্র এবং বিচার বিভাগকে এই প্রক্রিয়ার বাইরে রেখে একে সর্বজনীন বলার সুযোগ’ নেই।
মন্ত্রী বলেন, ‘পেনশন সুবিধা পান এমন সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসা হবে। ইতোমধ্যে স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের এ ব্যবস্থার আওতাভুক্ত করা হয়েছে। অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের আগামি ২০২৫ সালের জুলাই থেকে এ ব্যবস্থার আওতাভুক্ত করা হবে’।