সন্ত্রাস-নাশকতা প্রতিরোধ কমিটি গঠন করতে হবে

4

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেছেন, সাম্প্রতিক আন্দোলনের নামে সারাদেশে দেশে সংঘটিত স্বাধীনতা বিরোধীদের নৈরাজ্য ও নাশকতায় দেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও শতশত গাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক তান্ডবের ঘটনায় অনেকের প্রাণহানি ঘটেছে। বর্তমানে দেশ কঠিন সময় অতিক্রম করছে। মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নৈরাজ্য ঠেকাতে প্রত্যেক উপজেলা, পৌরসভা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ২০১৩ সালে গঠিত সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটিকে পুনরায় সক্রিয় করে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, জেলা ও মহানগর সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটির সভার কার্যবিবরণীর অনুলিপি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় ও প্রয়োজন অনুসারের অন্যান্য মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা দপ্তরে প্রেরণ করতে হবে। এজন্য উপজেলা, পৌরসভা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটির কার্যক্রম প্রতিমাসে প্রতিবেদন আকারে জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দিতে হবে।
গতকাল রবিবার সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম একটি বিভাগীয় শহর। এখানে জেলা আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্তে কোর কমিটি রয়েছে। দেশে যেদিন থেকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে যাচ্ছে, সেদিন থেকে বিভাগীয় ও জেলা কোর কমিটির সভা করেছি। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে বিভাগীয় কোর কমিটি, ডিআইজি জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, বিজিবি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী-নৌ-বাহিনী, কোস্টগার্ড, র‌্যাব, এনএসআই, ডিজিএফআই, আনসার-ভিডিপি থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থা সকলে মিলে জেলা কোর কমিটি সময়োপযোগী উদ্যোগ নিয়েছিলাম। নাশকতাকারীরা কোথায় কোথায় অবস্থান নিতে পারে সে সকল বিষয়ে অবগত হয়ে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। সেজন্য নাশকতাকারী ও সন্ত্রাসীরা এখানে কিছুই করতে পারেনি। সামনের দিনগুলোতেও আমরা সমন্বিতভাবে কাজ করবো।
সভায় পাট অধিদপ্তর, বিসিক, বিএসটিআই, বিআরটিএ, মহিলা বিষয়ক কার্যালয়, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন কার্যালয়, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়, বন বিভাগসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কার্যক্রমের অগ্রগতি বিষয়ে গুরুত্বারোপসহ বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশ বøক সংস্কার ও স্থাপন এবং স্কুলগুলোর ভূমি জটিলতা নিরসনের তাগিদ দেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্টেট।
সভায় সিএমপি’র নবাগত উপ-পুলিশ কমিশনার ও অ্যাডিশনাল ডিআইজি ফেরদৌস আলী চৌধুরী বলেন, কোথাও সন্ত্রাস ও নাশকতার তথ্য পেলে আমাদেরকে জানাবেন, তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব। জানমালের নিরাপত্তায় মহানগর পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।
সভায় জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কবীর আহম্মেদ বলেন, দুস্কৃতিকারীদের হামলা, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতায় বিআরটিএ’র প্রধান কার্যালয়ের সার্ভার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সকল সেবা কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। ফলে মোটরযানের বিভিন্ন ডকুমেন্ট হালনাগাদের জন্য জমা দেয়া সরকারি ফি’র রশিদ প্রদর্শন করতে পারলে পুলিশ ঐসব মোটরযানের বিরুদ্ধে যাতে মামলা রুজু করতে না পারে, সে বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্ব দেয়া হবে।
সভায় জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, দেশে নাশকতা ও নৈরাজ্য চলাকালীন সকল সরকারি হাসপাতাল, কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্তব্যরত ডাক্তার-নার্স-কর্মচারীরা সার্বক্ষণিক চিকিৎসা-সেবা দিয়েছে।
সভায় উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রগণ তাদের নিজ নিজ এলাকার সমস্যাগুলোর কথা তুলে ধরেন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসানের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাব্বির ইকবাল, সিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার ও অ্যাডিশনাল ডিআইজি ফেরদৌস আলী চৌধুরী, জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কবীর আহম্মেদ, জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী, সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ এনামুল হক, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মোজাফফর আহমেদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরওয়ার কামাল, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এস.এম আবদুর রহমান, উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম এহছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল (রাউজান), আবুল কাশেম চিশতী (রাঙ্গুনিয়া), ফারুক চৌধুরী (কর্ণফুলী), কাজী মোজাম্মেল হক (আনোয়ারা), মো. জাহেদুল হক (বোয়ালখালী), মো. এনায়েত হোসেন (মিরসরাই), মোহাম্মদ আরিফুল আলম চৌধুরী (সীতাকুন্ড), এসএম আনোয়ার হোসেন (সন্ধীপ), ইউনুস গণি চৌধুরী (হাটহাজারী), মো. নাজিম উদ্দিন মুহুরী (ফটিকছড়ি), জসিম উদ্দিন আহমেদ (চন্দনাইশ), কাজী মোজাম্মেল হক (আনোয়ারা), উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে.এম রফিকুল ইসলাম (সীতাকুÐ), এবিএম মশিউজ্জামান (হাটহাজারী), মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী (ফটিকছড়ি), অংগ্যজাই মারমা (রাউজান), মো. রায়হান মেহেবুব (রাঙ্গুনিয়া), হিমাদ্রী খীসা (বোয়ালখালী), মিল্টন বিশ্বাস (সাতকানিয়া), মো. আলাউদ্দিন ভূঁঞা (পটিয়া), মিল্টন বিশ্বাস (চন্দনাইশ), মু. ইনামুল হাছান (লোহাগাড়া), মাসুমা জান্নাত (কর্ণফুলী), মো. ইশতিয়াক ইমন (আনোয়ারা), জেসমিন আক্তার (বাঁশখালী), পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মোজাহিদুর রহমান, জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, পরিবার পরিকল্পনা জেলার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ চন্দ্র দাস, জেলা পরিসংখ্যান অফিসের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ওয়াহিদুর রহমান, মহিলা বিষয়ক উপ-পরিচালক আতিয়া চৌধুরী, বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক রায়হানা আক্তার উর্থী, বিএসটিআই প্রতিনিধি রাজীব দাশ গুপ্ত, পৌর মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ (রাউজান), বীর মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলম (সীতাকুন্ড), মু. মাহাবুবুল আলম (চন্দনাইশ), মো. গিয়াস উদ্দিন (মিরসরাই), মো. ইসমাইল প্রমুখ। এছাড়া জেলার সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি