সড়ক নয় যেন মরণফাঁদ!

3

রাঙামাটি প্রতিনিধি

বাঘাইছড়ি পৌরসভার মধ্যে রাস্তা-ঘাটের বেহাল দশা। সড়ক নয় যেন এক মরণ ফাঁদ! চৌমুহনী সদর হতে মাস্টার পাড়া পুরাতন মারিশ্যা সড়কের বেহাল দশা। বাঘাইছড়ি পৌরসভার মধ্যে রাস্তা-ঘাটের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। একটু বৃষ্টিপাত হতে না হতেই এসব রাস্তা-ঘাটে যানবাহন চলচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। হাটা চলায় কষ্ট পেতে হয় পৌরবাসীকে। মাস্টার পাড়া ও পুরাতন মারিশ্যা সড়ক দিয়ে যানবাহন যাত্রীরা মরণ কাঁদে নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। যে কোন সময় যানবাহন উল্টে গিয়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, কাচালং নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন করে ট্রাক ও ডাম্পার ট্রাক দিয়ে পরিবহনের সময় সড়কের মারাত্মক ক্ষতি হয় এবং সড়কে গর্ত সৃষ্টিসহ যানবাহন চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে যানবাহন ও মানুষ চলাচলে বিড়ম্বনা দেখা দেয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেকে এ সড়কে যানবাহন চালায়। তার পরেও থেকে নেই অবৈধ বালু উত্তোলন এবং ভারী যান চলচল। পৌরসভার মধ্যে যে সকল ডাম্পার ট্রাক ও ছয় চাকা ট্রাক চলে তা এই রাস্তার জন্য উপযোগী নহে। বালু উত্তোলন সিন্ডিকেটের সাথে সাবেক মেয়র জমির হোসেনও জড়িত আছে। তার ক্ষমতার দাপটে অনেকেই অতিষ্ট। পৌরসভার বেশিরভাগ সড়কের অবস্থাই বর্তমানে অত্যন্ত করুন।
১নং ওয়ার্ডের স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল ওয়াদুদ ও মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সড়কের বেহাল দশার কারণে আমরা খুব কষ্টের মধ্যে আছি। বর্তমানে বড় বড় ভারী ড্রাম ট্রাক চলাচলের ফলে রাস্তার বেশী ক্ষতি হয়েছে কারণ বন্যা পরবর্তী সময়ে রাস্তার অবস্থা এমনিতেই অনেক নাজুক ছিল। এখন এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করাটা অনেকটাই কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে। আমাদের ছেলে-সন্তান স্কুলে পাঠানো যায় না, মাদ্রাসায় পাঠানো যায়না, হঠাৎ কোন সময় তারা দুর্ঘটনার শিকার হয়। এই জন্য জরুরি ভিত্তিতে এই রাস্তার কাজ করা এবং পাশা-পাশি সকল ধরণের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করা উচিৎ বলে আমি মনে করি।
মাস্টার পাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা মো. ইমরান হোসেন বলেন,আমাদের এলাকার এই ছোট রাস্তাা দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু বোঝাই করে যে সকল বড় বড় ডাম্প ট্রাকগুলো চলাচল করছে এ জন্য মূলতঃ ছোট বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে রাস্তার অবস্থা খারাপ হয়েছে। জনজীবন বাধার সম্মুখীন হচ্ছে আমরা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ অসুস্থ, বৃদ্ধ,নারী-পুরুষ প্রত্যকেই এই সমস্যা ও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
স্কুল শিক্ষার্থী খাদিজা বলেন, বালু বহনকারী গাড়ির জন্য আমাদের স্কুলে যেতে অনেক কষ্ট হয়। তারা অনেক দ্রæত গতিতে গাড়ি চালায় এতে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। তাই শুষ্ক মৌসুমে স্কুলে যাওয়ার সময় আমরা ধুলা-বালুর জন্য ঠিক মত শ্বাসও নিতে পারি না। আবার বর্ষা মৌসুমে কাদার জন্য রাস্তা দিয়ে স্কুলে যেতে অনেক কষ্ট হয়। গত বর্ষায় একদিন আমি স্কুলে যাওয়ার পথে একটি বালুর গাড়ি দ্রæত গতিতে আমাকে অতিক্রম করে যায় ফলে রাস্তার কাদাগুলো স্কুল ড্রেসে এসে পড়ে আর ওইদিন স্কুলে যেতে পারিনি।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও বাঘাইছড়ি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম বলেন,সে মাত্র পৌর প্রশাসক হিসেবে নতুন দায়িত্ব নিয়েছে। তাই পৌরসভার সার্বিক বিষয়গুলো তিনি পর্যবেক্ষণ করছে। এসব বিষয়গুলো তিনি তদন্ত সাপেক্ষে ধীরে ধীরে ব্যবস্থা নেবেন। তবে এসব ব্যাপারে আপনাদের সহযোগিতা দরকার হবে। রাস্তা-ঘাটসহ পৌরসভার উন্নয়নে সব দিক বিবেচনা করা হবে।