সকালে অপহরণ বিকেলে মুক্তিপণে ছাড়া পেল ৫ কৃষক

3

চন্দনাইশ প্রতিনিধি

চন্দনাইশের কাঞ্চননগর পাহাড়ি এলাকা থেকে ৫ কৃষককে অপহরণ করেছে সন্ত্রাসীরা। পরে মুক্তিপণ নিয়ে বিকেলেই ছেড়ে দেয়া হয়েছে তাদের। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে চন্দনাইশের কাঞ্চননগর পাহাড়ি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। অপহরণের শিকার কৃষকেরা সেখানে চাষাবাদ ও গরু লালন-পালনের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। ৭ জনের একটি সন্ত্রাসী দল তাদের অপহরণ করে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, হাফ প্যান্ট ও গেঞ্জি পড়া ৭ জনের পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের মধ্যে ৬ জনের হাতে দেশীয় অস্ত্র, ১ জনের হাতে ছুরি ছিল।সন্ত্রাসীরা কাঞ্চননগর এলাকার কৃষক হাঁছি মিয়ার ছেলে নাজিম উদ্দীন (৫০), বদিউল আলমের ছেলে আবদুল মালেক (৬২), কামাল উদ্দীনের ছেলে রাজা মিয়া (৩০), সন্তোষ বিশ^াস (২২), ইদ্রিসের ছেলে মো. হাছান (৩৫) কে মিনজিরি মূখ থেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে যায়। পরে পাহাড়ি এলাকা থেকে অপর একজন কৃষক ছুটে এসে এলাকাবাসীকে বিষয়টি অবহিত করেন।
স্থানীয়রা এ ব্যাপারে সহযোগিতা চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানান। পরবর্তীতে স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় লক্ষাধিক টাকা মুক্তিপণ দিয়ে বিকালে এসব কৃষকেরা ছাড়া পেয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
স্থানীয়রা আরো জানান, গত ২০ মে একইভাবে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা নওশা মিয়া (৪৫), মো. আরিফ (২৬), মো হাছান উদ্দীনসহ (৩৫) ৯ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধির মধ্যস্থতায় ২ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পায়। এভাবে কৃষকদের অপহরণ করে দিন-দুপুরে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা দফায়-দফায় মুক্তিপণ আদায় করার কারণে আতংকে রয়েছে স্থানীয় কৃষকেরা। অথচ এ পাহাড়ি এলাকায় প্রতিদিন শত শত মানুষ লেবু, কাঁঠাল, আনারস, পেয়ারা, লিচু, আম বাগানসহ পাহাড়ের ঢালুতে চাষাবাদ করে জীবন-যাপন করে থাকেন। সে সাথে পাহাড়ের পাদদেশে গরু-ছাগল পালনের জন্য ছেড়ে দিয়ে অবস্থান করা অবস্থায় পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছে।
তবে এলাকাটি চন্দনাইশ সীমানায় না হওয়ায় উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন যথাযথভাবে ভ‚মিকা রাখতে পারছেন না বলে জানা যায়। এ ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান আবদুল শুক্কুর বলেন, মিনজিরি মূখ থেকে বিভিন্ন সময় পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা চন্দনাইশের কৃষকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে যায় এবং মুক্তিপণ আদায় করে থাকে।
চন্দনাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) যুযুৎসু যশ চাকমা বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। তবে এলাকাটি পটিয়া থানায় হওয়ায় আমরা তেমন কোনো পদক্ষেপ নিতে পারিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা বেগম বলেন, আমাকে কয়েকজন অপহৃত লোকের নাম দেয়া হলেও সঠিকভাবে কোনো তথ্য না পাওয়ায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের বরাবরে অবহিত করা সম্ভব হয়নি।