শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

5

ঢাকা প্রতিনিধ

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আবু সায়েদ নামে এক মুদি দোকানদারকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী গতকাল মঙ্গলবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে এ আদেশ দেন। হত্যা মামলাটি রেকর্ড করতে মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক নূরে আলম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে এস এম আমীর হামজা নামে এক ব্যক্তি এই মামলার আবেদন করেন। পরে মামলাটিতে বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদেশের জন্য রাখেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আবেদনে মামলার অপর আসামিরা হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত আইজিপি হারুন-অর-রশীদ ও অতিরিক্ত যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার।
গত ১৯ জুলাই বিকাল ৪টায় মোহাম্মদপুর থানাধীন বসিলা ৪০ ফিট চৌরাস্তা এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে মিছিলে পুলিশের গুলিতে আবু সায়েদ নামে ওই ব্যক্তি নিহত হন।
মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ছাত্র-জনতার ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবি কোটা সংস্কার আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে চলছিল। কোনও উসকানি ছাড়া উক্ত আসামিদের নির্দেশে অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্যরা গুলি করে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক সেতুমন্ত্রী আন্দোলন শক্ত হাতে দমন করার নির্দেশ দেন। অপর আসামিরা ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে তাদের অধীনস্থ পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন। আসামি আসাদুজ্জামান কামাল পুলিশকে ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি করার নির্দেশ দেন।
গত ১৯ জুলাই বিকাল ৪টায় মোহাম্মদপুর থানাধীন বসিলা ৪০ ফিট চৌরাস্তায় হাজার হাজার ছাত্র-জনতা কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে মিছিল করছিল। সেই আন্দোলন দমনের জন্য পুলিশ নির্বিচারে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালায়। সেই সময় মোহাম্মদপুর বসিলা ৪০ ফিট চৌরাস্তায় মুদি দোকানদার আবু সায়েদ (৪৫) রাস্তা পার হয়ে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার সময় পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে সঙ্গে সঙ্গে মারা যান। তার মাথার এক পাশ দিয়ে গুলি ঢুকে অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়।
স্থানীয় লোকজন জানান, আবু সায়েদ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার পর স্থানীয়রা তার লাশ গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার মাড়োয়া বামনহাট ইউনিয়নের নতুন বস্তি প্রধানহাটে পাঠিয়ে দেয় এবং সেখানেই তাকে দাফন করা হয়।
যেহেতু নিহত আবু সায়েদের গ্রামের বাড়ি সুদূর পঞ্চগড়ে এবং তার পরিবার অত্যন্ত গরিব। তারা আইনের আশ্রয় নিতে পারছেন না। এ কারণে সচেতন নাগরিক হিসেবে বাদী এই মামলার আবেদন করলেন।
৭ আসামির কার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ : মামলার এজাহারে বলা আছে, এক নম্বর আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সঙ্গে হুকুমের আসামি হিসেবে ওবায়দুল কাদেরও আছেন।
আন্দোলন চলাকালে শেখ হাসিনা তা শক্ত হাতে দমনের নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। ২ নং আসামি ওবায়দুল কাদের বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে আন্দোলন দমনের নির্দেশ দিয়েছেন। ৩নং আসামি সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল-মামুন, ৪নং আসামি সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ, ৬নং আসামি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান এবং ৭নং আসামি যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে তাদের অধীনস্থ পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দেন বলে মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে। এছাড়া ৫নং আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পুলিশকে ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি করার নির্দেশ দেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে। অন্য অজ্ঞাত পরিচয় পুলিশ কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীর নির্দেশে হত্যাকাÐ ঘটান বলেও উল্লেখ করা হয়েছে মামলায়।
মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ছাত্র-জনতার ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবি কোটা সংস্কার আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে চলছিল। কোনও উসকানি ছাড়া উক্ত আসামিদের নির্দেশে অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্যরা গুলি করে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক সেতুমন্ত্রী আন্দোলন শক্ত হাতে দমন করার নির্দেশ দেন। অপর আসামিরা ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে তাদের অধীনস্থ পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন। আসামি আসাদুজ্জামান কামাল পুলিশকে ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি করার নির্দেশ দেন।