শিমের বিচির উপকারিতা

5

ভাত-রুটির পাশাপাশি শিমের বিচি কিংবা বিন পৃথিবীজুড়ে মানুষের অন্যতম প্রিয় খাবার। এ দেশে শীতে শিম পরিপক্ব হলে শিমের বিচি বাজারে ওঠে। এখন কোথাও কোথাও শিমের বিচি উঠলেও দাম বেশ চড়া। চট্টগ্রামসহ দেশের নানা এলাকার লোকজন শিমের বিচিকে খাইস্যাও বলে। শোল, মাগুর এসব জিওল মাছ ও বেগুন দিয়ে রান্না করা খাইস্যার তরকারি অপূর্ব। এতে রয়েছে প্রচুর আমিষ ও শর্করা। তাই শিমের বিচি শরীরে শক্তি জোগায়, পুষ্টির চাহিদাও মেটায়। আসুন জেনে নিই এর গুণাগুণ সম্পর্কে।
১০০ গ্রাম গরুর মাংসে ২২ দশমিক ৬ গ্রাম এবং মুরগির মাংসে রয়েছে ২৫ দশমিক ৯ গ্রাম আমিষ। অথচ ১০০ গ্রাম শিমের বিচিতে আমিষ আছে ২৪ দশমিক ৯ গ্রাম। অর্থাৎ শিমের বিচিতে আমিষের পরিমাণ গরুর মাংসের চেয়ে বেশি এবং মুরগির মাংসের প্রায় সমান। আমাদের দেশে শিশুসহ বয়স্ক ব্যক্তিদের অনেকেই আমিষের অভাবজনিত রোগ কোয়াশিওরকরে আক্রান্ত হয়। এর রোগে আক্রান্ত শিশুরা বাড়ে না, দেহের ক্ষয়পূরণ হয় না, কর্মক্ষমতা কমে গিয়ে হাত-পা শুকিয়ে যায়, পেট বড় হয়ে যায়। এ ছাড়া স্মরণশক্তি কমে যায় এবং পড়াশোনায় ও খেলায় নিস্পৃহভাব দেখা দেয়। শিমের বিচি দ্রুত এই রোগ থেকে মুক্তি দেয়। সবজিভোজী মানুষজন মাছ-মাংস এড়িয়ে চলেন। অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের শরীরে আমিষের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। শরীর হয়ে পড়তে পারে দুর্বল। ডালের মতোই শিমের বিচিতে প্রচুর উদ্ভিজ্জ আমিষ আছে। ফলে শিমের বিচি শরীরের আমিষের ঘাটতি পূরণে অনেকটাই সহায়ক হবে। শিমের বিচিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে। ফলে হাড়ের ক্ষয়রোধে এটি ভূমিকা রাখে। শিমের বিচিতে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য আঁশ থাকায় এটি হজমে সাহায্য করে। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাও কমিয়ে আনে। সেই সঙ্গে এতে থাকা উপকারী চর্বি ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড প্রদাহ দূর করে। মায়েদের গর্ভকালীন স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়তা করে শিমের বিচি। এ ছাড়া এটি মায়ের বুকের দুধ বাড়ায়। শিমের বিচিতে আট ধরনের ফ্ল্যাভনয়েড থাকায় এটি ক্যানসার কোষের বৃদ্ধিকে বাধা দেয়। একই কারণে এই খাবার হৃৎপিন্ডের সুরক্ষাও দেয়।