শিক্ষাবিদ মওলানা মুহাম্মদ ফৌজুল কবীর

20

সাঈদুল আরেফীন

ইসলামী শিক্ষার ভাবধারায় উচ্চমান সম্পন্ন ফলাফল করেও তিনি ক্ষান্ত হননি। শিক্ষার প্রসারে নিজেকে যেমন ঋদ্ধ করেছেন শিক্ষার্থীদের মাঝেও ছড়িয়ে দিয়ে গেছেন অন্য রকম আলোর পরশ। জীবনের সমস্ত উজ্জ্বল সময়টুকু শিক্ষা নিয়েই ব্যাপৃত ছিলেন তিনি । যেজন্য মাদ্রাসা শিক্ষার পর্যাপ্ত রস আস্বাদন করার পরেও তিনি শিক্ষার উঁচু সব স্তরকে ছুঁয়েছেন অবলীলায়। ছাত্র জীবনে যেমন মেধাবী ছিলেন তেমনি ইসলামী শিক্ষা ও ইংরেজি মাধ্যম দুক্ষেত্রে তিনি মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের জন্য আজীবন তিনি ছিলেন মহীরুহের মতো। এখনো তাঁর শিক্ষার্থীরা তাঁকে শ্রদ্ধার চোখে স্মরণ করেন গভীর মমতায়। শিক্ষাকে ভালোবেসে নিরবে নিভৃতে প্রাসাদসম সুযোগগুলোকে সহজেই মাড়িয়ে সততার সাথে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত অতিবাহিত করেছেন। এমন পিতার সন্তান হওয়া বড়ো গৌরবের। তুলে ধরছি একজন বরেণ্য শিক্ষাবিদের জীবনী।
মওলানা মুহাম্মদ ফৌজুল কবীর। চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার জলদী গ্রামের নেয়াজর পাড়ায় বিখ্যাত আলেম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন বাঁশখালী উপজেলার বিখ্যাত আলেমে দ্বীন হযরত হাফেজ মওলানা আলহাজ্ব আবুল হাসান (র.) এর প্রথম পুত্র। তাঁর মায়ের নাম হাজেরা খাতুন। তাঁর অপর দুই ভাই হলেন অধ্যক্ষ মওলানা মোহাম্মদ ও অধ্যক্ষ হাফেজ মওলানা মোস্তাফিজুর রহমান। তিরিশের দশকের শুরুতে মওলানা ফৌজুল কবীর স্থানীয় মক্তবে তাঁর শিক্ষার হাতেখড়ি নেন। এরপর তিনি জলদীস্থ বাইঙ্গা পাড়া মখজানুল উলুম মাদ্রাসায় এয়াজদোহমে ভর্তি প্রাথমিক শিক্ষা সমাপণ করেন। উক্ত মাদ্রাসায় দাখিল স্তর শেষে তিনি তাঁর পিতার সাথে ঢাকা জিলার ( তৎকালীন নরসিংদী থানার ) কুমরাজি দারুল উলুম মাদ্রাসায় সেই সময়ে হাফতম শ্রেনিতে ভর্তি হোন। তথায় পঞ্জুম পর্যন্ত শিক্ষা লাভ করেন। এরপর তিনি পুনরায় বাঁশখালিস্থ পুঁইছড়ি মাদ্রাসায় ১৯৪৫ সনে আলিম শ্রেণিতে ভর্তি হোন। তথায় আলিম ফাইনাল ইয়ারে কলকাতা বোর্ডের অধীনে ১৯৪৭সনে দেশবিভাগের প্রাক্কালে কৃতিত্বের সাথে প্রথম বিভাগে মেধা তালিকায় ১২ তম স্থান অধিকার করে উত্তীর্ন হোন। সেই সময়ে ১০টাকা হারে সরকারিভাবে মাসিক বৃত্তি লাভ করেন। ১৯৪৮ সনে ঐ মাদ্রাসায় তিনি ফাজিল প্রথম বর্ষে ভর্তি হোন। কৃতিত্বের সাথে ফাজিল প্রথম বর্ষ সমাপণ করে তিনি চট্টগ্রাম নগরের তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম আলিয়া মাদ্রাসায় ফাজিল দ্বিতীয় বর্ষে ভর্তি হোন। এরপর তিনি ১৯৪৯ সালে ফাজিল পরীক্ষায় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে ফাজিল ফাইনাল পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হোন। সারা পূর্ব পাকিস্তানে ২৫ তম স্থান দখল করেন। এতে তিনি ২৫ টাকা হারে সরকারি বৃত্তি প্রাপ্ত হোন। এর পরের বছর ১৯৫০ সালে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসায় কামিল প্রথম বর্ষে ভর্তি হোন। এক বছর পড়াশুনা শেষে পুনরায় চট্টগ্রাম দারুল উলুম মাদ্রাসায় কামিল দ্বিতীয় বর্ষে ভর্তি হোন। এর পর তিনি ১৯৫১ সনে কামিল (টাইটেল) ফাইনাল পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে নবম স্থান দখল করে কৃতিত্বের সাথে মাদ্রাসা শিক্ষা সমাপ্ত করেন। সেই সময় তিনি কামিল উত্তীর্ণের পর জেলা প্রশাসকের সরব উপস্থিতিতে ছহীহ বোখারী শরীফ পাঠ করার সাফল্যে মুগ্ধ হয়ে জেলা প্রশাসক তাঁকে দারুল উলুম মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দান করেন।দারুল উলুম মাদ্রাসায় কিছুদিন শিক্ষকতা ও করেন। সেই সময় কিছুদিনের জন্য পটিয়া রাহাত আলী মডেল হাইস্কুলে ধর্মীয় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। সাফল্যের সাথে তিনি ২ বছর উক্ত স্কুলে শিক্ষকতা করেন।
জনাব ফৌজুল কবীর নিজ গ্রামের বাড়ি বাঁশখালী থানায় ১৯৫২ সন থেকে তাঁরই পিতার অনুপ্রেরণায় জলদী হোসাইনীয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এই মাদাসাটির গোড়াপত্তনে তদীয় পিতা বাঁশখালীর প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন হযরত মওলানা আবুল হাসান(রঃ) নির্দেশে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। মৃত্যুর বছর খানেক আগে পর্যন্ত তিনি দীর্ঘ সময়কাল ধরে মাদ্রাসাটির পর্যায়ক্রমে সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে।
বর্তমানে মাদ্রাসাটি চট্টগ্রাম জেলার ঐতিহ্যবাহি স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান হিসেবে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছে। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সার্ভে স্কুলের একটি শাখা ও তিনি উক্ত মাদ্রাসায় খুলেন। এখান থেকে অনেকে প্রশিক্ষিত আমীন ও সার্ভেয়ার বেরিয়ে আসে। এ মাদ্রাসায় তিনি ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত সুপারিন্টেন্ডেট ও অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব লাভ করেন। পারিবারিক মাদ্রাসার দায়িত্ব শেষে তিনি চট্টগ্রাম নগরীর ছোবহানিয়া আলিয়া মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দান করেন। তিনি এ মাদ্রাসায় ১৯৬৮ থেকে ১৯৭০ সাল দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। ছোবহানিয়া মাদ্রাসায় প্রশাসনিক কাজের উন্নয়নে অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করেন। এরপর তিনি হাটহাজারী উপজেলা সদরের মূল কেন্দ্রে জামেয়া অদুদিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দিয়ে প্রশাসনিক ও শিক্ষা প্রসারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি যোগদানের পর পরই এ মাদ্রাসাটি মঞ্জুরী আনার ক্ষেত্রে ভ‚মিকা রাখেন। ১৯৭০ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত তিনি এখানে অবস্থান করেন। সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি বিভিন্ন সময় সাতকানিয়ার উপজেলার গারাঙ্গিয়া আলিয়া মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম নগরীর সলিমা সিরাজ মহিলা মাদ্রাসা ও আল আমিন বারিয়া মাদ্রাসায় রেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি ১৯৭৫ সাল থেকে আখাউড়া রেলয়ে সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, পাহাড়তলি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, সল্টগোলা রেলওয়ে সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক পদে কৃতিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। ইতোপূর্বে তিনি ১৯৬০ ও ১৯৬১ সনের দিকে ইশ্বরদি নাজিমুদ্দিন হাইস্কুল,ময়মনসিংহ কেয়টখালি রেলওয়ে হাইস্কুলে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা পেশার সাথে জড়িত ছিলেন। মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে শিক্ষকতা পেশায় সুনামের সাথে আরবি, ইসলাম ধর্মশিক্ষা ও ইংরেজি বিষয়ে যথেষ্ট সুনামের সাথে শিক্ষাদান করায় ছাত্র ছাত্রীদের কাছে সবসময় সমাদৃত হয়েছেন।
লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি সামাজিক রাজনৈতিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের চট্টগাম শাখার সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি এ সময়টাতে লেখালেখির সাথে ও নিজেকে জড়ান। কামিল পাশের পর তৎকালীন ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজে উচ্চ মাধমিক শ্রেণিতে পড়াশুনা করেন। পেশাগত কাজের মধ্যে থেকেও স্বাধীনতাত্তোর কালে তিনি চট্টগ্রাম কলেজ থেকে চট্টগ্রাম থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বি,এ পাশ করেন। ১৯৭৩-১৯৭৫ শিক্ষাবর্ষে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণী প্রাপ্ত হয়ে আরবিতে মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি পুনরায় শিক্ষার অন্বেষায় বিভোর হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৭-১৯৮০ সনে ইসলামি শিক্ষা বিষয়ে দ্বিতীয় শ্রেণি প্রাপ্ত হয়ে ডাবল মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপরও তিনি ক্ষান্ত থাকেননি চাকুরী ও বিভিন্ন কর্মব্যস্ততার মাঝে এইসব ডিগ্রি অর্জন করতে থাকেন। শিক্ষকতা জীবনের এক ফাঁকে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কৃতিত্বেও সাথে বিএড কোর্স ও সম্পন্ন করেন।
ব্যক্তি জীবনে অত্যন্ত সদালাপি খোজমেজাজি জনাব আলহাজ্ব মুহাম্মদ ফৌজুল কবীর বাংলা, আরবি, ফারসী, উর্দু ও ইংরেজি ভাষার অগাধ পান্ডিত্যের অধিকারি ব্যক্তিত্ব হিসেবে তিনি তৎকালীন আলেম ও শিক্ষিত সমাজের কাছে যথেষ্ট সমাদৃত ছিলেন। সবগুলো ভাষাতে লিখতে ও বলাতে যথেষ্ট পারদর্শী ছিলেন তিনি। শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষাাতে যথেষ্ট দক্ষতা যোগ্যাতার সাথে তিনি শিক্ষা দান করতেন। কেবল শিক্ষাবিস্তারই নয় হাদীস কোরান নিয়ে নিয়মিত গবেষণারত ও যথেষ্ট ছহীহ চিন্তাধারার মানুষ হিসেবে ব্যক্তি জীবনে কোনদিন কারো সাথে আপোষ করেননি। অসীম তেজি,জ্ঞানী ও সৎ সাহসের অধিকারি জনাব ফৌজুল কবীর জীবনের শেষ প্রান্তে এসে ও যথেষ্ট আত্মপ্রত্যয়ী হিসেবে শক্ত মনোবল নিয়ে চলাফেরা করতেন। ব্যক্তি জীবনে জ্ঞানের আলোকবর্তিকা ছড়িয়ে দিয়ে দেশে বিদেশে প্রচুর ছাত্র ছাত্রী ও অসংখ্য গুনগ্রাহী ভক্ত অনুরাগী সৃষ্টি করেছেন। শিশুসুলভ মানসিকতায় আচ্ছন্ন থেকে আজীবন মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। বাহ্যিক লোভ লালসা চাহিদা তাঁকে কোনদিন আচ্ছন্ন করতে পারেনি। বরাবরই তিনি শাদামাঠা জীবনে অভ্যস্ত ছিলেন। তবে পোশাক আশাকে সবসময় পরিচ্ছন্ন পরিশীলিতা ও মার্জিত রুচির সাথে নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপনায় কখনো কার্পণ্য করেননি। স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে তিনি দৈনিক আজাদী, দৈনিক আজান, দৈনিক নয়াবাংলাসহ একসময় তিনি তদীয় ছাত্র একসময়কার দৈনিক দেশের কথা সম্পাদক মোসলেম খানের অনুরোধে নিয়মিত ইসলামের ইতিহাস, সংস্কৃতি, শিক্ষা, দেশগঠন সামাজিক উন্নয়ন মূলক বিভিন্ন নিবন্ধ প্রবন্ধ কলাম লিখতেন।
তাঁর বিশ্লেষণধর্মী কলামগুলো সে সময় বেশ পাঠকপ্রিয়তা লাভ করে। প্রকৃত ইসলামী দর্শন, উদারনৈতিক ভাবাদর্শ, দেশ মাতৃকার প্রতি অসম্ভব দরদ, ন্যায়পরায়ণতা, নীতি ও অবিচল আদর্শের কারণে ব্যক্তিজীবনে খুবই আপোষহীন মনোভাবে মৃত্যুর শেষ দিন পর্যন্ত অটুট ছিলেন। একজন জনপ্রিয় শিক্ষক হিসেবে সারাদেশে তাঁর অসংখ্য শিক্ষার্থীর কাছে তিনি নিজেকে মর্যাদার আসনে আসীন করে রেখেছিলেন। যার ফলে দেশে বিদেশে তিনি একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে সমাদৃত হয়ে রয়েছেন বরাবররই। ব্যক্তিজীবনে ইসলামিক পরিমÐলে ব্যাপৃত থাকলেও তিনি ছিলেন বিজ্ঞান মনস্ক, মুক্তবুদ্ধি চর্চাও প্রগতিশীল চিন্তা সম্পন্ন একজন ব্যক্তিত্ব। ছাত্র অবস্থা থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে থাকাকালীন বাংলাদেশের বিখ্যাত মানুষদের সাহচর্যে এসেছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিুবুর রহমান, অধ্যাপক আবুল ফজল, ড. আহমদ শরীফ, আজাদী সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ, অধ্যাপক আসহাব উদ্দিন আহমদ, ড. সালেহ আহমদ নয়াবাংলা সম্পাদক আবদুল্লাহ আল সগীর, বিএ আজাদ ইসলামাবাদী, ইসলাম মিয়া টিকে, গণিতশাস্ত্রের পÐিত ড. সালেহ আহমেদসহ বহু আলেম ওলামা ও জ্ঞানী গুণীদের সান্নিধ্য লাভ করেন। তাঁর আপোষহীন নীতি ও আদর্শেও কারণে বহুমাত্রিক জ্ঞানী গুণী ব্যক্তি, রাজনীতিক, সমাজসেবী তাঁকে সারাজীবন শ্রদ্ধার চোখে দেখতেন।
জনাব ফৌজুল কবীর কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড ও মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে নানাসময়ে ইংরেজী আরবী ও ইসলামি শিক্ষার প্রধান পরীক্ষক হিসেবে ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দুবার হজ্জব্রত পালন করেন। প্রথমবার মেয়র হজ্ঝ কাফেলার সাথে ১৯৯৬ সালে দ্বিতীয়বার ২০০৫সালে তিনি হজ্জব্রত পালন করেন। হজ্জব্রত পালনকালে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত কয়েকজন শিক্ষক ফারশি ভাষায় অসাধ পাÐিত্যে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে প্রচুর বই পুস্তক উপহার হিসেবে প্রদান করেন। এছাড়া তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রন জানান। এছাড়া তিনি ১৯৫১ সনে কামিল পরীক্ষার সমাপনান্তে আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের জন্য সরকারি অনুমতি পেয়েও নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক কাজে ব্যস্ত থাকার কারনে তাঁর সেই স্বপ্ন সফল হতে পারেনি। ব্যক্তিজীবনে তিনি স্ত্রী ,দুই পুত্র ও দই কন্যা সন্তানের জনক। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ আলহাজ্ব মওলানা মুহাম্মদ ফৌজুল কবীর গত ৩০ মার্চ,২০২৪। ১৯ রমজান দিবাগত রাত ১২.১৫ টায় বলুয়ারদীঘির পূর্বপাড়স্থ শহরের বাসভবনে ইন্তেকাল করেন। সেদিনই বাঁশখালী উপজেলাস্থ তদীয় পিতার প্রতিষ্ঠিত জলদী হোসাইনীয় কামিল(ডিগ্রী) মাদ্রাসায় নামাজে জানাজা শেষে নেয়াজর পাড়াস্থ মসজিদ কবরস্থানে দাফন করা হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো আনুমানিক ৯৭ বছর। মহান আল্লাহর দরবাওে তাঁর আত্মার পরম শান্তি কামনা করছি।
লেখক : কবি, প্রাবন্ধিক, শিশুসাহিত্যিক, মরহুমের সন্তান