শান্তিশৃঙ্খলা ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দানের আহবান

5

হাটহাজারী প্রতিনিধি

দেশের কওমিপন্থী মাদ্রাসাভিত্তিক ও রাজনৈতিক সংগঠন দাবিদার হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সম্পদ, শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দানের আহবান জানিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানী ঢাকার জামিয়া মাদানিয়া বারিধারায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর নির্বাহী কমিটি ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপটে করণীয় নির্ধারণ শীর্ষক’ জরুরি এক বৈঠকে এ আহবান জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতের সিনিয়র নায়েবে আমীর ও আল-জামিয়াতুল আহ্লিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম-হাটহাজারী প্রকাশ হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা মুফতি খলীল আহমদ কুরাইশী কাসেমী।
সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদীর সঞ্চালনায় সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশের সাহসী ছাত্র জনতাকে বিরোচিত অভিনন্দন জানিয়ে আল্লামা খলিল আহমাদ কাসেমী বলেন, হাজারও প্রাণের বিনিময়ে এবং এক ঐতিহাসিক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে এই জালেম সরকারের পতন ঘটেছে। এই জালেমের বিদায়ের মাধ্যমে এ জাতির লুণ্ঠিত মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়েছে। আওয়ামী স্বৈরশাসকের পতনের এই আনন্দঘন সময়ে ছাত্র জনতার আন্দোলনের বিজয় মুহূর্তটি সকলে শান্তভাবে উদ্যাপন করুন। অনুগ্রহ করে কারো প্রতি কেউ প্রতিরোধ, প্রতিশোধ কিংবা প্রতিহিংসা পরায়ণ হবেন না। কেউ নিজের হাতে আইন কোনোভাবেই তুলে নিবেন না। যাতে একটু ভুলের কারনে আমাদের অর্জিত এই গৌরবজনক বিজয় লক্ষ্যচ্যুত না হয়ে যায়! এই ব্যাপারে সচেতনতার সাথে সজাগ ও সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য আমরা দেশ ও জাতির প্রতি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।
বৈঠকে মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান বলেন, আজ আমরা এক নিষ্ঠুর ফ্যাসিবাদী সরকার থেকে মুক্তি পেয়েছি। এই সরকারের শাসনকালে কত মাতা-পিতা তাদের প্রিয় সন্তানকে হারিয়ে বুক চাঁপা আর্তনাদে হাহাকার করেছেন, কত সন্তান তার বাবা-মাকে হারিয়ে এতিম হয়ে অসহায়ের জীবন যাপন করছেন, কত মা-বোন তাদের পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম প্রিয় স্বামীকে হারিয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়েছেন, তার কোনো হিসাব নেই। এই খুনি সরকার গত ১৫ বছরে এদেশে ভয়াবহরকম অসংখ্য গণহত্যা চালিয়েছে।
মহাসচিব বলেন, এই বিজয় উদ্যাপনে ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তি কিংবা রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি করবেন না। দেশের সংখ্যালঘু ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। আমরা হিন্দুদের মন্দির, তাদের বাড়ি ঘর পাহারা দেওয়ার জন্য আলেম-ওলামা, মাদ্রাসার ছাত্রসহ হেফাজত এবং দেশের সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ করছি। রাষ্ট্রের এহেন পরিস্থিতিতে যে কোনো অপ্রীতিকর ও অনাকাঙ্খিত বিপর্যয় এড়াতে পাড়া মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। কারো উস্কানির ফাঁদে পা দিয়ে রাষ্ট্রীয় কোনো বাহিনীর সাথে কোনো প্রকার সংঘাতে জড়ানো যাবে না।
বৈঠকের উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আব্দুল হামীদ, মাওলানা সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মুফতী জসিম উদ্দীন হাটহাজারী, মাওলানা আব্দুল আওয়াল, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, মাওলানা আইয়ুব বাবুনগরী, মাওলানা মামুনুল হক, মুফতী মুনির হুসাইন কাসেমী, মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা মীর ইদরিস, মাওলানা মুসা বিন ইজহার, মাওলানা ফজলুল করীম, মুফতী হাবিবুল্লাহ মাহমুদ কাসেমী, মুফতী সাখাওয়াত হুসাইন রাজী, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, মুফতী বশিরুল্লাহ, মুফতী জাকির হুসাইন কাসেমী, মুফতী কিফায়াতুল্লাহ আজহারী, মাওলানা সানাউল্লাহ মাহমুদী, মাওলানা নাছির উদ্দীন মুনির, মাওলানা মাহবুবুল্লাহ, মুফতী জাবের কাসেমী, মুফতী কামাল উদ্দীন, মাওলানা আফসার মাহমুদ, মুফতী মাহমুদুল হাসান গুনভী, মাওলানা আলী আকবার কাসেমী, মাওলানা কামরুল ইসলাম, মাওলানা এহসানুল হক, মাওলানা শরিফুল্লাহ ও মুফতী আমিনুল ইসলাম কাসেমী প্রমুখ।