ধরা যাক, জলবায়ু পরিবর্তন রোখার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যে লক্ষ্যগুলো স্থির করা হয়েছে, তার সব কটি অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হলো। এও কল্পনা করা যাক যে বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য দায়ী যে নির্গমন, সেগুলোও রাতারাতি নিয়ন্ত্রণ করা গেল। কিন্তু এর পরও সমুদ্রের পানিস্তর বৃদ্ধি রোখা যাবে না বলে দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্তত তেমনই মনে করছেন ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটির এক দল গবেষক। স¤প্রতি এসংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেসে।
২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে পরিবেশদূষণ নিয়ন্ত্রণ ও জলবায়ুপরিবর্তন রোখার জন্য যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল, অংশগ্রহণকারী সব কটি দেশের সরকার যদি ২০৩০ সালের মধ্যে সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে, বিশ্ব উষ্ণায়ন ঘটায় এমন গ্যাসের নির্গমন তখন থেকে রাতারাতি বন্ধ করে দেয়, তাহলেও প্রথম ১৫ বছর পরিবেশদূষণকারী নির্গমন কমানো যাবে না। তার পরিমাণ এতটাই হবে যে তার জেরে ২৩০০ সালের মধ্যে সমুদ্রের পানিস্তর প্রায় ২০ সেন্টিমিটার বেড়ে যাবে। পরিসংখ্যানটি যে মোটেও সুবিধার নয়, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এর ওপর গবেষকরা এই কম্পিউটার মডেলে ধরে নিয়েছেন যে ২০৩০ সালের মধ্যে সব দেশের সরকার তাদের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়ে ফেলবে। কিন্তু বাস্তব হলো, খুবই কমসংখ্যক দেশ প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে নির্ধারিত লক্ষ্য মেনে কাজ করছে। পরিস্থিতি এ রকমই থাকলে সমুদ্রের পানিস্তর বৃদ্ধি ঠিক কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, সেটি আন্দাজ করলেই শিউরে উঠছে অনেকে।
ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটির ওই গবেষকদলের এক সদস্য পিটার ক্লার্ক বললেন, ‘ভবিষ্যতে বেশ অনেকটা সময় সমুদ্রের পানিস্তর বৃদ্ধি বড়সড় সমস্যা হিসেবে আমাদের ভোগাবে।’ প্রধান গবেষক আলেকজান্ডার নয়েলসের কথায়, ‘বিশ শতকজুড়ে আমরা যে বৃদ্ধি দেখেছি, এটি তার সমান হবে।’ সূত্র : ইন্টারনেট