রেল স্টেশনে আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে মনা খুন

14

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরীর পুরাতন রেল স্টেশন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দের জেরে রিয়াজউদ্দিন বাজারের পাখি গলিতে মো. সাহেদ হোসেন মনা (২৮) কে প্রতিপক্ষ পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাতে খুন করেছে। হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মামলার প্রধান আসামিসহ চারজনকে গ্রেপ্তারের পর মনা খুনের কারণ সম্পর্কে পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে।
মনা হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দ্বিতীয় দফায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. জুয়েল (৩৪), মো. বশির (২৬), মো. সাগর (২৮) ও মো. জুয়েল ওরফে ছোট জুয়েল (২৫)। এর আগে খুনের ঘটনার পরদিন গত ৯ জুলাই ফরহাদ ও সজীব নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারদের মধ্যে মো. জুয়েল গ্যাং লিডার। জুয়েলের গ্যাংয়ে অন্তত ৫০ জন রয়েছে। যারা রিয়াজউদ্দিন বাজার, নিউমার্কেট ও রেলস্টেশন এলাকায় নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে থাকেন। তারা পথচারীদের কাছ থেকে চুরি-ছিনতাই, রিয়াজউদ্দিন বাজারের দোকানে চাঁদাবাজিতে জড়িত। আবার খুন হওয়া সাহেদ হোসেন মনাও পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ছিলেন। রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় মনার নেতৃত্বাধীন গ্রুপও অন্ধকার জগতে বিচরণ করতেন। ২০২৩ সালের ৯ জুলাই দিনদুপুরে রিয়াজউদ্দিন বাজারের রয়েল টাওয়ারের সামনে প্রায় ১০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত ছিলেন তিনি। এরপর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলে মনার সাম্রাজ্যে হানা দেয় জুয়েল। জেল থেকে বের হওয়ার পর মনা ও জুয়েলের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।
হবিগঞ্জ থেকে চার আসামিকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল শুক্রবার নগর পুলিশের দক্ষিণ অঞ্চলের উপ-কমিশনারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে উপ-কমিশনার (ডিসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনার আগে জুয়েলের পরিচিত কালুর দোকান ভাঙচুর করেন মনা।এটি নিয়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এর জের ধরে ৭ জুলাই রাত ন’টায় সাহেদ হোসেন মনা রিয়াজউদ্দিন বাজারের নুপুর মার্কেট পাখি গলিতে এলে জুয়েলের নেতৃত্বে কয়েকজন তার ওপর হামলা করে। তারা মনাকে এলোপাথাড়ি মারধর ও ছুরিকাঘাত করে মেরে ফেলেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মনার বাবা শাহ আলম বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছিল। তবে মূলহোতারা ঘটনার পরপরই ভারতে পালানোর জন্য হবিগঞ্জে চলে যায়। সেখান থেকে কোতোয়ালি থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। মূলত রেলস্টেশন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রæপের দ্ব›েদ্বর জেরে খুন হয়েছেন মনা।
উল্লেখ্য, গত ৭ জুলাই রাতে নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারের পাখি গলি এলাকায় হত্যা করা হয় সাহেদ হোসেন মনাকে। হত্যাকান্ডের তার বাবা শাহ আলম বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এই মামলার প্রধান আসামি করা হয় জুয়েল বাহিনীর প্রধান জুয়েলকে। এছাড়া অন্য আসামিরা হলেন রহিম (২৬), জুয়েল প্রকাশ মুরগি জুয়েল (৩২), মো. সজীব (২৪), শেখ ফরহাদ (২২), মো. শুক্কুর (৩৫), হানিফ প্রকাশ মাছ হানিফ (৩৫), সবুজ (৩২), সাগর (২৮), বশির প্রকাশ টিউমার বশির (৩০), ইকবাল (৩১) ও শাকিল (২০)। অপরাপর আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।