রাজস্ব আদায়ে রেকর্ড চট্টগ্রাম কাস্টমসের

13

ফারুক আবদুল্লাহ

দেশের সর্ববৃহৎ শুল্ক স্টেশন চট্টগ্রাম কাস্টমসে গত অর্থবছরের তুলনায় সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে রাজস্ব আদায় বেড়েছে নয় দশমিক ৪২ শতাংশ। তবে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল তা অর্জন হয়নি। সদ্য বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭৭ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা, তবে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬৮ হাজার ৫৬২ কোটি ৭২ লাখ টাকা। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৬২ হাজার ৬৫৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
এছাড়া শুধুমাত্র আমদানিকৃত ১২ ধরনের পণ্য থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে হাইস্পিড ডিজেল, ফার্নেস অয়েল, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস, আপেল, সিমেন্ট ক্লিংকার, পাম অয়েল, ভাঙা পাথর ও পেট্রোলিয়াম তেল উল্লেখযোগ্য। এসব পণ্য থেকে ১৯ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।
কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, কাস্টমসে নানা ধরনের অনিয়ম প্রতিরোধে নজরদারি বাড়ানোর ফলে ডলার সংকটসহ নানা সমস্যা থাকা স্বত্তে¡ও গত অর্থবছরের তুলনায় নয় দশমিক ৪২ শতাংশ রাজস্ব আদায় বেড়েছে। একইসঙ্গে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য নিয়ে আসার অপরাধে দ্বিগুণের বেশি জরিমানা আদায় রাজস্ব বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বড় ধরনের ভ‚মিকা রেখেছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার মোহাম্মদ ফায়জুর রহমান বলেন, ডলার সংকটসহ নানা সমস্যার পরেও নানাবিধ উদ্যোগ নেয়ায় রাজস্ব আদায়ে রেকর্ড হয়েছে। এটি গত অর্থবছরের তুলনায় সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে রাজস্ব আদায় বেড়েছে নয় দশমিক ৪২ শতাংশ।
এদিকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর আমদানি-রপ্তানি ও খালি কন্টেইনার মিলে ৩১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৯০ টিইইউএস কন্টেইনার পরিবহন করেছে, যা আগের অর্থবছরে পরিবহন করেছিল ৩০ লাখ ৭ হাজার। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে কন্টেইনার পরিবহনে বন্দরের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
একইভাবে বিদায়ী অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর কার্গো পরিবহন করেছে ১২ কোটি ৩২ লাখ ৪২ হাজার ৭৪৮ টন। যা আগের বছরে ছিল ১১ কোটি ৮৩ লাখ টন ছিল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই বন্দরের বাল্ক কার্গো পরিবহনে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ১৮ শতাংশ।
তবে ২০২২-২৩ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দরে ৪ হাজার ২৫৩টি জাহাজ আসলেও বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জাহাজ এসেছে ৩ হাজার ৯৭১টি। গতবছরের তুলনায় বিদায়ী অর্থবছরে ছয় দশমিক ৬৩ শতাংশ জাহাজ কম এসেছে।
বন্দরের সচিব ওমর ফারুক জানান, গত অর্থবছরের তুলনায় সমাপ্ত অর্থবছরে কন্টেইনার ও বাল্ক কার্গো পরিবহনে চট্টগ্রাম বন্দরের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এটি বন্দরের কন্টেইনার ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নতুন নতুন যন্ত্রপাতি সংযোজন করার মধ্যে দিয়ে সম্ভব হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বন্দরের আরও সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করে চলছে।
তিনি আরও বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলার সংকট এবং মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা সহ নানা সমস্যার কারণে সারাবিশ্বের অর্থনীতির মতো দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এসব সংকটের পরেও বিদায়ী অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দরে কার্গো ও কন্টেইনার পরিবহনের যেই প্রবৃদ্ধি হয়েছে তাতে বোঝা যায় দেশের বৈদেশিক বাণিজ্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।