রাজশাহীর সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

3

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শুক্রবার রাত ১০টা পর্যন্ত রেলপথ অবরোধ করে রেখেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) সহ একাত্মতা পোষণকারী অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন বাজার সংলগ্ন রাজশাহী-ঢাকা রেলপথ অবরোধ করে এই ঘোষণা দেওয়ার পর রেলপথেই অবস্থান করছেন তারা। এতে রাজশাহীর সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে কয়েকটি ট্রেনের। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
জানতে চাইলে রাজশাহী রেলওয়ের স্টেশন ম্যানেজার আব্দুল করিম বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলে আমাদের বিকালের সব ট্রেন বন্ধ হয়ে আছে। আপাতত রাজশাহী স্টেশনে তিনটি ট্রেন দাঁড়িয়ে আছে। যার মধ্যে ঢালারচর এক্সপ্রেস, টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ও একটি কমিউটার ট্রেন রয়েছে। এ ছাড়া রাজশাহী অভিমুখী বাংলাবান্ধা ট্রেন আসতে পারছে না। রাত ১০টা পর্যন্ত আন্দোলন চললে বনলতা, সিল্কসিটি, বাংলাবান্ধা, সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেন রাজশাহীতে নির্দিষ্ট সময়ে আসতে পারবে না। এদিকে একদফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা শুক্রবার বিকেল ৪টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে একত্রিত হন শিক্ষার্থীরা। এরপর বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে স্টেশন বাজার সংলগ্ন রেলপথ অবরোধ করেন তারা। কর্মসূচিতে, ‘আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘১৮ এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আবার’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, বিভিন্ন
স্লোগানের পাশাপাশি কোটাবিরোধী বিভিন্ন গানের প্যারোডি এবং কবিতা আবৃত্তিও করছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের দাবি- সরকারি চাকরির সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ন্যূনতম পর্যায়ে সর্বোচ্চ পাঁচ শতাংশ করে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে।
কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের পক্ষে তোফায়েল আহমেদ বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, কোটা সংস্কারের আন্দোলন করতে গিয়ে সর্বপ্রথম আমাদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভাই আহত হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই। এ ছাড়া সব প্রকার সরকারি চাকরিতে আমরা কোটার যৌক্তিক সমাধান চাই। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ তথা মুক্তিযোদ্ধা ২ শতাংশ, উপজাতি ২ শতাংশ ও ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা রাখা যেতে পারে। আমরা ২০১৮ সালের পরিপত্রের মতো আর রিট রিট খেলা দেখতে চাই না। আমরা সরাসরি সংসদে আইন পাশের মাধ্যমে এর সমাধান চাই।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্ট্যাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সালাউদ্দিন বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন করার কারণে রাবিতে এক শিক্ষার্থীকে মেরে হল থেকে বের করে দিয়েছে ছাত্রলীগ। তাকে সসম্মানে হলে তুলে দিতে হবে এবং এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার করতে হবে।
রেলপথ অবরোধ কর্মসূচিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ, রাজশাহী কলেজের প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।