রাঙ্গুনিয়ায় গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে সাফল্য

4

মাসুদ নাসির, রাঙ্গুনিয়া

প্রথমবারের মতো রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করে সফল হয়েছেন উদ্যোক্তা মো. সাইফুল ইসলাম। উপজেলার উত্তর পোমরা গ্রামের হাজারিখীলে প্রায় আট শতক কৃষি জমিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করেছেন তিনি। অসময়ে তরমুজের চাষ নিয়ে দ্বিধায় থাকলেও বিফল হননি সাইফুল। তার এমন সফলতায় এখন স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন আশেপাশের কৃষকেরাও।
গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষের জন্য রাঙ্গুনিয়া উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমার শীল সার্বিক পরামর্শ দেন। তিনি তরমুজের বীজের ব্যবস্থাও করে দেন। পরামর্শ দিয়েই তিনি দায় সাড়েননি, নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও পরিচর্যার পদ্ধতি সম্পর্কেও নিয়মিতভাবে কৃষি উদ্যোক্তা সাইফুলকে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এই বিষয়ে সাইফুল পূর্বদেশকে জানান, এ পর্যন্ত আট শতক জমিতে নিজের পারিশ্রমিক ব্যতিত ১৫ হাজার টাকার মত খরচ হয়েছে। সব ঠিকঠাক থাকলে আট শতক জমি থেকে দেড় লক্ষ টাকা আয় করার সম্ভাবনা আছে। আমার দেখাদেখিতে এলাকায় অনেক যুবক তুরমুজ চাষ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। এখন হাজারীখীল এলাকায় আমার অসময়ের তরমুজের ক্ষেত দেখার জন্য অনেকে ভীড় করছেন। কয়েকদিন পর ক্ষেত থেকে পরিপূর্ণ তরমুজ বাজারে নেবো বিক্রির জন্য।সাইফুল জানান, আমি নিজেও খেয়ে দেখেছি আমার ক্ষেতের তরমুজ। খুবই স্বাদ ও মিষ্টি। দেখতে অনেক সুন্দর। স্বল্প পূঁজিতে তরমুজ চাষ করে বেকার শিক্ষিত যুবকেরা স্বাবলম্বী হতে পারেন। আমার তরমুজ চাষের ফলাফল বলতে পারেন বাম্পার ফলন হয়েছে। অনেকে বলেছে- এ সমযে তরমুজ বিদেশে রপ্তানী করা যাবে। এতে দেশ অর্থনেতিকভাবে লাভবান হবে।
সাইফুল বলেন, প্রথমে দিকে বেশীরভাগ মানুষ আমাকে নিরুৎসাহিত করেছিলেন। এতোবড় জমিতে এখন অসম্ভব ফলনের তরমুজ চাষ না করে অন্যকাজে ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তুতরমুজ চাষের প্রতি আমার ব্যাপক আগ্রহ থাকায় লাভ কিংবা ক্ষতির কথা চিন্তা করিনি। ঝুঁকি নিয়েছি। এখন ভালো আয়ের স্বপ্ন দেখছি।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমার শীল জানান, সাইফুল উদীয়মান যুবক। উনি শারীরিকভাবেও অসুস্থ। আমার সাথে যোগাযোগ করলে আমি তাকে প্রয়োজনীয় সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। এখন তার কষ্ট-শ্রম দেখে মনে হচ্ছে তিনি সফল চাষী। এলাকায় উনার সফলতা দেখে অনেকেই গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষাবাদ করার আগ্রহ প্রকাশ করছেন। আমি মনে করি এটিই আমাদের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সফলতা।
আমি গ্রামীন যুবক ভাইদেরকে আহ্বান জানাব- সাইফুলের মত যেন এ ধরণের আয়বর্ধক নতুন নতুন লাভজনক ফসল চাষাবাদে তারা যুক্ত হন। আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর টেকনিক্যাল সকল ধরণের সহায়তা প্রদান করব।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস জানান, এখন সব মৌসুমে সব পাওয়া যাবে। বেকার যুবকরা বসে না থেকে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন। আমরা কৃষি অফিস সব সময় সহযোগিতা করবো। আমরা আশা করছি- আগামিতে রাঙ্গুনিয়ায় ব্যাপকভাবে গ্রীষ্মকালেও তরমুজ চাষ হবে।