রাঙামাটিতে কাঁঠালের বাম্পার ফলন

4

এম. কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি

রাঙামাটিতে এবার লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে মৌসমী ফল কাঁঠালের উৎপাদন। পাইকারির চেয়ে খুচরার দাম অনেক বেশি। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাঙামাটির কাঁঠাল যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলাতে। গত বছরের চেয়ে এবছর কাঁঠালের উৎপাদন অনেক বেশী। এসব কাঁঠাল আসে জেলার প্রত্যন্ত দুর্গম অঞ্চল নানিয়ারচর,বরকল ও লংগদু থেকে। অনেক কষ্ট করে ছোট ছোট ইঞ্জিল চালিত বোট দিয়ে এসব কাঁঠাল আসে শহরের পৌর ট্রাক টার্মিনাল,সমতাঘাট ও তবলছড়ি বাজার ঘাটে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যবসায়িরা এসে পাইকারী দরে কাঁঠাল নিয়ে যায়।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবার রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় ৩৩৮০হেক্টর জমিতে ১লক্ষ মেট্রিক টন কাঁঠাল উৎপাদন হয়েছে। গত বছরে চেয়ে এবছর অনেক ভাল ফলন হয়েছে। মৌসমী ফল কাঁঠাল চাষে এবার বিরূপ কোন প্রতিক্রিয়া তেমনটা দেখা দিতে পারেনি তাই ফলন ভাল ফলেছে। চাষীরা কাঁঠাল উৎপাদনে অনেক লাভবান হয়েছে।
ব্যবসায়ি রমজান আলী জানান, রাঙামাটি হতে কাঁঠালের গাড়ি ছেড়ে যাওয়ার পর রাউজান পর্যন্ত ৪-৫জায়গায় সরকারি টোল খরচ দিতে হয়। এছাড়াও পথে পথে পুলিশকে ৫-৬ হাজার টাকা দিতে হয়।এরপর পরিবহন খরচ অনেক বেশী এবং তেলের দামও বেশী। এ কারণে ব্যবসায় আমরা তেমন লাভবান হতে পারছি না। দেশের বিভিন্ন জেলায় যখন এ কাঁঠাল পৌছে তখন বিক্রি হয় একটি কাঁঠাল সর্বোচ্চ ২শ’ টাকা আর সর্বনিন্ম ৫০ টাকা।
কাঁঠাল বহনকারী ট্রাক চালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বর্তমানে আমরা এমন পরিস্থিতিতে আছি, গাড়ি নিয়ে ঘর থেকে বের হলেই পথে পথে পুলিশের চাঁদাবজির কবলে পড়তে হয়। আপনারা রোডে না আসলে রোডের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হবেন না। সবকিছু ওকে থাকার পরেও পুলিশকে টাকা দিতে হয়। রাঙামাটি থেকে কাঁঠালে একটি গাড়ি নোয়াখালীর চাটখিল নিয়ে যাওয়ার সময় পথে পথে প্রায় ৫ জাহার টাকা চাঁদা দিতে হয় পুলিশকে।
বাগান মালিক টুন্টু মনি চাকমা বলেন, দুর্গম প্রত্যন্ত গহিন বন জংগল থেকে অনেক কষ্ট করে জীবনবাজি রেখে আমরা কাঁঠাল নিয়ে রাঙামাটি সমতাঘাট বা ট্রাক ট্রার্মিনাল যাই। প্রায় সময় দেখা যায়,পাইকারা আমাদের ন্যায্য মূল্য দিতে চায় না। তাই আমরা নিরুপায় হয়ে কম দামেই বিক্রি করে চলে আসি। রাঙামাটিতে মৌসমী ফলের একটি হিমাগার থাকতো তাহলে এমনটি আর হতো না। সরকারের কাছে দাবি জেলা শহরের মধ্যে যেন একটি হিমাগার নির্মাণ করে দেয়। গত বছরের চেয়ে এ বছর কাঁঠালের ফলন ভাল হয়েছে।
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, এবছর মৌসমী ফল কাঁঠাল এ জেলায় গত বছরের চেয়ে অনেক ভাল হয়েছে। এ বছর রাঙামাটি জেলায় কাঁঠাল আবাদ হয়েছে ৩৩৮০ হেক্টর জমিতে। তার মধ্যে উৎপাদন লক্ষমাত্রা অর্জন হয়েছে একলক্ষ মেট্রিক টন। তবে কাঁঠাল চাষে এবার ঝড় বৃষ্টিতে তেমন কোন ক্ষতি করতে পারেনি। স্থানীয় ভাবে একটি কাঁঠাল সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা আর সর্ব নিন্ম ৩০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।