যানজট বেড়েছে চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কে

3

শহীদুল ইসলাম বাবর, সাতকানিয়া

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ের কর্ণফুলী, পটিয়া, চন্দনাইশ ও লোহাগাড়া অংশে যানজট আশংকাজনক হারে বেড়েছে। প্রতিদিন যানজটের কবলে অফিস ও ঘরমুখি হাজারো মানুষের কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি অসহ্য গরমে নারী ও শিশুদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষায় ছাত্ররা ট্রাফিকের ভূমিকা পালন করে যানজট নিরসন করে অভ‚তপূর্ব সফলতা দেখালেও দেড় মাসও টিকেনি সেই সফলতা। ছাত্ররা সড়ক থেকে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার পর ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা দায়িত্বে পালন করলেও কোনমতেই সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো যাচ্ছে না।
সড়কে দায়িত্বরত পুলিশ বলছে, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে গ্রামে চলাচল করা সিএনজি অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত টমটম ত্রি হুইলার চালকরা এখন এসব গাড়ি মহাসড়কে চালাচ্ছেন। ফলে যানজট বেড়ে গেছে। অনুমোদনহীন গাড়ি চলাচল করলেও কেন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না জানতে চাইলে কেরানীহাটে কর্মরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর হাসানুজ্জামান হায়দার বলেন, আগস্টের শুরু থেকে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশের কারণে আমরা মহাসড়কে অবৈধভাবে চলাচলরত গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা কিংবা অবৈধ গাড়ি আটক করতে পারছি না। তাই যানজটও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে চাইলে জনবল বাড়ানোর পাশপাশি যানচালক-হেলপারদের সচেতন করতে হবে। যেন তারা আইন মেনে সড়কে যানবাহন পরিচালনা করেন।
সরেজমিন পরিদর্শণকালে দেখা যায়, লোহাগাড়ার চুনতী বাজার, আধুনগর, আমিরাবাদ মোটর স্টেশন, পদুয়া তেওয়ারী হাট, ঠাকুরদিঘী বাজার, সাতকানিয়ার রাস্তার মাথা, কেরানীহাট, তেমুহনী, মৌলভীর দোকান, চন্দনাইশের দোহাজারী, বাগিচার হাট, গাছবাড়িয়া কলেজ গেট, খান হাট, রওশন হাট, পটিয়ার চক্রশালা, আমজুরহাট, বাদামতল, শান্তির হাট, মইজ্যার টেক ও নতুন ব্রিজ টোল প্লাজায় ব্যাপক আকারে যানজট তৈরি হচ্ছে।
নতুন ব্রিজের টোল প্লাজার সামনে যানজটে আটকে থাকা বাসের চালক হুমায়ুন কবির বলেন, টোল প্লাজায় আগে তেমন যানজট না হলেও গত একমাস থেকে এখানে নিয়মিত যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। টোল প্লাজার একটি কাউন্টার বন্ধ রাখার কারণে এই যানজট সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
কেরানীহাটে যানজটের বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রমিক নেতা দিদারুল ইসলাম বলেন, কেরানীহাট হচ্ছে ত্রিমুখি জংশন। এখানে সড়কের উপর অনেক যাত্রীবাহী গাড়ি দাঁড়িয়ে থেকে যাত্রী উঠানামা করেন। যার ফলে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। অপরদিকে বান্দরবান পার্বত্য জেলায় যাতায়াত করা গাড়ি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক থেকে বান্দরবানে প্রবেশ ও বান্দরবান থেকে ছেড়ে আসা গাড়ি মহাসড়কে প্রবেশের সময়ও কেরানীহাটে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। সুন্দর একটি সিস্টেম করে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ না করলে যানজট কমার কোন সম্ভাবনা নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ বিষয়ে কেরানীহাটে কর্মরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর হাসানুজ্জামান হায়দার বলেন, আগস্টের শুরু থেকে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশের কারণে আমরা মহাসড়কে অবৈধভাবে চলাচলরত গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা কিংবা অবৈধ গাড়ি আটক করতে পারছি না। তাই যানজটও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
দোহাজারী হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খাঁন মোহাম্মদ এরফান বলেন, বেশ কছিুদিন থেকে ভাল বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে সড়কে গর্তের সৃষ্টি হয়, তাছাড়া সাতকানিয়ার অংশে সড়ক সম্প্রসারণের কাজও চলমান রয়েছে। যার ফলে একটু যানজট হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে সড়কে চলাচলরত অবৈধ যানবাহন, ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া কিংবা আটক করার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলে জানান তিনি।