যতক্ষণ জীবন আছে ততক্ষণ সৎ আনন্দে বাঁচুন

12

পারভীন আকতার

জীবনে যদি ভাল কিছু একটা করতে চান বা হতে চান তাহলে অন্যের বুদ্ধি নির্ভর হবেন না। এতে জীবনে নেমে আসে চির অশান্তি ও দুর্যোগ। নিজে যা ভাল বুঝেন তা নিয়েই চলবেন এবং সতর্ক থাকবেন। সর্বদা সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা করে চলবেন। জীবনে আমি দেখেছি এবং এটাও উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছি যে আসলে একান্তভাবেই কেউ পাশে থাকে না কেবল স্রষ্টা ছাড়া। মানুষ বড়ই একা আর অসহায়। তাই যেটুকু মেধা আছে তা খরচা করে নিজের জীবন এগিয়ে নিয়ে যান। এ পৃথিবীতে সুসময়ের সঙ্গীর অভাব নেই। কিন্তু যেই পড়ে গেলেন খাঁদ থেকে তোলার মত বিশ্বস্ত হাতটি খুঁজে পাবেন না।
স্রষ্টা একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনায় এই দুনিয়া সৃষ্টি তথা তাতে যখন যেমন যা প্রয়োজন নানা প্রাণী ও জড় বস্তু সন্নিবেশ করেন এবং তা আদিগন্ত চলতে থাকবে দুনিয়া ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত। এখানে আপনি আমি একটা চলক ও ক্রীড়ানক মাত্র। সময় ফুরিয়ে গেলে আপনাকে আমাকে ধুলোয় মিশিয়ে দিতে এক সেকেন্ডও সময় লাগবে না। তাই সর্বাবস্থায় ধৈর্য ধারনের বিকল্প নেই। বিধাতা আসলেই সেই গুণটুকু খুঁজে বেড়ান যে কে কতভাবে তার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে নিজের ও তাঁর উপর নির্ভর করে। মন থেকে যত অশান্তি, দুশ্চিন্তা ভাবনা ঝেড়ে নিজের জন্য বাঁচুন। পৃথিবীতে যখন আমরা এসেছি আমাদের নিয়ে খোদার অনেক ক্রিয়াকর্ম ও কৌশল থাকবেই। সাথে আছে শয়তানেরও প্রভাব আর তার নানা অপকৌশলতো আছেই। সব মিলিয়ে আমরা যেন পৃথিবীতে একটা গোলকধাঁধায় পড়ে আছি। কখন, কোন সময়, কোথায় কী কী ঘটে যাবে তা জীবনে কেউ জানে না। এমন কি মৃত্যুও কখন, কোথায় হবে, কয় মিনিট পর হবে তাও কেউই জানে না। কী এক অদ্ভুত জীবন তাই না!

তাই যতক্ষণ শ্বাসটি আছে সৎ আনন্দে বাঁচুন। লোভের পড়ে অসৎ পথে উপার্জন করে এবং অন্যের ক্ষতি করতে যাইয়েন না,কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা আর অর্থ সম্পদ করতেও যাইয়েন না। কাকে আপনি মানি গ্যারান্টি আর লাইফ সিকিউরিটি দিচ্ছেন যার ভবিষ্যৎ আপনি জানেনই না!
দেখবেন আপনার অসৎ উপার্জন ও কৃতকর্মের জন্য আপনার পরবর্তী প্রজন্মকে ভালই মূল্য চুকাতে হবে। তখন তারা আপনাকে অভিশাপ দেবে আর এতে আপনার আত্মা কষ্টই পাবে কেবল। এসব কি কখনো ভাবেন? যদি তা না ভেবে অর্থ চাকচিক্যের জৌলুশে এখনো নিজেকে আহামরি কেউ ভাবেন তাহলে আপনি ভুল করছেন। এই দুনিয়াটা খোদার নিয়মে চলে আমার আর আপনার জন্যই কেবল পৃথিবী তৈরি হয়নি মনে রাখবেন। শোধ প্রতিশোধের খেলা বাদ দিন। যেটুকু ইতিবাচক চিন্তায় থাকা যায়, নিজের একটা ছোট্ট সৎ সুন্দর পৃথিবী গড়ে নেয়া যায় সে ততটাই সুখী ও আনন্দে দিন পার করছে।
লেখক: শিক্ষক, কবি ও প্রাবন্ধিক