মেয়র-কাউন্সিলররা আত্মগোপনে সেবা বন্ধে ভোগান্তি

22

পূর্বদেশ ডেস্ক

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের ছয় দিন পরও কার্যালয়ে আসেননি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। অফিস করছেন না সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলররাও। এর ফলে নাগরিক সেবা কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে আছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয়রা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকার পতনের পর বিক্ষুব্ধদের হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৩২টি কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলরদের কার্যালয়ে। হামলায় ৩২টি ওয়ার্ডে চার কোটি ৩১ লাখ ৬৩ হাজার ২০০ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কাউন্সিলরদের অনুপস্থিতির কারণে জাতীয়তা সনদপত্র ও জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সনদ, ওয়ারিশন সনদসহ অন্যান্য সনদ ইস্যু করা যাচ্ছে না। এতে ভোগান্তি বাড়ছে নগরবাসীর। খবর বাংলা ট্রিবিউনের।
এদিকে মেয়রের অনুপস্থিতিতে আর্থিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে জটিলতায় পড়েছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা। কারণ, সিটি করপোরেশনের অর্থসংক্রান্ত সব কাজ মেয়রের ওপর নির্ভরশীল। চেক সই ছাড়াও কেনাকাটার ব্যাপারে মেয়রের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। মেয়র না থাকায় জরুরি কেনাকাটা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে করপোরেশনের বর্জ্যবাহী গাড়ির তেল এবং সড়ক সংস্কারের জন্য বিটুমিন কেনা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থা বজায় থাকলে আগামী দিনে পরিচ্ছন্নতা কাজও থেমে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন কর্মকর্তারা।
এ অবস্থায় সিটি করপোরেশনের বিভাগীয় প্রধান ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। সভায় সিটি করপোরেশনের নাগরিক সেবা কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে আলোচনা হয়। আর্থিক বিষয় নিয়েও কর্মকর্তারা আলোচনা করেন। জরুরি নাগরিক সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়। বৈঠকে ওয়ার্ড সচিবদের কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলররা কার্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলেও সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে অফিস করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সিটি করপোরেশনের সব বিভাগে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরব উপস্থিতি আছে। রাজস্ব কার্যালয়গুলোতে পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে। নগরবাসী গৃহকর জমা দিতে পারছেন। ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার কাজও চলছে। ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয় থেকে জন্মনিবন্ধন সনদ, জাতীয়তা সনদ, চারিত্রিক সনদ, উত্তরাধিকার সনদ, ওয়ারিশান সনদসহ প্রয়োজনীয় সব সনদ দেওয়া হয়। এসব সনদে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সই লাগে। কিন্তু কাউন্সিলররা অনুপস্থিত থাকায় এখন তা ইস্যু করা যাচ্ছে না। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরীর বাসিন্দরা।
এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, যেসব কাউন্সিলর কাজে যোগ দেবেন তাদের বাকি ওয়ার্ডগুলোর কাজ ভাগ করে দেওয়া হবে। বেশি ওয়ার্ড হলে ওয়ার্ড সচিবও সনদে স্বাক্ষর করতে পারেন। প্রতিটি ওয়ার্ড কার্যালয়ে নাগরিক সেবা দ্রæত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা তা মনিটর করা হচ্ছে।