মিরসরাইয়ে ভেসে গেছে কোটি টাকার মাছ

10

মিরসরাই প্রতিনিধি

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের তান্ডবে মিরসরাইয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অতিবৃষ্টিতে ফেনী নদীর জোয়ারের পানি ঢুকে মুহুরী প্রজেক্ট এলাকার ২৬ হেক্টর মৎস্য প্রকল্পের প্রায় কোটি টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে। দমকা বাতাসে ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ১০ হেক্টর আউশ বীজতলা ও ১৮০ হেক্টর গ্রীষ্মকালীন সবজিক্ষেত নষ্ট হয়েছে। বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছেন প্রায় ৯০ হাজার গ্রাহক ।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ো বাতাসে বড় বড় গাছ উপড়ে পড়ে গ্রামীণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে এবং অসংখ্য বসতঘর ভেঙে গেছে। এছাড়া বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙেছে ৩৭ টি, তার ছিঁড়েছে ৩৪০টি স্পটে, ক্রস আর্ম ভেঙেছে ৩৬ টি। উপজেলায় প্রায় ৯০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছেন। অতিবৃষ্টিতে ফেনী নদীর পানি ঢুকে মুহুরী প্রজেক্ট এলাকার ৩২ টি মৎস্য খামারের ২৬ হেক্টর পুকুর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কোটি টাকার কার্পজাতীয় মাছ পানিতে ভেসে গেছে। হাবিলদারবাসা এলাকায় সড়কে বড় গাছ ভেঙে পড়ে প্রায় ২০ ঘণ্টা বন্ধ ছিল ছাগলনাইয়া-করেরহাট সড়কে সবধরনের যান চলাচল। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে গাছ কেটে সরানোর পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
উপজেলার মধ্যম ওয়াহেদপুর এলাকার কৃষক আব্দুল হান্নান বলেন, ‘এবার আমি প্রায় ৭০ শতক জমিতে বোরো আবাদ করেছি। ঘূর্ণিঝড়ের আগে ৩০ শতক জমির ধান কেটে বাড়িতে নেওয়া হয়েছে। বাকি ৩০ শতক জমির পাকা ধান পানিতে ডুবে রয়েছে। এতে ধান পচে গেলে বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।’
চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর মিরসরাই জোনাল অফিসের এজিএম প্রকৌশলী উদয়ন দাশ গুপ্ত বলেন, এরইমধ্যে ১৮ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো ৫৪ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎহীন রয়েছেন। লাইন চালু করতে মাঠে ১৮ টি টিম কাজ করছে। দু’একদিনের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক হয়ে যাবে আশা করি।বারইয়ারহাট জোনাল অফিসের ডিজিএম হেদায়েত উল্ল্যাহ বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে আমাদের ১২ টি খুঁটি ও ৮ টি ক্রস আর্ম ভেঙেছে। তার ছিঁড়েছে ৪০ টি স্পটে। ২৫ হাজার গ্রাহক এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ পাননি। লাইন স্বাভাবিক করতে ৬ টি টিম কাজ করছে।
সীতাকুÐ জোনাল অফিসের ডিজিএম পঙ্কজ চৌধুরী জানান, সীতাকুন্ড জোনাল অফিসের আওতাধীন মিরসরাই উপজেলার ১০ হাজার গ্রাহক এখনো বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে উপজেলার ১০ হেক্টর আউশ বীজতলা পানিতে ডুবে গেছে ও ১৮০ হেক্টর গ্রীষ্মকালীন সবজি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। দ্রুত পানি না নামলে ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে। পরিপূর্ণ ক্ষয়ক্ষতি আগামী দু’য়েকদিনের মধ্যে নির্ধারণ করা যাবে। উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদ বলেন, মুহুরী প্রজেক্টের পুকুরগুলো পাশাপাশি লাগানো থাকায় পাড় থাকে একদম সরু। ফলে অল্প বৃষ্টিতে পাড় ভেঙে মাছ পাশের পুকুরে ভেসে যায়।