মামলা হচ্ছে পটিয়ার সাবেক এমপিসহ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে

6

পটিয়া প্রতিনিধি

পটিয়ায় শিক্ষার্থীদের উপর প্রকাশ্যে গুলি ও বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে উপজেলা বিএনপি। মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আ’লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলামসহ যুবলীগ ও ছাত্রলীগের চিহ্নিত অস্ত্রধারী নেতা-কর্মীদের আসামি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। ঘটনার সময়ের ছবি ও ভিডিও থেকে ইতোমধ্যে অনেক অস্ত্রধারী, ঘটনার নেতৃত্বে থাকা কয়েক ইউপি চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ আ’লীগের বিভিন্ন ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২-১ দিনের মধ্যে মামলাটি দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম।
তিনি জানান, গত ৪ ডিসেম্বর ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিলে আ’লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের বেশ কয়েকজন অস্ত্রধারী নেতা-কর্মীর ছোড়া গুলিতে প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হন। এর আগে ১৮ জুলাই দুপুরে একইভাবে ডিএম জমির উদ্দিন ও বালু সাইফুর নেতৃত্বে উপজেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ৪ ডিসেম্বর উপজেলা পরিষদস্থ পটিয়া আসনের সাবেক এমপি মোতাহেরুল ইসলামের নেতৃত্বে তার কার্যালয়ের সম্মুখে আ’লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নেন। বেলা ১১ টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সহকারে মুন্সেফবাজার এলাকা অতিক্রম করার পর তখনকার এমপি মোতাহেরুল ইসলামের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের মিছিলে গুলি ছোড়া হয়। সে সময় গুলি করার ভিডিও এবং ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে ১৮ জুলাই শিক্ষার্থীরা মিছিল শুরু করলে এমপি মোতাহেরের নির্দেশে ডিএম জমির উদ্দিন ও বালু সাইফুর নেতৃত্বে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালানো হয়। এ সময় কলেজ গেইটস্থ বিএনপি অফিস ভাঙচুর করা হয়।
৪ ডিসেম্বর সামেক এমপি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী উদীচী, বিএনপি-জামায়াত, অতি ডান ও অতি বামরা একত্রিত হয়েছে উল্লেখ করে স্বাধীনতার বিরোধী এসব শক্তিকে প্রতিহত করার নির্দেশ দেন। ওই সময় সরকারপন্থিদের সাথে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষ শুরু হলে মোতাহেরুল ইসলাম একটি ব্যাংকের ভল্টের মধ্যে লুকিয়ে থাকেন। আর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর সংবাদ প্রচার হলে একটি সিএনজি অটোরিকশাযোগে মুরালীঘাট রোড হয়ে আনোয়ারা দিয়ে পটিয়া থেকে পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পান বলে জানা যায়।
পটিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম জানান, শিক্ষার্থীদের উপর গুলি ও বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর করার ঘটনায় সাবেক এমপি মোতাহেরুল ইসলাম জড়িত থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আমরা দু’টি ঘটনার আগে ও পরের ভিডিও এবং ছবি সংগ্রহ করে জড়িতদের চিহ্নিত করেছি। তাদের বিষয়ে পুলিশকে জানিয়েছি। কিন্তু তারা এদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তবে ২-১ দিনের মধ্যে মামলা দায়ের করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এসব অপরাধীকে গ্রেপ্তারপূর্বক আইনের আওতায় আনার দাবিতে উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয় ঘেরাও করার কর্মসূচি রয়েছে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহব্বায়ক এনামুল হক এনাম বলেন, ২-১ দিনের মধ্যে মামলা হবে, তবে নিরীহ কেউ হয়রানির শিকার হবেন না।
পটিয়া থানার ওসি জসীম উদ্দিন জানান, ৪ ডিসেম্বর ছাত্রদের বিক্ষোভে গুলি ছোড়া অস্ত্রধারীদের অনেককে চিহ্নিত করা হয়েছে। অন্যদেরও চিহ্নিত করার জন্য বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। তবে ওই ঘটনায় এখনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।