মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্তে ‘জাতীয় গণতদন্ত কমিশন’

0

কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক প্রাণহানি, শিক্ষার্থীদের নির্যাতন, গুলি এবং গণগ্রেপ্তারসহ বিভিন্ন সহিংস ঘটনার তদন্তে ‘জাতীয় গণতদন্ত কমিশন’ গঠন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানান জাতীয় গণতদন্ত কমিশনের যুগ্ম সদস্যসচিব তানজিমউদ্দিন খান ও মাহা মির্জা। খবর একটি অনলাইন বার্তা সংস্থার
বিজ্ঞপ্তি বলা হয়েছে, গত ১৬ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়ে সহিংসতার সূত্রপাত হয়। এই সহিংসতার প্রতিবাদে সারাদেশে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ রাস্তায় নামলে, রংপুরে আবু সাঈদকে সরাসরি বুকে গুলি করা হয়। কিন্তু পুলিশের করা মামলায় সাধারণ ছাত্র ও জনগণকেই দায়ী করা হয়েছে, যা তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন তুলেছে এবং সত্য উদঘাটনের দাবি উঠেছে। সংবাদমাধ্যমের মতে, এই ঘটনায় অন্তত ২০৯ জনের মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশিত হলেও সরকারি হিসেবে তা ১৪৭ জন।
ওই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের নির্যাতন, গুলি ও গণগ্রেপ্তারসহ বিভিন্ন সহিংস উপায়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছে, যা সংবিধান, প্রচলিত আইন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ধরেছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি আরও বলা হয়েছে, এই প্রেক্ষাপটে শিক্ষক, আইনজীবী, সংস্কৃতিকর্মী এবং সাধারণ অভিভাবকদের উদ্যোগে বাংলাদেশের কয়েকজন প্রথিতযশা ব্যক্তির সমন্বয়ে একটি ‘জাতীয় গণতদন্ত কমিশন’ গঠন করা হয়েছে। কমিশনের সদস্যরা হলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. আব্দুল মতিন, মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান, সাংবাদিক আবু সাইয়িদ খান, অধ্যাপক গীতিআরা নাসরিন, সাংবাদিক আশরাফ কায়সার, আইনজীবী অনীক আর হক, অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান, এবং লেখক ও গবেষক মাহা মির্জা। কমিশনের যুগ্ম সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বিচারপতি মো. আব্দুল মতিন ও সুলতানা কামাল, আর সদস্যসচিব হিসেবে যৌথভাবে কাজ করবেন অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান ও মাহা মির্জা। এ ছাড়া, এই গণতদন্ত কমিশনে উপদেষ্টা হিসেবে থাকবেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তোবারক হোসেন, সারা হোসেন, ড. শাহদীন মালিক, অধ্যাপক সলিমুল্লাহ্ খান, শিক্ষক কাজী মাহফুজুল হক সুপন, আইনজীবী রাশনা ইমাম, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া এবং শিক্ষক সাইমুম রেজা তালুকদার।
জাতীয় গণতদন্ত কমিশনের পক্ষ থেকে সব সচেতন ব্যক্তিকে আহবান জানানো হয়েছে যাতে তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ১ জুলাই থেকে সংগঠিত বিভিন্ন সহিংস নির্যাতন, নিপীড়ন, হত্যা, গুলিবর্ষণ, হুমকি, মামলা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যাবতীয় তথ্য কমিশনের কাছে পাঠান। এই সংক্রান্ত অডিও, ভিডিও, ফটোগ্রাফ ও লেখাসহ যেকোনো ধরনের তথ্যই পাঠানো যাবে।