মানবাধিকার কমিশন মেধা ও কোটার ‘যথার্থ সমন্বয়’ চায়

8

পূর্বদেশ ডেস্ক

মেধাভিত্তিক জাতীয় সংস্কৃতির বিকাশে তাগিদ দিয়ে কোটার বিষয়ে যথার্থ সমন্বয় ও সামঞ্জস্য বিধানের কথা বলেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সরকারি চাকরির কোটা নিয়ে আপিল বিভাগের আদেশ মেনে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহবানও জানিয়েছে সংস্থাটি।
কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের টানা কর্মসূচিতে যাতায়াতে তীব্র ভোগান্তির মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার মানবাধিকার কমিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।
কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, কমিশন জাতীয় পর্যায়ে মেধাভিত্তিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ গঠনকে গুরুত্ব প্রদান করে। এ জন্য সুচিন্তিত ও সুবিবেচনাপ্রসূত নিয়োগ ব্যবস্থা চলমান রাখা প্রয়োজন।
সকলের অধিকার এবং অন্তর্ভুক্তিকে কেন্দ্রবিন্দুতে রেখে মেধাভিত্তিক জাতীয় সংস্কৃতির বিকাশ হতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোটা সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ের যথার্থ সমন্বয় ও সামঞ্জস্য বিধান করা গুরুত্বপূর্ণ। খবর বিডিনিউজের।
সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে ছাত্র আন্দোলনের মুখে সরকার ২০১৮ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে সব কোটা তুলে দিয়ে পরিপত্র জারি করে। ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের রিট আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে স¤প্রতি হাই কোর্ট সেই পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে।
এর প্রতিক্রিয়ায় ফের শুরু হয় আন্দোলন। শুরুতে ছাত্ররা ২০১৮ সালের পরিপত্র ফিরিয়ে আনা, অর্থাৎ কোটা বাতিলের দাবিতে মাঠে নামলেও পরে সংস্কারের দাবি সামনে আনে।
এর মধ্যে বুধবার আপিল বিভাগ হাই কোর্টের রায়ে চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দেয়, অর্থাৎ এই মুহূর্তে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা নেই। তবে ছাত্ররা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গতকাল হাই কোর্টের রায়ের বাস্তবায়নযোগ্য অংশ প্রকাশ পেয়েছে, যাতে বলা হয়, সরকারি চাকরিতে সবগুলো কোটাই থাকতে হবে। তবে কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধা তালিকা থেকে নিয়োগ দেওয়া যাবে। আর সরকার চাইলে কোটার হার পরিবর্তন করতে পারেন।
অবশ্য ২০১৩ সাল থেকেই কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধা তালিকা থেকে তা পূরণ করা হচ্ছে।
২০১৮ সালের পরিপত্রের আগে মোট ৫৬ শতাংশ কোটায় এবং ৪৪ শতাংশ মেধা তালিকায় নিয়োগ করার কথা বলা হলেও প্রথম শ্রেণির চাকরিতে মেধা তালিকা থেকে ৬২ শতাংশ নিয়োগের তথ্য মিলেছে।
মানবাধিকার কমিশন বলেছে, সুপ্রিম কোর্ট সামগ্রিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে তা এ সংকট সমাধানে একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ। এ নির্দেশনা পরিপূর্ণ আস্থা ও শ্রদ্ধার দাবি রাখে এবং একই সঙ্গে উদ্ভূত সমস্যা সমাধানের প্রত্যাশা তৈরি করেছে।
সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থা রেখে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাওয়া, উপযুক্ত শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখা এবং জনদুর্ভোগ দূর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানানো হচ্ছে।