মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে শিক্ষক আটক

3

মিরসরাই প্রতিনিধি

মিরসরাইয়ে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল রবিবার দুপুরে উপজেলার ওয়ার্লেসে অবস্থিত দারুল উলুম মাদ্রাসা থেকে ওই শিক্ষককে আটক করা হয়। আটক হাফেজ মাওলানা জোবায়ের চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বাসিন্দা।
সরেজমিনে জানা যায়, শনিবার রাতে ওয়ার্লেস দারুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক জোবায়ের হেফজ বিভাগের এক শিশু শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের চেষ্টা করেন। গতকাল রবিবার সকালে ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা বিষয়টি ক্যান্টিনে জানায়। পরবর্তীতে যৌন নিপীড়নের শিকার ওই শিক্ষার্থী ক্যান্টিনে এসে পরিবারকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানায়। এরমধ্যে ঘটনাটি স্থানীয়রা জানার পর মাদ্রাসার শিক্ষকদের বিষয়টি জিজ্ঞেস করতে যায়। এই নিয়ে স্থানীয় এবং মাদ্রাসার শিক্ষকদের মধ্যে বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা ইব্রাহীম, স্থানীয় তরুণ তানভীর শাহরিয়ার রিয়াজ ও নুরনবী বশর আহত হন। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
পরে খবর পেয়ে মিরসরাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে এবং অভিযুক্ত শিক্ষক জোবায়েরকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে নেয়।
আহত স্থানীয় বাসিন্দা তানভীর শাহরিয়ার রিয়াজ জানান, মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের বিষয়টি জানার পর আমি মাদ্রাসার ভিতরে গিয়ে হুজুরদের কাছে জানতে চাই। তখন মাদ্রাসার শিক্ষকরা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার উপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। আমার উপর হামলা করতে দেখে স্থানীয় অন্যান্যরা এগিয়ে আসলে মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের উপরও হামলা চালায়। ওয়ার্লেস দারুল উলুম মাদ্রাসায় যৌন নিপীড়নের ঘটনা আজ নতুন নয়। এর আগে বেশ কয়েকবার এমন ঘটনা ঘটেছে। যতবারই ঘটে ততবারই মাদ্রাসার পরিচালক হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ শোয়াইব গোপনে বিষয়গুলো ধামাচাপা দিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকদের কোন বিচার না করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে যৌন নিপীড়নের শিকার শিশুর পরিবার জানায়, ২০১৬ সালে আমার ছোট ভাইকে ওয়ার্লেস দারুল উলুম নূরানী বিভাগে ভর্তি করাই। নূরানী বিভাগ থেকে হিফজ বিভাগে যাওয়ার পর এখন নাজেরা বিভাগে পাঠদান চলছে। এতবছর কোনো সমস্যা শুনিনি। হঠাৎ করে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা আমার ভাইয়ের সাথে ঘটবে কখনো চিন্তাও করিনি।
দারুল উলুম মাদ্রাসার পরিচালক হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ শোয়াইব বলেন, দোষীতো প্রতিষ্ঠান না, দোষী একজন ব্যাক্তি। অভিযুক্ত হুজুরকে পুলিশ নিয়ে গেছে। সে যদি প্রকৃত অন্যায়কারী হয় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয়রা এভাবে আমাদের প্রতিষ্ঠানের উপর হামলা চালানোর বিষয়টি আমাকে ব্যথিত করেছে।
মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকার্তা (ওসি) সহিদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত শিক্ষককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।