মহানগর আওয়ামী লীগ হাইব্রিড ঠেকানোই চ্যালেঞ্জ

23

রাহুল দাশ নয়ন

কেন্দ্রঘোষিত নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই অবশিষ্ট ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলন শেষ করতে চায় মহানগর আওয়ামী লীগ। সম্মেলনের দিনক্ষণ চূড়ান্তে দফায় দফায় ইউনিট নেতাদের সাথে বৈঠক করছেন ওয়ার্ডের দায়িত্বশীল নগর নেতারা। পাশাপাশি নগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও সম্মেলন দ্রæত শেষ করার তাগাদা দেয়া হয়েছে। সাংগঠনিক কার্যক্রমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এখন হাইব্রিড ও অনুপ্রবেশকারী। হাইব্রিড ঠেকাতে কেন্দ্রের কঠোর নির্দেশনার পর কোন কমিটিতে যাতে অবাঞ্চিত ও জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ ব্যক্তিরা স্থান না পায় সেজন্য সজাগ ও সতর্ক থাকতে ওয়ার্ড নেতাদের নির্দেশনা দিয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগ। সম্মেলনে আওয়ামী লীগের কাছে হাইব্রিড ঠেকানোই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘নেতৃত্ব যাচাই বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যোগ্যতা, দক্ষতা, ত্যাগ ও দলীয় আদর্শের প্রতি আনুগত্যের বিষয়সহ সমাজে গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টিকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। মনে রাখতে হবে নেতৃত্ব ও পদ-পদবীতে কোন অবাঞ্চিত ও জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ কোন ব্যক্তি যাতে আসীন হতে না পারে সেদিকেও সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে। এক্ষেত্রে কোন ব্যথ্যয় ঘটলে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের দায়ী হতে হবেন।’
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন পূর্বদেশকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নির্দেশনার পর থেকে আমার সকল ইউনিট,ওয়ার্ড ও থানার সম্মেলন করতে কার্যক্রম চালাচ্ছি। এই কার্যক্রমে প্রাথমিক সদস্য হতে কেউ আগ্রহ করলে আমাদের আপত্তি নেই। তবে হাইব্রিড কিংবা অনুপ্রবেশকারীর দলীয় পদে আসার সুযোগ নেই। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কেউ যাতে সংগঠনে যুক্ত হতে না পারে সেজন্য তৃণমূলের দায়িত্বশীল প্রত্যেক নেতা সতর্ক ও সজাগ আছে। কমিটি নাজিল করা হলেই অনুপ্রবেশকারী ঢোকার সম্ভাবনা থাকে। আমরা সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় তৃণমূলের সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দিয়েই কমিটি করছি।’
দলীয় সূত্র জানায়, ২০২২ সালে সম্মেলন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর গত দুইবছরে ১৯১টি ওয়ার্ড, ইউনিট ও থানা ইউনিটের মধ্যে ১২১টি ইউনিটের সম্মেলন হয়েছে। বাকি থাকা ২৭টি ইউনিট, ২৯টি ওয়ার্ড ও ১৪টি থানা ইউনিটের সম্মেলন এখনো বাকি রয়েছে। গত ৪ জুলাই চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় উপস্থিত হয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন করার নির্দেশনা দেন। পাশাপাশি আগামী ২৫ জুলাইয়ের মধ্যেই ইউনিট এবং ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন করার নির্দেশনা দেন। কেন্দ্রের এমন নির্দেশনা পেয়ে অবশিষ্ট থাকা প্রতিটি ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা সম্মেলন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতি বাড়ায়। বিভিন্ন ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা নেতাদের সাথে বৈঠক করে অবশিষ্ট থাকা সম্মেলন সম্পন্ন করতে প্রক্রিয়া শুরু করেন।
মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক পূর্বদেশকে বলেন, ‘আমার দায়িত্বে থাকা চারটি ওয়ার্ডের মধ্যে পাঁচলাইশ ৩নং ওয়ার্ড ছাড়া বাকি তিনটির সম্মেলন শেষ করেছি। আগামী সোম-মঙ্গলবার ইউনিট কমিটির সাথে বসে তারিখ নির্ধারণ করে নগর আওয়ামী লীগকে অবহিত করবো। ইতোমধ্যে যেসব এলাকায় সম্মেলন হয়েছে সেখানে সমাজের গ্রহণযোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের কমিটিতে রাখার চেষ্টা হয়েছে। অতীতে নগরের ওয়ার্ড সম্মেলনে কিছু কিছু ওয়ার্ডে যেসব সমস্যা উঠে এসেছিল সেগুলো যাচাই-বাছাই করছে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড পর্যবেক্ষণ করছে।’