মসজিদের কাজেও অনিয়ম করছেন ঠিকাদার!

1

হাটহাজারী প্রতিনিধি

নিম্নমানের টাইলস ব্যবহার করার অভিযোগে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার নাঙ্গলমোড়া ইউনিয়নের একটি জামে মসজিদের প্রাঙ্গণ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উক্ত ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে বায়তুল আমান জামে মসজিদ প্রকাশ নজির আহাম্মদ সওদাগর মসজিদের ওই কাজ এলাকাবাসী ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যরা বন্ধ করে দেয়।
এলাকাবাসী ও মসজিদ কমিটির সদস্যদের অভিযোগ, রাতের আঁধারে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী তথা টাইলস দিয়ে মসজিদের ওই প্রাঙ্গণ তৈরির কাজ করা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রাঙ্গণ তৈরির কাজে ব্যবহৃত টাইলসগুলোর দৈর্ঘ্য-প্রস্থ ঠিক থাকলেও উচ্চতা ঠিক না থাকায় কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যেভাবে টেন্ডারে উল্লেখমতো কাজ করার কথা সেভাবে নির্মাণ কাজটি হচ্ছিল না।
উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নাঙ্গলমোড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে নজির আহাম্মদ সওদাগর মসজিদের প্রাঙ্গণ তৈরির কাজ শুরু হয় মে মাসে। প্রায় ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নিশান ট্রেডিং নামে এক প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটির কাজ শুরু করে। কিন্তু নিম্নমানের টাইলস ব্যবহার করার কারণে এই কাজের মান নিয়ে এলাকাবাসী ও মসজিদ কমিটির সদস্যরা ক্ষুব্ধ।
গত বৃহস্পতিবার (৬ জুন) দুপুরে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, উক্ত মসজিদের প্রাঙ্গণ তৈরির কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। তবে, এর মধ্যে রাতের আঁধারে নিম্নমানের টাইলস দিয়ে যতটুকু কাজ সম্পন্ন করেছে তার অনেকগুলোই ভাঙা। তাছাড়া টেন্ডারের শর্ত অনুযায়ী কাজ হচ্ছে না বলে এ নিয়ে এলাকাবাসী ও মসজিদ কমিটির সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
কাজের মান ও নিম্নমানের টাইলস ব্যবহারে ক্ষুদ্ধ মসজিদ পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি হাফেজ আরবান আলী বলেন, দিনের কাজ রাতের আঁধারে নিম্নমানের টাইলস দিয়ে করছে। প্রকল্পটির অধিকাংশ কাজ শেষ। এর মধ্যে প্রায় সবগুলো টাইল্স ভাঙা এবং চুক্তি মোতাবেক কাজটি করা হচ্ছে না। তাছাড়া যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছে ওই প্রতিষ্ঠানটি কাজটি না করে করছে হোসাইন মঞ্জু নামের একজন ব্যক্তি।
এনিয়ে এলাকাবাসী ও মসজিদ কমিটির সদস্যরা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী অনিময় চাকমাকে জানানো হলে তিনি এ কাজে কোনো নিম্নমানের টাইল্স ব্যবহার করা হচ্ছে না বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান মো. হারুনর রশীদ।
তিনি জানান, সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়নের কাজগুলো অনেকটা কষ্ট করে এমপি মহোদয়ের কাছ থেকে বরাদ্দ এনেছি। তিনি আমার সুনামের জন্য বরাদ্দ দিয়েছন। অথচ এ রকম নিম্নমানের কাজ করলে তাঁর সুনামের জায়গায় দুর্নাম হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী জয়শ্রী দে জানান, মসজিদের কাজ নিয়ে ফাঁকিঝুঁকি করার কোনো সুযোগ নেই। আমার অফিসের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা মসজিদ কমিটির লোকদের সাথে নিয়ে পছন্দ করে টাইলসগুলো কেনা হয়েছে। তবুও এলাকাবাসী ও মসজিদ কমিটির সদস্যদের অভিযোগ পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে চিঠি দিয়েছি। আগামি তিনদিনের মধ্যে ঠিকাদারকে ভাঙা টাইল্সগুলো পরিবর্তন করে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।