ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ১৪ বছর পর ‘নগর ভবন’ নির্মাণকাজ শুরু

3

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দীর্ঘ ১৪ বছর পর নগর ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। সরকারি অর্থায়নে প্রকল্প অনুমোদন না হওয়ায় নিজস্ব অর্থায়নে ভবনটি নির্মাণ শুরু করেছে সংস্থাটি। ৬ ধাপে মোট ১৮০ কোটি টাকার টেন্ডারের মাধ্যমে ‘আইকনিক’ নগর ভবনের কাজ সম্পন্ন করা হবে। গতকাল সোমবার দুপুরে নগরের আন্দরকিল্লায় সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এ নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনকালে মেয়র বলেন, ‘পুরাতন নগর ভবনের স্থানে পার্শ্ববর্তী আরো দুটি ভবনের স্থান সংযুক্ত করে এই আইকনিক নগর ভবন নির্মাণ করা হবে। তিনটি বেইসমেন্টসহ পুরো নগর ভবন হবে ২১ তলা। এ ভবনের প্রথম ধাপের উদ্বোধন করা হল আজ। আমাদের লক্ষ্য ২৮ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে প্রথম ধাপের কাজের অংশ হিসেবে ৫-৬ তলা আগামী জানুয়ারি ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করে টাইগারপাস থেকে আন্দরকিল্লায় চলে আসা। বাকী অংশ ধাপে ধাপে সম্পন্ন করা হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘স্থায়ী নগর ভবন না থাকায় বিদেশি অতিথিরা আসলে আমাদের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়, নাগরিকদেরও সেবা প্রদান বিঘিœত হয়। এজন্য নিজস্ব ফান্ডে নগর ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। এ ভবনে নাগরিকরা স্বাচ্ছন্দে সেবা নিতে পারবেন। এছাড়া এ ভবনের একটি ফ্লোরে চট্টগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরতে গড়ে তোলা হবে জাদুঘর।’
চসিকের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৩৮ হাজার ৪৯০ বর্গফুট বা ৫৩ দশমিক ৪৫ কাঠা জায়গায় নগর ভবন নির্মাণ করা হবে। প্রণয়ন নামে একটি কনসালটেন্ট ফার্ম ‘আইকনিক’ এ ভবনের নকশা করেছে। ভবনের উপরে থাকবে সিটি ক্লক। ভবনের তিন পাশে সাজানো বাগান থাকবে। নির্মাণ করা হবে ফোয়ারা। থাকবে মাল্টিপারপাস হল, কনফারেন্স হল ও ব্যাংকুয়েট হল। তবে পুরো নগর ভবন নির্মাণ করা হবে ধাপে ধাপে। শুরুতে বেইসমেন্টসহ তিনটি ফ্লোর নির্মাণ করা হবে।
নগর ভবন নির্মাণের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী প্রকৌশলী ফারজানা মুক্তা পূর্বদেশকে জানান, প্রথম পর্যায়ে ২৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা টেন্ডারে কাজ শুরু করা হয়েছে। কেননা আমরা সর্বোচ্চ ৩০ কোটি টাকার টেন্ডার করতে পারি। পুরো প্রকল্পটি ৬টি ধাপে টেন্ডার করা হবে। এর মধ্যে মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) অনুমোদন হলে নিজস্ব ফান্ড থেকে জিওবি অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। অক্টোবরের দিকে দ্বিতীয় ধাপে টেন্ডার করার বিষয়টি যোগ করেন প্রকৌশলী মুক্তা।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী, হাসান মুরাদ বিপ্লব, শৈবাল দাশ সুমন, মো. ইলিয়াছ, মো. আবদুস সালাম মাসুম, আতাউল্লা চৌধুরী, রুমকি সেনগুপ্ত, মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম, প্রধান প্রকৌশলী শাহীন-উল ইসলাম চৌধুরী, তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী আকবর আলী, ফরহাদুল আলম, জসিম উদ্দিন, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও এস্টেট অফিসার মো. রেজাউল করিম, নির্বাহী প্রকৌশলী ফারজানা মুক্তা, রেজাউল বারী ভ‚ইঁয়া, মীর্জা ফজলুল কাদের, আশিকুল ইসলাম, রিফাতুল করিম, তাসমিয়া তাহসীন, তৌহিদুল ইসলাম, সালমা খাতুন, সহকারী প্রকৌশলী আসীর হামীম।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ১১ মার্চ নগর ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন মেয়র চট্টলবীর এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। এরপর চসিকে দুজন মেয়র এবং একজন প্রশাসক দায়িত্ব পালন করলেও অর্থ সংকট, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না পাওয়াসহ বিভিন্ন জটিলতায় সেই উদ্যোগ থমকে ছিল।