বৈষম্য, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজিমুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রামের দাবি

3

বান্দরবান প্রতিনিধি

বৈষম্য, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিমুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম গঠন ও রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মহাসমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ। শনিবার দুপুর থেকে সাত উপজেলার হাজার হাজার মানুষ মিছিল সহকারে এসে বান্দরবান প্রেস ক্লাব এলাকায় মহাসমাবেশে অংশ নেন। এসময় শহরের ট্রাফিক মোড়, ঈদগাও মাঠ, সাঙ্গু ব্রিজ, জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরসহ আশপাশের এলাকা কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মো. মজিবর রহমান বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল প্রতিষ্ঠান ও সংস্থায় সর্বোচ্চ পদে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী থেকে পদায়ন করে হয়েছে। জাতীয় ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের সভাপতির পদসহ সব সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীর পদগুলো শুধু পাহাড়িদের জন্য নির্ধারিত। এ ছাড়া সব সরকারি চাকরি, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, উপবৃত্তি ইত্যাদির ক্ষেত্রে কোটার মাধ্যমে বাঙালিদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। এসময় বক্তারা মানবাধিকার রক্ষায় এবং স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত পার্বত্য জেলাতে প্রত্যাহারকৃত সেনাক্যাম্পগুলো পুনঃস্থাপনসহ র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবির কার্যক্রম জোরদার করার দাবি জানান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী মজিবর রহমান বলেন, মূলত আদিবাসী স্বীকৃতির নামে আলাদা রাষ্ট্র “জুম্মল্যান্ড” প্রতিষ্ঠার স্বপ্নে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত কতিপয় উপজাতীয় ও দেশীয় কুচক্রী মহল। পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রায় সকল উপজাতি সম্প্রদায় প্রতিবেশী ভারত, মিয়ানমার ও চীন থেকে অষ্টদশ শতকের দিকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে বসবাস শুরু করে। অথচ আদিবাসী হতে হলে ভূমি সন্তান হতে হয় এবং হাজার বছরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধারণ করতে হয়। তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ৫৪ শতাংশ বাঙালিদের বসবাস হওয়া সত্তে¡ও দীর্ঘদিন যাবৎ এ অঞ্চলের বাঙালিরা বৈষম্যের স্বীকার হয়ে আসছে। আমরা আর বৈষম্যের স্বীকার হতে চাই নাই, আমরা স্বাধীনভাবে থাকতে চাই। ১৯০০ সালের পার্বত্য শাসনবিধি ও রাজার সনদ বাতিল, বাজার ফান্ড এলাকায় ব্যাংক ঋণ চালু করা, বিচারহীনতা, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি বন্ধ, শিক্ষা ও চাকরি কোটাসহ সকল ক্ষেত্রে জনসংখ্যা অনুপাতে নিশ্চিত করার দাবি জানান। এর আগে বান্দরবান সদরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে দলমত নির্বিশেষে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে পৌরসভার সামনে এসে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা জড়ো হয় এবং সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রেসক্লাবের সামনে মহাসমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ বান্দরবান জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. নাছির উদ্দিন, সহ-সভাপতি মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, আবদুল আলীম, সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজালাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল হোসেনসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।