বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম তিন বছরে সর্বনিম্ন

2

পূর্বদেশ ডেস্ক

২০২১ সালের পর চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শুরুতেই বিশ্ববাজারে ব্যারেলপ্রতি জ্বালানি তেলের দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৭০ ডলার, যা বিগত ৩ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। ক্রুড অয়েল প্রাইসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রায় প্রতিটি খাতে জ্বালানি তেলের দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। বিশেষ করে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম কমেছে সাড়ে তিন শতাংশ পর্যন্ত।
যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজারভিত্তিক বেঞ্চমার্ক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের হিসাব অনুযায়ী, তেলের দাম ৭০ ডলার থেকেও নিচে নেমে গেছে।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক বাজারে ডবিøউটিআই ক্রুড তেলের দাম ছিল প্রতি ব্যারেল ৬৭ দশমিক ৬৮ ডলার। ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দামও কমেছে, যদিও তা এখনও ৭০ ডলারের নিচে নামেনি। অয়েল প্রাইস ডটকম ও রয়টার্স সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি তেল আমদানি করে চীন। কিন্তু সেই চীনের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না থাকায় দেশটির তেল আমদানি কমেছে। যার প্রভাব পড়েছে আন্তর্জাতিক তেল বাজারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তেলের দাম কমার এটাই মূল কারণ।
তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেকের আশঙ্কা, ২০২৪-২৫ সালে তেলের চাহিদা আরও কমতে পারে। ওপেকের তথ্য বলছে, এখন দৈনিক চাহিদা ১৭ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল হলেও চাহিদা কমে ১৭ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেলে নেমে আসতে পারে।
অ্যাঙ্গোলা, আলজেরিয়া, ইরাক, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, নাইজেরিয়া, ভেনেজুয়েলা, লিবিয়া, সৌদি আরব, গ্যাবন, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি- এই ১২ দেশ নিয়ে গঠিত জোট ওপেকের ওপর মূলত নির্ভর করে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কতটা বাড়বে বা কমবে।
কোভিড মহামারির সময় আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের চাহিদা শূন্যের কোটায় নেমে এসেছিল। তখন আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ২০ ডলারে নেমে এসেছিল। এরপর তেলের দাম বেড়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। এরপর ২০২২ সালের অক্টোবর মাসেই তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৮০ ডলারে নেমে আসে। তার পর থেকে তেলের দাম এর আশপাশেই ছিল। কিন্তু চলতি মাসে দাম আরও কমে গিয়ে ৭০ ডলারের নিচে নেমে গেল।
ওপেক ও সহযোগী দেশগুলো অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেই অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের উত্তোলন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু তেলের দাম ৭০ ডলারের নিচে নেমে যাওয়ায় তারা উত্তোলনবৃদ্ধির সময়সীমা দুই মাস পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওপেক প্লাস জানায়, প্রয়োজনে তারা উত্তোলন কমানো বা অন্য যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে।